বিগত কিছু বছরে আমাদের অনেকেরই জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট। অ্যামাজন অ্যালেক্সা যেমন। ভার্চুয়াল ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যালেক্সা বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠেছে। অ্যালার্ম সেট করা থেকে মজাদার কথোপকথন, খবর শোনানো থেকে মানুষের জ্ঞানের দিকটা একটু ব্রাশ আপ করা – এমনই নানাবিধ কাজ অ্যামাজন অ্যালেক্সার কাছে ঠিক যেন হাতের ময়লা! কিন্তু এহেন অ্যালেক্সাই যদি আপনার বন্ধুর জায়গায় শত্রু হয়ে ওঠে? সমস্যাটা ঠিক কেমন হতে পারে বলুন তো?
ঘোরতর হতে পারে। ট্যুইটারে সম্প্রতি এক ইউজার এমনই সর্বনাশা দিকের কথা জানিয়েছেন। সেই ইউজারের নাম ক্রিস্টিন লিভডাল। ট্যুইটারে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ১০ বছরের সন্তান অ্যামাজন অ্যালেক্সার কাছে একটি চ্যালেঞ্জ দিতে বলে। তার উত্তরে অ্যালেক্সা বলে ওঠে, “চ্যালেঞ্জটা খুবই সহজ”। অ্যামাজন সেই বাচ্চাটিকে অনতিদূরেই একটি দেওয়ালে চার্জার প্লাগইন করতে বলে এবং হাতে একটি কয়েন রেখে তার লাইভ সকেটটি ছুঁতে বলে, যা এক কথায় ভয়ঙ্কর। মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে যে কারও।
খুব সহজ একটা ধারণা। সাধারণত লাইভ ইলেকট্রিক্যাল কানেকশনের সঙ্গে কোনও মেটাল স্পর্শ করলে তার দ্বারা যে কারও ইলেকট্রিক শক খাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। এমনকি তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে ব্যক্তির। লিভডাল বিষয়টি অনুধাবন করে ওঠেন যে, ভুল কিছু একটা ঘটতে চলেছে। আর তার পরই অ্যালেক্সাকে তিনি চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘না অ্যালেক্সা, না’। যদিও তাঁর দশ বছরের কন্যা জানিয়েছে যে, সে যথেষ্ট স্মার্ট এবং এই ধরনের কাজ কোনও ভাবেই করত না।
অ্যামাজন অ্যালেক্সার কাছে ‘আমাকে একটি চ্যালেঞ্জ দাও’ (Tell me a challenge to do)। এই প্রশ্নের কথা বললেই এমনতর চ্যালেঞ্জ ইউজারদের কাছে ছুঁড়ে দেয় এই ইকো ডিভাইস। বছর খানেক আগে অত্যন্ত বিপজ্জনক এই চ্যালেঞ্জ ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। এই চ্যালেঞ্জের নাম, ‘দ্য পেনি চ্যালেঞ্জ’ (The Penny Challenge)। টিকটক-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই ধরনের পেনি চ্যালেঞ্জের ভিডিয়োও ব্যাপক ভাইরাল হয়েছিল।
কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
একটি বিবৃতির মাধ্যমে অ্যামাজন-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, অ্যামাজন অ্যালেক্সার মধ্যে একটি বাগ ধরা পড়েছিল, যা পরবর্তীতে ফিক্সও করে দেওয়া হয়। সংস্থার তরফে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, এই ধরনের চ্যালেঞ্জ বা অ্যাক্টিভিটি গ্রাহকদের আর দেওয়া হয় না। “কাস্টমারের বিশ্বাস আমাদের কাছে সবথেকে আগে। অ্যালেক্সা ডিজাইন করা হয়েছে মানুষকে সাহায্য করার জন্য – নিখুঁত, প্রাসঙ্গিক এবং সাহায্য করতে পারে এমনই সব ইনপুট দেওয়া হয়েছে এই ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টে।”
এদিকে ভুক্তভোগী সেই ইউজার অর্থাৎ ক্রিস্টিন লিভডালও নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, এই ধরনের সমস্যা অ্যামাজন অ্যালেক্সায় আর দেখা যায় না। তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন, এই ‘টেল মি আ চ্যালেঞ্জ টু ডু অ্যাক্টিভিটি’ অ্যামাজন অ্যালেক্সা অ্যাপে আর দেখা যায় না। কিন্তু কেন এই ধরনের চ্যালেঞ্জ অ্যালেক্সা তার ইউজারদের দিত? জানা গিয়েছে, অ্যালেক্স যেহেতু ওয়েবেও কানেক্ট করা থাকে, তাই ওয়েব থেকেও অনেক সময় একাধিক তথ্য সংগ্রহ করে অ্যামাজন অ্যালেক্সা।
আরও পড়ুন: খুব সাবধান! আপনার ব্যক্তিগত, আর্থিক তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে পারে হোয়াটসঅ্যাপের এই প্রতারণাচক্র
আরও পড়ুন: চলতি বছরে গুগলে সবথেকে বেশি সার্চ করা হয়েছে এই ১০ বিষয়, সম্পূর্ণ তালিকা দেখে নিন
আরও পড়ুন: হোয়াটসঅ্যাপে তৃতীয় ব্লু টিক আসছে? গুজবে কান দেওয়ার আগে সত্যিটা জেনে নিন