চিন তো বটেই, এমনকি ভারতেও অন্যতম জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড (Popular Smartphone Brand) শাওমি (Xiaomi)। আর জনপ্রিয়তার শিখরে ওঠার কারণে রয়েছে শাওমি রেডমি সিরিজ়ের একাধিক বাজেট স্মার্টফোন। এহেন শাওমি যখন এশিয়া মহাদেশে তাদের ব্যবসার নিরিখে বরাবরই এক নম্বরে রয়েছে, ২০২১ সালে স্যামসাং-কে কয়েক গোল দিয়ে সারা বিশ্বের এক নম্বর স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক সংস্থা হিসেবে উঠে এসেছিল। মধ্যবিত্তের অন্যতম পছন্দ শাওমি এখন দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। সেই শুরুর লগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত শাওমি-কে একাধিক ঘটনাচক্রের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। সেই শাওমি সম্পর্কেই আবার এমন কিছু তথ্য রয়েছে যেগুলি আমাদের অজানা (Xiaomi Lesser Known Facts) এবং জানলে সত্যিই অবাক হতে হয়। এমনই ছয়টি অবাক করা তথ্য সম্পর্কে আজ আমরা জেনে নেব।
১) শাওমি নামের অর্থ
শাওমি শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল মিলেট অ্যান্ড রাইস অর্থাৎ জোয়ার ও চাল। বৌদ্ধ ধারণা অনুযায়ী, সংস্থাটির এমন উদ্ভট নামকরণ করা হয়েছিল। আক্ষরিক অর্থে জোয়ার ও চাল হলেও শাওমি নামকরণ আসলে বোঝায়, শীর্ষস্থানে পৌঁছনোর লক্ষ্য নেওয়ার আগে নীচ থেকে শুরু করা।
২) শাওমির প্রথম প্রডাক্ট
অনেকেই ভাববেন যে, আজকের এই জনপ্রিয় স্মার্টফোন প্রস্তুতকারী সংস্থার পথচলা শুরু হয়েছিল স্মার্টফোন দিয়েই। ভুল ভাবনা। মার্কেটে যে প্রথম প্রডাক্ট শাওমি নিয়ে এসেছিল, তা আসলে একটি সফ্টওয়্যার। ২০১০ সালের ১৬ অগস্ট শাওমি তাদের প্রথম অ্যান্ড্রয়েড ভিত্তিক সফ্টওয়্যার এমআইইউআই অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে হাজির হয়েছিল। তার প্রায় এক বছর পর ২০১১ সালের অগস্টে লঞ্চ হয় শাওমির প্রথম স্মার্টফোন এমআই ১ বা এমআই ওয়ান।
৩) গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম
এক দিনে সবথেকে বেশি সংখ্যক স্মার্টফোন বিক্রি করার রেকর্ড রয়েছে এই সংস্থার ঝুলিতে, যা আজ পর্যন্ত আর কোনও ব্র্যান্ড ভাঙতে পারেনি। আর তার জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নামও তুলে ফেলেছিল জনপ্রিয় এই চিনা স্মার্টফোন নির্মাতা। একদিনে মোট ২.১১ মিলিয়ন বা ২১ লক্ষ স্মার্টফোন বিক্রি করার নজির দেখিয়েছে কোম্পানিটি। ২০১৫ সালে এমআই ফ্যান ফেস্টিভ্যালে ঘটেছিল এই বিরল ঘটনা। তার আগের রেকর্ডটিও ছিল তাদের ঝুলিতেই, ২০১৪ সালে। সে বছর এক দিনে ১.৩ মিলিয়ন বা ১৩ লাখ স্মার্টফোন বিক্রি করেছিল শাওমি।
৪) লোগোর অর্থ
শাওমি লোগেতে রয়েছে এমআই, যাকে সংস্থাটি ‘মোবাইল ইন্টারনেট’ বলে দাবি করে থাকে। তবে এর একটি আলাদা অর্থও রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি, যা হল ‘মিশন ইম্পসিবল’। শুরুর সময়ে সংস্থাটিকে যে সব কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল, সেগুলি মাথায় রেখেই এই ‘মিশন ইম্পসিবল’ হিসেবেও ব্র্যান্ড লোগোটিকে ব্যখ্যা করে হয়েছে।
৫) নিজস্ব ফোরাম
শাওমির নিজস্ব ফোরাম রয়েছে, যার নাম এমআইইউআই ফোরাম। আপনার কোনও শাওমি ডিভাইসের সমস্যা নিয়ে যদি প্রশ্ন থাকে, তাহলে সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন এমআইইউআই ফোরামের সদস্যরা। এই ফোরামে রয়েছে প্রচুর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ও ডেডিকেটেড শাওমি ভক্তরা।
৬) নতুন দিগন্ত উন্মোচন
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ার পর উদ্ভাবনী শক্তির ছোঁয়া দিয়ে নতুন প্রডাক্ট ক্যাটেগরিতে পদার্পণ করেছে শাওমি। এমআই ফ্ল্যাশলাইট, এমআই এয়ার পিওরিফায়ার, এমআই ড্রোন ইত্যাদি প্রডাক্ট লঞ্চ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে। তা উপরে আবার সম্প্রতি রোবট কুকুর শাওমি সাইবারডগ লঞ্চ হয়েছে, যা নিয়ে টেক-মহলে তীব্র হইচই দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে তৈরি ফোন বিদেশে রফতানি করবে শাওমি, ওপ্পো ও ভিভো, দাম হবে আরও কম!
আরও পড়ুন: ডিসপ্লে, ক্যামেরা কিংবা ব্যাটারি নয়! প্রাইভেসির উপরে ফোকাস করে তৈরি হচ্ছে এই স্মার্টফোন