সারা বিশ্বের গেমিং ইন্ডাস্ট্রি (Gaming Industry) বিগত কয়েক বছরে ফুলে ফেঁপে ঢোল হয়েছে। এক্কেবারে সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যানই তার প্রমাণ দিচ্ছে। একাধিক ব্লকবাস্টার টেকওভারও হয়েছে সম্প্রতি, যা এই ইন্ডাস্ট্রির জন্য আর একটা ভাল দিক। সনি খুব সম্প্রতি বাঙ্গি অধিগ্রহণ করেছে। আবার মাইক্রোসফট (Microsoft) এগিয়েছে অ্যাক্টিভিজ়ন ব্লিজ়ার্ড নিয়ে। আর এই একত্রীকরণের ফল হল, এই মুহূর্তে বিশ্বের গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে চারটি বড় সংস্থার রাজত্ব, যাদের সামগ্রিক মূল্য প্রায় ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে এদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে চিনের টেনসেন্ট গেমস (Tencent Games)।
টেনসেন্ট গেমস
রেভিনিউর দিক থেকে চিনের টেনসেন্ট গেমস এই মুহূর্তে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সবথেকে বড় প্লেয়ার। এশিয়ার মার্কেটে টেনসেন্টের দাপট সবথেকে বেশি। দেশের বাইরে গেম স্টুডিয়োতে অর্থ বিনিয়োগ করতে চলেছে সংস্থাটি। রায়ট গেমস এবং জনপ্রিয় ব্যাটল রয়্যাল গেমস লিগ অফ লেজেন্ডস তৈরি করেছে টেনসেন্ট। ফ্রেঞ্চ গেম স্টার ইউবিসফট এবং অ্যাক্টিভিজ়নেও তাদের স্টেক রয়েছে। ২০১৬ সালে ৮.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ফিনল্যান্ডের স্টুডিও সুপারসেল (ক্ল্যাশ অফ ক্ল্যানস, ক্ল্যাশ রয়্যাল, ব্রল স্টার্স) অধিগ্রহণ করেছিল টেনসেন্ট, যা সেই সময়কার সবথেকে বড় বিনিয়োগ ছিল। প্রসঙ্গত, ভারতে এই সংস্থার হাতে ছিল পাবজি মোবাইলের ডিস্ট্রিবিউশনের দায়িত্ব। আর সেই চিনা যোগের কারণেই ভারত থেকে পাবজি মোবাইল ব্যান করা হয়েছিল।
সনি: প্লেস্টেশন
১৯৯৪ সাল থেকে প্লেস্টেশন-এর প্রায় ৫০০ মিলিয়ন কপি বিক্রি করেছে জাপানের কনজ়িউমার ইলেকট্রনিক্স সংস্থা সনি। তবে একটি সহায়ক সংস্থা হিসেবে সনি একাধিক স্টুডিও নিয়ন্ত্রণ করে। সেই তালিকায় রয়েছে ইনসোমেনিয়াক এবং হাউসমারকিউ, যারা স্পাইডার-ম্যান সাগার মতো জনপ্রিয় টাইটেল তৈরি করেছে। তার উপরে আবার বাঙ্গি অধিগ্রণ করার মধ্যে দিয়ে হালো এবং ডেস্টিনি-র মেকার ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজের গেম পোর্টফোলিওতে তুলে নিয়েছে। যদিও হালো-র মালিকানা এখনও মাইক্রোসফট-এর কাছেই।
মাইক্রোসফট
গেমিং সেক্টরে গত মাসেই একপ্রকার ইতিহাস সৃষ্টি করেছে মাইক্রোসফট। ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে কিনে নিয়েছে অ্যাক্টিভিজ়ন ব্লিজ়ার্ড। এই ডিলের ফলে মাইক্রোসফট-এর ঝুলিতে চলে এল জনপ্রিয় কিছু গেম যেমন, কল অফ ডিউটি, ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ারক্রাফ্ট এবং ডায়াব্লো। এক্সবক্স কনসোলের এই সংস্থার কাছে এমনিতেই মাইনক্রাফ্ট, এল্ডার স্ক্রলস এবং ফলআউট-এর মতো কিছু জনপ্রিয় গেম রয়েছে। এছাড়াও মাইক্রোসফট তার গেম পাস অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইউজারদের গেম ডাউনলোড এবং খেলার সুযোগ দিয়ে ভিডিয়ো গেমস-এর নেটফ্লিক্স হতে চাইছে।
নিনটেন্ডো
মারিও, জ়েলডা বা পোকেমন-এর মতো অভাবনীয় কিছু ইন-হাউস গেম তৈরি করে বিশ্বের প্রতিটা ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে নিনটেন্ডো এবং প্রমাণও করে দিয়েছে যে তারা গেমিং ইন্ডাস্ট্রির ইঁদুর দৌড়ের মধ্যে নেই। ২০২০ সালের মার্চে আবার এই সংস্থাটি অ্যানিমেল ক্রসিং: নিউ হরাইজ়নস নিয়ে হাজির হয়। কোভিড অতিমারির সময়ে এই গেম যেন একটা সামাজিক বিস্ময় হিসেবে দেখা দেয়। ইনডোর লাইফস্টাইলে একপ্রকার জোরজবরদস্তি করে থাকা মানুষজন ব্যাপক হারে খেলেছিলেন সদ্য লঞ্চ হওয়া এই গেমটি। গত আর্থিক বর্ষে এই সংস্থাটি ২৮.৮ মিলিয়ন সুইচ গেমিং ইউনিট বিক্রি করার রেকর্ড গড়েছিল।
আরও পড়ুন: ব্যাটলগ্রাউন্ডস মোবাইল ইন্ডিয়ার সেরা ৫ বন্দুক, ভাল করবে র্যাঙ্কিং, এনে দেবে চিকেন ডিনারও!
আরও পড়ুন: জিটিএ সিরিজ়ের পরবর্তী গেম আসছে, রকস্টারের নিশ্চিত বার্তা
আরও পড়ুন: ব্যাটলগ্রাউন্ডের আফ্টারম্যাথ ম্যাপের আকর্ষণীয় কিছু ফিচার্স, বদলে দিতে পারে বিজিএমআই অভিজ্ঞতা