বাইকে চেপে নিজেই গেলেন থানায়, মেঝেতে পড়ে থাকা স্ত্রী’র মৃতদেহের গলায় বাঁধা পোষা কুকুরের বেল্ট
থানায় গিয়ে স্ত্রী'লে খুন করার কথা স্বীকার করেন ওই ব্যক্তি। তিনি জানান, অশান্তির জেরেই খুন করেছেন কুকুরের বেল্ট দিয়ে।
দুর্গাপুর: স্ত্রী’র চাহিদা দিনের পর দিন বেড়েই যাচ্ছিল। হাজার হাজার টাকার শপিং নাকি সামাল দিতে পারছিলেন না স্বামী। তাই গলায় ফাঁস লাগিয়ে মেরেই ফেললেন স্ত্রী’কে। বছর দুয়েক বিয়ে হওয়া স্ত্রী’কে খুন করেও কোনও অনুতাপ নেই তাঁর। সোজা বাইকে চেপে থানায় গিয়ে তিনি জানালেন যে স্ত্রী’কে খুন করে এসেছেন। খবর শুনেই পুলিশ ছুটে যায়। দরজা খুলে পুলিশ দেখে মেঝেতে পড়ে রয়েছে মৃত মহিলার দেহ। গলায় লাগানো পোষা কুকুরকে বাঁধার বেল্ট। পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসায় এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
গতকাল, রবিবার সন্ধেয় কাঁকসা থানায় যান পেশায় ব্যাঙ্ক আধিকারিক বিপ্লব পরিয়াদ। একটি রাস্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্কের সহকারী ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত তিনি। বাইকে চেপে ওই ব্যক্তি থানায় গিয়ে জানান যে তিনি নিজেই তাঁর স্ত্রী’কে খুন করে এসেছেন। কার্যত থানায় আত্মসমর্পণ করেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে নিয়ে তাঁদের আবাসনে যায় পুলিশ। বামুনারা এলাকায় একটি আবাসনে থাকতেন ওই ব্যাঙ্ক অফিসার ও তাঁর স্ত্রী ইপ্সা প্রিয়দর্শিনী। সেখানে গিয়েই মৃত স্ত্রী ইপ্সাকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে রাতেই থানায় নিয়ে যায়। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে বিয়ে হয় বিপ্লব পরিয়াদ ও ইপ্সা প্রিয়দর্শিনীর। তাঁরা দু’জনেই ওডিশার কটকের বাসিন্দা। তবে কর্মসূত্রে তাঁরা এখানে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। পারিবারিক অশান্তি লেগে থাকত বলে জানা গিয়েছে। রবিবার সন্ধে নাকি সেই অশান্তি চরমে ওঠে। অভিযুক্ত স্বামীর বয়ান অনুযায়ী, অশান্তি চরমে উঠলে রাগের মাথায় স্ত্রী’কে খুন করে বসেন তিনি। পোষা কুকুরের বেল্ট দিয়ে স্ত্রী’র গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করা হয়েছে ওই মহিলাকে। ইতিমধ্যেই ইপ্সা প্রিয়দর্শিনীর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত বিপ্লব জানান, স্ত্রী ইপ্সার চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চলেছিল। কখনও হাজার হাজার টাকার শপিং করতেন। বাড়িতে রান্না সহ কোনও কাজই করতেন না বলে অভিযোগ স্বামীর। বিপ্লব বলেন, রবিবার তাঁর স্ত্রী দাবি করেন কলকাতায় গিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং-এর কোর্স করতে চান। সেই সূত্রেই অশান্তি চরমে ওঠে। তিনি নিজে কাজে বেরনোর আগে রান্ন করে যেতেন ও এসে ফের রান্না করতেন বলে জানিয়েছেন।
এক প্রতিবেশী জানান, তেমন কোনও অশান্তির কথা তিনি শোনেননি কোনোদিন। আবাসনের ওই বাসিন্দা জানান, ইপ্সার সঙ্গে মাঝেমধ্যেই কথা হত তাঁর। স্বামী অফিসে চলে গেলে মাঝেমধ্যে পোষা কুকুরকে নিয়ে হাঁটতে বেরতেন তিনি। তখনই কথা হত তাঁদের মধ্যে। তবে অশান্তির খবর সে ভাবে কোনোদিন শোনেননি। একদিনই স্বামী-স্ত্রী’র ঝগড়া কানে এসেছিল তাঁর। মৃত্যুর কারণ বুঝতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। এদিকে বিপ্লবাবুর কোনও অনুতাপ নেই স্ত্রী’কে খুন করে। তিনি জানান, হাতেপায়ে ধরেও স্ত্রী’কে কিছুই বোঝাতে পারতেন না তিনি। আরও পড়ুন: দেহরক্ষীর রহস্যমৃত্যু মামলায় সিআইডি দফতরে গেলেন না শুভেন্দু! ইমেলে জানালেন কারণ