Partha Chatterjee News: হঠাৎ মামার নাম কেন বিচারককে বললেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়? কী তাঁর পরিচয়?
Partha Chatterjee: গীতিকার ও সুরকার হিসাবে শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এক অতি বিশিষ্ট নাম। ভূপেন হাজারিকার কণ্ঠে ‘আমি এক যাযাবর’, ‘মানুষ মানুষের জন্যে’, ‘গঙ্গা আমার মা পদ্মা আমার মা’ প্রভৃতি কালজয়ী গানের গীতিকার শিবদাসবাবু।
কলকাতা: ‘এই কি পৃথিবী সেই/হেথায় আশার আলো শুধু ছলনা করে/চোখের তারায় যে আশা কেঁদে মরে/পৃথিবীর বুকে তবু কি মমতা নেই?’ অদ্ভুত সমাপতন। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বহু যুগ আগে শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত এই গান যেন অনেকাংশেই প্রাসঙ্গিক শোনাচ্ছে। তবে হঠাৎ শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় কেন? কারণ, শুক্রবার বিশেষ আদালতে পরলোকগত শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামোল্লেখ করেছেন তাঁরই ভাগ্নে তথা বাংলার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা দুন্রীতির দায়ে অধুনা বিচারাধীন বন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
কী বলেছেন পার্থ?
রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ। তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল টাকা। তিনিও ইডি হেফাজতের পর এখন কারান্তরালে। এমতাবস্থায় শুক্রবার পার্থকে আদালতে তোলা হলে তিনি বিচারককে বলেন, “মামলাগুলিতে আমার কী ভূমিকা? আমি মন্ত্রী ছিলাম। এসএসসি, প্রাইমারি বোর্ড নিজেরাই কাজ করত। তারা সবাইকে নিয়োগ করত। আমার কোনও ভূমিকা নেই।”
এভাবে নিজের যাবতীয় দায় ঝাড়ার পাশাপাশি পার্থ তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পারিবারিক প্রতিষ্ঠার (কুল কৌলিণ্য) কথাও বিচারকের সামনে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমি শিক্ষিত, ইকনমিক্সে স্নাতক, এমবিএ। আমার মামার নাম শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। এখন আরও এক সংস্থা নতুন করে তদন্ত করতে চাইছে। আমি খুবই অসুস্থ। কে সাহায্য করবে? আপনি আপনার মতো বিচার করবেন। আপনার কাছে বিচারের আশায় আছি।’”
গীতিকার ও সুরকার হিসাবে শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এক অতি বিশিষ্ট নাম। ভূপেন হাজারিকার কণ্ঠে ‘আমি এক যাযাবর’, ‘মানুষ মানুষের জন্যে’, ‘গঙ্গা আমার মা পদ্মা আমার মা’, ‘সবার হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ চেতনাতে নজরুল’, ‘একখানা মেঘ ভেসে এলো আকাশে’, ‘বিস্তীর্ণ দু’পারের অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও’, ‘শরৎবাবু, খোলা চিঠি দিলাম তোমার কাছে’, ‘দোলা হে দোলা’ প্রভৃতি কালজয়ী গানের গীতিকার শিবদাসবাবু। প্রথম জীবনে পত্রপত্রিকায় কবিতা-গল্প লিখে পরিচিতি পেলেও পরবর্তীতে সুরের পথের যাত্রী হন তিনি। আধুনিক, দেশাত্মবোধক, শাক্তসংগীত, ভক্তিগীতি, সিনেমার গান – সব মিলিয়ে ৩০০টিরও বেশি গান লিখেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিরক্ষার্থে কলকাতার ১১২নং ওয়ার্ডে তাঁর একটি তাম্রমূর্তি স্থাপন করা হয়। ভাস্কর্যটি উন্মোচন করেন তাঁর ভাগ্নে তথা পশ্চিমবঙ্গের ভূতপূর্ব শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।