Panchayat Election 2023: জর্জরিত গ্রামীণ জরি শিল্প
প্রায় হাজার বছরের পুরনো এই বয়ন শিল্প মুঘল শাসকদের সঙ্গে আসে ভারতবর্ষে। এখন বাংলার হাওড়া, হুগলী, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদা ও মুর্শিদাবাদে হয় এই সূক্ষ্ম বয়ন শিল্পের কাজ। শুধুমাত্র হাওড়া জেলাতেই প্রত্যক্ষভাবে জরিশিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৬ লক্ষ শিল্পী। পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত আরও বহু মানুষ। পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা একটা বড় বিষয় জরি শিল্পে।
অযোধ্যার নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ যখন কলকাতায় আসেন তখন তাঁর হাত ধরে বাংলায় আসে বিরিয়ানি। একই সঙ্গে নবাব ওয়াজেদ আলি নিয়ে আসেন বেনারসি পান, ঘুড়ি, আর নকশা তোলা বাহারি জরির কাজের পোশাক। প্রায় হাজার বছরের পুরনো এই বয়ন শিল্প মুঘল শাসকদের সঙ্গে আসে ভারতবর্ষে। এখন বাংলার হাওড়া, হুগলী, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদা ও মুর্শিদাবাদে হয় এই সূক্ষ্ম বয়ন শিল্পের কাজ। শুধুমাত্র হাওড়া জেলাতেই প্রত্যক্ষভাবে জরিশিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৬ লক্ষ শিল্পী। পরোক্ষভাবে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত আরও বহু মানুষ। পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা একটা বড় বিষয় জরি শিল্পে। এর আগে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী জরি শিল্পীদের বাংলাদেশী বলে সন্দেহ ও উৎপীড়ন করা হত। সেই সমস্যা কাটাতে উদ্যোগ নিয়েছে সারা ভারত জরি শিল্পী কল্যাণ সমিতি। তাঁদের অভিযোগ সুষ্ঠু সরকারি পরিকল্পনা নেই। সরকারি মেলায় জরি শিল্পীদের কাজ চোখেই পড়ে না। ২০১২এ ধুলাগড়ে উদ্বোধন হয় জরি হাবের। অভিযোগ প্রান্তিক ও তৃণমূল স্তরের জরি শিল্পীদের কোনও লাভই হয়নি হাবের ফলে। জরি কল্যাণ সমিতির দাবি। বয়ন মন্ত্রকের অধীনে ‘জরি শিল্পী কল্যাণ বোর্ড’ গঠন করতে হবে। ব্লকে ব্লকে প্রস্তাবিত ‘জরি শিল্প সমবায়’ কার্যকর করতে হবে। স্থানীয় এলাকা চিহ্নিত করে জরির বাজারকে উন্নত করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ আর দিল্লিতে জরি শিল্পীদের শ্রম, স্বনির্ভরতা আর আত্মমর্যাদার লক্ষ্যে কাজ করে সারা ভারত জরি শিল্পী কল্যাণ সমিতি। তাঁদের বেশ কিছু দাবি রয়েছে। মূলত গ্রামীণ এই দূষণ বিহীন শিল্পে কাজ করেন বহু নারী পুরুষ। অপরিসর কাজের জায়গা। সুরক্ষা বিহীন ভবিষ্যৎ আর অপরিষ্কার কাজের জায়গা। তাই বেশ কিছু দাবি ও অভিযোগ আছে শিল্পীদের। দেশের বাজারে কলকাতা ছাড়া দিল্লি, মুম্বই, দক্ষিণ ভারত ও চণ্ডীগড়ে ভাল বাজার আছে জরির। হাওড়ার জরির কাজ যায় লন্ডন, আমেরিকা, ফ্রান্স, মধ্য প্রাচ্য, পাকিস্তান, আর পূর্ব এশিয়ায়। নির্মল বাবু তৈরি করছেন যে শাড়িটি তা এক্সপোর্ট হবে। মেদিনীপুরের আনিসুর জানালেন কীভাবে তৈরি হয় একটা জরির শাড়ি। দিনে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টার পরিশ্রম আর নিখুঁত পারদর্শিতা লাগে এই শিল্পে। এই কাজের চাহিদা আছে দেশে আর বিদেশের বাজারে। তবুও কেন প্রশাসনের সীমাহীন অবহেলা এই শিল্পে?