Woman Trafficking: বাংলাদেশী তরুণীকে ‘রক্ষা’ করে হুমকির মুখে প্রৌঢ়া, মিলছে না পুলিশি সহায়তা!
Durgapur: চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি তরুণীকে ২০১৭ সালে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসেন এক ব্যক্তি। কিন্তু এসেই বুঝতে পারেন তিনি বড় ফাঁদে পড়ে গিয়েছেন। তরুণী জানান, জোর করে তাঁকে দেহ ব্যবসার কাজে লাগানো হয়। কিন্তু পালানোর কোনও জায়গা পাননি।
দুর্গাপুর: বাংলাদেশি (Bangladeshi) এক তরুণীকে (Woman) এ রাজ্য দিয়েই পাচারের ছক করছিল কয়েকজন দুষ্কৃতী। অদম্য সাহস নিয়ে তাঁকে রক্ষা করেছিলেন এক প্রৌঢ়া। নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন তাঁকে। কিন্তু এখন লাগাতার দুষ্কৃতীদের হুমকি ফোন পাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ, পুলিশের কাছে গিয়েও মিলছে না সহায়তা। তাই মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। উদ্বেগ, আশঙ্কা নিয়ে মহিলা বলছেন, একজন মহিলা হয়ে আরেকজনতকে রক্ষা করে খুব কি ভুল করেছেন তিনি? কেন পুলিশের সাহায্য পাচ্ছেন না এ ব্যাপারে, বলছেন দুর্গাপুরের ঊমা গিরি।
দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর এ-জোন এলাকার বাসিন্দা ঊমা গিরি। কিছুদিন আগে ভেলোর থেকে চিকিৎসা করিয়ে দুর্গাপুরে ফেরার পথে হাওড়া স্টেশনে এক তরুণীর সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। সহযাত্রী সেই তরুণীর চোখমুখ দেখে ঊমা বুঝতে পারেন কিছু একটা বলতে চান ওই তরুণী। তাঁকে জিজ্ঞাসা করতেই বাংলাদেশি ওই তরুণী তাঁর সাহায্য চান। জানান, তাঁকে মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
ওই তরুণী ঊমা দেবীকে আরও জানান, তিনি বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা। তাঁকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৭ সালে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসেন এক ব্যক্তি। কিন্তু এসেই বুঝতে পারেন তিনি বড় ফাঁদে পড়ে গিয়েছেন। তরুণী জানান, জোর করে তাঁকে দেহ ব্যবসার কাজে লাগানো হয়। কিন্তু পালানোর কোনও জায়গা পাননি। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওইভাবে বেঙ্গালুরুতে থাকতে বাধ্য হন তিনি।
পালানোর সুযোগ মিলে যায় একদিন। অগস্টের শুরুতে লুকিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে ট্রেন ধরে সোজা হাওড়ায় চলে আসেন তিনি। কিন্তু এর পর কোথায় যাবেন, কী করবেন আর ভাবতে পারছিলেন তিনি। তখনই হাওড়া স্টেশনে দেখা হয় দুর্গাপুরের বাসিন্দা ঊমা গিরির সঙ্গে। সহযোগিতা চেয়ে তাঁকে সমস্ত কথা খুলে বলেন এই তরুণী। ঊমা দেবী তাঁকে ফিরিয়ে দেননি। যতদিন বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা হচ্ছে, ততদিন তাঁর নিজের বাড়িতেই (দুর্গাপুরে) থাকতে বলেন সদ্য পরিচিত ওই বাংলাদেশী তরুণীকে।
তাঁর দাবি, এর পরে পুলিশ প্রশাসনকেও সমস্ত বিষয়টি তিনি জানিয়ে রাখেন। কিন্তু কয়েকদিন পর একের পর এক হুমকি ফোন আসতে শুরু করে তাঁর কাছে। তিনি সাহায্যের জন্য ছুটে যান পুলিশের কাছে। কিন্তু দুর্গাপুর থানার পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েও সাহায্য মেলেনি বলে তাঁর অভিযোগ।
তাই মঙ্গলবার ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে দুর্গাপুরের মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হন তিনি। ঊমাদেবী জানিয়েছেন ওই তরুণীকে উদ্ধার করার পর তিনি তাঁর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তার পর থেকেই তাঁর ফোনে নানা হুমকি আসতে থাকে। ফোনে বলা হয় ওই তরুণীকে আবার বেঙ্গালুরুতে ফেরত পাঠাতে হবে। তাই অবশেষে তিনি মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এদিকে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শেখর কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনকে তিনি এই বিষয়ে জানিয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি বাংলাদেশের ওই তরুণীর জন্য সরকারি স্তরে কিছু একটা ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ওই তরুণী নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা দুর্গাপুর নগর নিগমের এক নম্বর বোরো চেয়ারম্যান রিনা চৌধুরী জানিয়েছেন, ওই তরুণীর পাশে থাকবেন তিনি। একই সঙ্গে প্রশাসনিক সহযোগিতা যাতে পাওয়া যায় সেদিকটাও দেখছেন বলে জানান।