Cut Money: রেলের কাজে কাটমানির বখড়া নিয়ে কোন্দল? তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষে উত্তেজনা আলিপুরদুয়ারে
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় রেলের কাজে কাটমানি নিয়েই কোন্দলের অভিযোগ উঠছে। দুই গোষ্ঠীই পরস্পরের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছে।
আলিপুরদুয়ার: এবার রেলের কাজেও কাটমানি! আলিপুরদুয়ার-২ নম্বর ব্লকের মধ্য সলসলাবাড়ি এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় রেলের কাজে কাটমানি নিয়েই কোন্দলের অভিযোগ উঠছে। দুই গোষ্ঠীই পরস্পরের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে সরব হয়েছে। যা নিয়ে তোপ দেগেছেন বিরোধীরা। কাটমানির বখড়া নিয়েই আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC সম্মুখ-সমরে বলে অভিযোগ তাঁদের।
জানা গিয়েছে, শনিবার বিকালের আলিপুরদুয়ার-২ নম্বর ব্লকের মধ্য সলসলাবাড়ি এলাকায় INTTUC-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ঘটনায় দু-পক্ষের মোট ৮ জন আহত হয়েছেন। যার মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ৬ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও দু-পক্ষের ২ জন হাসপাতালে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি।
জানা গিয়েছে,আলিপুরদুয়ার-২ নম্বর ব্লকের মধ্য সলসলাবাড়ি এলাকায় INTTUC-র অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন রায়কে দল বহিষ্কার করে দিলীপ বর্মনকে দায়িত্ব দেয়। এরপরই রেলের কাজে কাটমানির বখড়া নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ। আহত তাপস দাস জানান, এদিন তাঁদের উপর চড়াও হয় মনোরঞ্জন রায়ের লোকজন। লাঠি,আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আক্রমণ চালায়। তাঁদের ৪ জন আহত হয়েছেন। অপরপক্ষের ৪ জন আহত হয়েছেন।
কাটমানি নিয়েই দু-পক্ষের মধ্যে যে সংঘর্ষ বাধে, তা অঞ্চল সভাপতি দিলীপ বর্মনের কথাতেই একপ্রকার স্পষ্ট। তিনি বলেন, “দল আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি কাজ দেখতে গেলে আমাদের উপর চড়াও হন মনোরঞ্জন রায়ের লোকজন। এরপরই তিনি তিনি প্রশ্ন তোলেন, মনোরঞ্জন রায় কে? কাটমানি চালাচ্ছে মনোরঞ্জন। মনোরঞ্জন কোন কিছুর হিসেব দিচ্ছেনা।মনোরঞ্জন কাউকে মানছেনা। একাই টাকা নিচ্ছে।”
অন্যদিকে, পাল্টা দিলীপ বর্মন সহ উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন মনোরঞ্জন রায়। নিজের বাড়িতে বসেই তিনি বলেন, “যারা মস্তানি করল তারাই অভিযোগ তুলছে। আমি তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বে ছিলাম। চাপড়ের পাড়-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান রবীন্দ্র দাস আমাকে কোণঠাসা করতে তাঁর আত্মীয় দিলীপ বর্মনকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি যদি তোলাবাজ হই এটা প্রমাণ করে দেখাক। উনি তোলাবাজ। দাদাগিরি করে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “উপপ্রধান রবীন্দ্র দাস এখানে দিলীপ বর্মনকে দিয়ে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব করার চেষ্টা করছে। চাপড়েরপাড় ২ গ্রাম পঞ্চায়েতকে ধবংস করে দিচ্ছে। অঞ্চলের ফান্ডে কোনও টাকা নেই। সব খেয়েছে। প্রচুর গাছ নষ্ট করেছে। অঞ্চলে সিন্ডিকেট করে অঞ্চলে ১৫ শতাংশ কমিশন নিয়ে কাজ করছে। আজ নির্বাচন হলে আমরা অঞ্চল ধরে রাখতে পারব না।”
গোটা ঘটনায় কার্যত অসহায় তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও দলীয় কোন্দল চাপা দিতে মরিয়া INTTUC-র জেলা সভাপতি বিনোদ মিঞ্জ বলেন, “পরিবার বড় হলে যা হয়। আমি ওদের অফিসে ডেকে মীমাংসা করার চেষ্টা করছি। আগামীদিনে একমত হয়ে দলটাকে চালাব। তবে দলের মধ্যে যে গোষ্ঠীকোন্দল তা তাঁর বক্তব্যেই পরিষ্কার।”
তবে এই ঘটনায় কটাক্ষ করেছেন বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওঁরাও। তিনি বলেন, “তৃনমূলের শ্রমিক সংগঠন বখড়া নিয়ে মারপিট করেছে। সব জায়গায় দুটো-তিনটে গ্রুপ। বিভিন্ন কাজে এরা যুক্ত। কেউ বালি,পাথর কাঠ চোরাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। জনগণের কাজ করার সময় এদের নেই। কোথায় ভাগ পাওয়া যাবে, এটা দেখছে।” আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জনগণ এদের বিরুদ্ধে ভোট দেবে বলেও তাঁর দাবি।