Asansol Hospital News: তালাবন্দি হাসপাতালের নতুন বিল্ডিং
হাসপাতালের নতুন বিল্ডিং চালু তৈরি হলেও চালু হয়নি চিকিৎসা পরিষেবা। উত্তর আসানসোলে বিধায়ক তথা শ্রম ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটকের দাবি কেন্দ্র টাকা না দেওয়াই প্রকল্পটি সম্পন্ন করা যায়নি।
হাসপাতালের নতুন বিল্ডিং চালু তৈরি হলেও চালু হয়নি চিকিৎসা পরিষেবা। ৫ বছর আগে তৎকালীন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র হাতে শিলান্যাস হওয়া ইএসআই হাসপাতালের নতুন ভবন এখন জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। উত্তর আসানসোলে বিধায়ক তথা শ্রম ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটকের দাবি কেন্দ্র টাকা না দেওয়াই প্রকল্পটি সম্পন্ন করা যায়নি। পাল্টা জবাব দিয়েছেন আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনিও দায় চাপিয়েছেন মন্ত্রী মলয় ঘটকের ঘাড়েই।
শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা পেতে ভরসা আসানসোল ইএসআই হাসপাতাল। তাই এখানে চাপ বাড়ছে। অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের টালবাহানায় এখনও বাড়ল না হাসপাতালের বেডের সংখ্যা। এমনকী পাঁচ বছর পরেও হস্তান্তর করা হল না নতুন বিল্ডিং। ২০২০ সালের নতুন হাসপাতাল বিল্ডিং চালু হওয়ার কথা ছিল। সেখানে ২০২৩ সালেও কাজ শেষ করতে পারেনি।
আসানসোল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, কুলটি, সালানপুর এলাকার শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের ভরসা আসানসোল ইএসআই হাসপাতাল। এখানে প্রায় ৭০ হাজার শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার কথা। রোজই গড়ে ৪০ থেকে ৫০টি করে নতুন শ্রমিকের কার্ড তৈরি হচ্ছে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর আসানসোল লোকসভা আসনের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করেন। ২০১৮ সালে আরও ৫০ বেডের একটি পৃথক হাসপাতাল বিল্ডিং গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেখানে মডিউলার ওটি থেকে তিনটি লিফট, ডায়ালিসিস থেকে আইসিই–সহ সব সুবিধা থাকার কথা ছিল। ২০২০ সালেই ইএসআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা হাসপাতাল হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালেও নতুন হাসপাতাল বিল্ডিং বিশবাঁও জলে।
অথচ এখনও কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। উলটে প্রকল্পের মূল্য বেড়ে ৩১ কোটি থেকে ৩৭ কোটি হয়েছে। কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত দিয়েছে ২৬ কোটি টাকা। ইএসআই হাসপাতাল চত্বরে তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে নতুন বিল্ডিং। তবে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই ইএসআই হাসপাতালেই গড়ে উঠেছে নার্সিং কলেজ, পুরনো বিল্ডিংয়ে চালু করা হয়েছে ডায়ালিসিসি ইউনিট, মডিউলার ওটি।
ওই সময়যখন হাসপাতালের নতুন বিল্ডিং এর শিলান্যাস হয় সেই তখন শ্রম, আইন দফতরের পাশাপাশি ইএসআই দফতরের মন্ত্রীও ছিলেন মলয় ঘটক। বর্তমানে তিনি শ্রমমন্ত্রী আইনমন্ত্রী এবং ওই ইএসআই হাসপাতালের গভর্নিংবডির চেয়ারম্যান। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে প্রকল্পটি করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন এই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এই প্রথম জানলাম। আমি কেন্দ্রীয় ইএসআই মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করব। তবে মলয় ঘটককে উদ্দেশ্য করে তিনি পাল্টা বলেন উনি যখন ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান, রাজ্যের মন্ত্রী, উনি কেন কেন্দ্রকে এতদিন জানাননি এই বকেয়া টাকার কথা? উনারও তো একটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। আসলে উনারা শুধু রাজনীতি করছেন বলে কটাক্ষ অগ্নিমিত্রার। তবে এই রাজনৈতিক টানাপোরেনের মধ্যেই এখন বিল্ডিং তৈরি হয়েও জঙ্গলে পরিণত হয়েছে এসআই হাসপাতাল। পরিষেবা পাচ্ছেন না মানুষ।