ফোনের ভাঙা স্ক্রিন জুড়ে যাবে আপনা-আপনি! নতুন আবিষ্কারের সৌজন্যে ভারতীয় গবেষকদের দল

আইআইটি খড়্গপুর এবং আইআইএসইআর কলকাতার গবেষকরা এই নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন। সায়েন্স জার্নালে তাঁদের আবিষ্কারের কথা প্রকাশিতও হয়েছে।

ফোনের ভাঙা স্ক্রিন জুড়ে যাবে আপনা-আপনি! নতুন আবিষ্কারের সৌজন্যে ভারতীয় গবেষকদের দল
ফোনের ভাঙাচোরা ডিসপ্লে নাকি ঠিক হবে নিজে নিজেই।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 26, 2021 | 3:01 PM

হাত থেকে ফোন পড়ে গিয়ে স্ক্রিন ফেটে যাওয়ার ঘটনা প্রায় সকলের জীবনেই অন্তত একবার তো হয়েইছে। পুরো স্ক্রিন জুড়ে ফাটল না ধরলেও, একটা কোণায় চিড় ধরেছে। এই দুর্ঘটনা থেকে ফোনকে বাঁচাতেই সুরক্ষার জন্য বেশ মোটা টাকা খরচ করে দামি ফোনের স্ক্রিনের উপর দামি প্রোটেক্টর গ্লাস লাগান ব্যবহারকারীরা। কিন্তু তাতেও অনেকসময় বিপদ এড়ানো বেশ মুশকিল হয়ে যায়। এদিকে দিন দিন যেভাবে প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে, তার ফলে ফোনের ডিসপ্লেতে ফাটল ধরলে তা সারানো বেশ খরচ সাপেক্ষ হয়ে যাচ্ছে। কারণ ক্রমশই দাম বাড়ছে বিভিন্ন রিপ্লেসমেন্ট পার্টসের।

তবে এই সমস্যার সমাধানেই এক নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার করেছেন একদল বিজ্ঞানী। বলা যেতেই পারে এ এক ধরনের ম্যাজিক ট্রিকস। ফোনের স্ক্রিন ভেঙে গেলে সারানোর খরচ আর ডিসপ্লে নষ্ট হবে এই ভেবে আতঙ্কিত হওয়ার দিন শেষ হতে চলেছে। ভারতের দু’টি টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি একটি চমকে দেওয়ার মতো আবিষ্কার করেছেন। জানা গিয়েছে, আইআইটি খড়্গপুর এবং আইআইএসইআর কলকাতার গবেষকরা এই নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছেন। সায়েন্স জার্নালে তাঁদের আবিষ্কারের কথা প্রকাশিতও হয়েছে। এই দুই প্রতিষ্ঠানে গবেষকরা একটি ‘self-healing crystalline material’ আবিষ্কার করেছেন। এর সাহায্যে ফোনের ডিসপ্লের ভেঙে যাওয়া অংশ বা চিড় খাওয়া অংশ অনায়াসে আগের অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।

ওই রিসার্চ টিম একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, লিভিং টিস্যু অর্থাৎ মানবশরীরে থাকা বিভিন্ন জীবন্ত টিস্যুতে চোট লাগলে সেই ক্ষতস্থান শুকিয়ে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন সিন্থেটিক সেলফ হিলিং পলিমার বা জেল জাতীয় জিনিস এবং নরম উপকরণ ব্যবহার করা হয়। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই এই পদ্ধতি চালু হয়েছে এবং তা জনপ্রিয়ও হয়েছে। এই ভাবনা থেকে সেলফ হিলিং ক্রিস্টালাইন মেটেরিয়াল তৈরির করা গবেষকদের মাথায় এসেছিল। তারপরই এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন উক্ত দুই প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। জানা গিয়েছে, এই গবেষণার পুরোধা ছিলেন প্রফেসর সি মালা রেড্ডি।

ক্রিস্টালাইন স্টেটে একটি সলিড মেটেরিয়াল তৈরি করেছিলেন গবেষকরা। এর মধ্যে ছিল পোলার অ্যারেঞ্জমেন্ট। এর অর্থ হল এই মেটেরিয়ালে কোনও ভাঙন তৈরি হলে (along the surface) ভাঙা অংশে বিপরীত বৈদ্যুতিক সম্ভাবনা তৈরি করবে। এই মেটেরিয়াল আসলে piezoelectric। অর্থাৎ মেকানিকাল এনার্জিকে ইলেকট্রিকাল এনার্জিতে পরিণত করতে পারে এই piezoelectric উপাদান। উল্টোটাও সত্যি। প্রাকৃতিক জৈব উপাদানের ক্ষেত্রে ক্ষত সারানোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই Piezoelectricity- র।

জানা গিয়েছে, ডিসপ্লে কাচ তৈরি হয়েছে সূচের আকৃতিক ক্রিস্টাল দিয়ে, যা ২ মিলিমিটার লম্বা এবং ০.২ মিলিমিটার চওড়া। কোনও কারণে এই কাচ ভেঙে গেলে শক্তিশালী আকর্ষণ শক্তির মাধ্যমে ভাঙা টুকরো জুড়ে আপনাআপনি ক্ষত বা এক্ষেত্রে ভাঙন ঠিক হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন- বৃহস্পতির চাঁদ Europa- তে অভিযান চালাবে নাসা, স্পেসক্র্যাফট তৈরি করবে স্পেসএক্স