গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতে এক ধাক্কায় মোট ৫৪টি চিনা অ্যাপ ব্যান (Chinese App Ban) করা হয়। সেই তালিকায় ছিল জনপ্রিয় ব্যাটল রয়্যাল গেম গারিনা ফ্রি ফায়ার (Garena Free Fire)। আর সেই সময়ই প্রশ্ন উঠেছিল যে, পাবজি গেমের ক্লোন অ্যাপ হয়েও কেন ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া গেমটি ব্যান করা হল না? এর মধ্যে আবার গত কাল প্রহর নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া (Battlegrounds Mobile India) গেমটি ব্যান করার আহ্বান জানিয়েছে ভারত সরকারের কাছে। ওই সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে যে, ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়াকেও ৫৪টি ব্যান করা চিনা অ্যাপের তালিকভুক্ত করুক কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি প্রহর আরও বলছে, “সরকারের তরফে ওই ৫৪টি অ্যাপের তালিকায় ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া গেমটি না রেখে ভুল করেছে।”
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রহরের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস অনুমোদিত স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ। তাদের তরফে ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া ও তার পূর্বসূরি পাবজি মোবাইল এবং গেমগুলিতে চিনের প্রভাব সম্পর্কেও তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর ভারতে পাবজি মোবাইল গেমটি ব্যান করা হয়। কিন্তু তার মাত্র ১০ মাসের মধ্যেই দেশে ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া গেমটি লঞ্চ করা হয়। চিনা অ্যাপ ব্যানের পর এটিই সবথেকে বড় একটি অ্যাপ যা রিব্র্যান্ডেড ভার্সন হিসেবে লঞ্চ করা হয়, অথচ তাতে ফিচার্স সব আগের মতোই রেখে দেওয়া হয়।
স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের জাতীয় কনভেনার অশ্বিনী মহাজন দাবি করেছেন, “সম্প্রতি ৫৪টি চিনা অ্যাপ ব্যান করার যে সিদ্ধান্ত ভারত সরকার নিয়েছে, তার জন্য আমরা শুভেচ্ছা জানাই। সরকারের এই সিদ্ধান্ত সব ধরনের চিনা পণ্য বয়কট করার জন্য ভারতের জনগণের চলমান দাবির সঙ্গে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ণ।”
তিনি আরও যোগ করে বললেন, “আজকের এই ডেটা কেন্দ্রিক বিশ্বে ভারতের সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং ভারতের প্রতিরক্ষা রক্ষা করার জন্য প্রযুক্তির অখণ্ডতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সরকারকে বিজিএমআই-পাবজি অ্যাপের পূর্ববর্তী ঘটনা এবং চিনের প্রভাব সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তদন্ত করার জন্য এবং লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।”
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রহরের তরফ থেকে ভারত সরকারের কাছে এই মর্মে একটি চিঠি লিখেছেন সংস্থার জাতীয় কনভেনার ও প্রেসিডেন্ট অভয় মিশ্র। চিঠিতে তিনি লিখছেন, “টেনসেন্ট হোল্ডিংস লিমিটেড ভারতে পাবজি লঞ্চ করেছিল। ২০২০ সালে যে সময়ে এই গেমটি দেশে ব্যান করা হয়েছিল, সে সময়ে তা প্রায় সবথেকে বেশি ডাউনলোডও হয়েছিল। তার এক বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভারতে পুনরায় পাবজি নিয়ে আসা হল, যা টেনসেন্টেরেই একটা সংস্থা ক্রাফ্টন এবং ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়া নামে। আর এটি এমনই একটি পদক্ষেপ, যার উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্টতই ভারতের নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করা।”
চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, “কাগজে কলমে টেনসেন্ট হল ক্রাফ্টনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শেয়ারহোল্ডার যার প্রায় ১৫.৫ শতাংশ স্টক রয়েছে। এটা বলাই যায় যে, টেনসেন্ট জনসাধারণের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকা ব্যক্তিগত চুক্তির মাধ্যমে ক্রাফ্টনের উপরে নিয়ন্ত্রণ দিয়ে অবাধে বিভিন্ন ব্যবসা চালিয়ে যায়। বিশ্বের বেশির ভাগ মিডিয়াই ক্রাফ্টনকে টেনসেন্ট দ্বারা সমর্থিত সংস্থা আখ্যা দিয়ে থাকে।”
আরও পড়ুন: পাবজি নিউ স্টেট খেলছেন? বিআর: এক্সট্রিম (৬৪) মোডের টায়ার পয়েন্ট কমছে, কী করবেন এবার?
আরও পড়ুন: দেশি ভার্সন হিসেবে ভারতে কামব্যাক করতে পারে গারিনা ফ্রি ফায়ার? দেশের গেমিং-মহলে জোর জল্পনা
আরও পড়ুন: ব্যাটলগ্রাউন্ডে এবার জুজুৎসু কাইসেন ইভেন্ট, ৩২ স্টেজ আনলক করতে পারলেই আকর্ষণীয় পুরস্কার