Anubrata Mondal News: ‘পেতে হলে, দিতে হবে এটাই সিস্টেম’, বিতর্কে শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ, নেপথ্যে অনুব্রত

TV9 Bangla Digital | Edited By: Moumita Das

Aug 20, 2022 | 6:55 PM

তবে শুধু অনুব্রত মণ্ডল না, কলেজের কাজ ‘আইনি পথে একটু তাড়াতাড়ি’ করতে গাড়ি ব্যবহার করার বা চড়ার সুযোগ নিতেন সরকারি আমলা থেকে স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকরাও

বীরভূম: অনুব্রতকাণ্ডে এবার নাম জড়িয়ে গেল রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনেরও। TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ মলয় পিটের। শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধারের দাবি, কাজ আদায় করিয়ে নিতে অনুব্রত মণ্ডলকে ২টি গাড়ি দিয়েছেন। শুধু অনুব্রত মণ্ডলই নন, গাড়ি দিতে হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদেরও।

কেন গাড়ি দিতে হয়েছিল? উত্তরে অকপট মলয় পিট বলছেন, “কিছু পেতে হলে দিতেই হবে, এটাই সিস্টেম।” এখন সেই ২টি গাড়িই সিবিআইয়ের স্ক্যানারে। কালিকাপুর, গয়েশপুর মৌজাতে ৪৫ বিঘার রাইসমিলে থাকা গ্যারেজে একাধিক গাড়ির সঙ্গে রেয়েছে মলয় পিটের উপঢৌকন হিসেবে দেওয়া ২টি গাড়িও। গাড়ি ফেরতের কথা কখনই মুখ ফুঁটে বলতে পারেননি। পারেননি, কারণ ভয়। এখন সিবিআইয়ের স্ক্যানারে চলে আসার পর সেই গাড়ি আর ফেরত নেওয়ার কথাও ভাবছেন না মলয়বাবু।

কলেজের কর্ণধার ও ট্রাস্টি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট মলয় পিটের কথায়, ‘বিভিন্ন সংস্থার হাত এই কলেজ তৈরিতে থাকলেও অনুব্রত মণ্ডলের অবদান সবথেকে বেশি। অনুব্রত মণ্ডলের সাহায্য ছাড়া এই কলেজ করতে পারতাম না।’ সরকারি হাসপাতাল ৩৩ বছর লিজ দেয় তাহলেই মেডিক্যাল কলেজ করা যায়। স্থানীয় সিয়ান সাবডিভিশন হাসপাতালের সঙ্গে তাই চুক্তি হয় শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের। আর এই লিজ পাইয়ে দেওয়ার নেপথ্যে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব অনুব্রত মণ্ডল। তবে এই ‘সাহায্য’র বিনিময়ে কেষ্টর ‘ছোট্ট আবদার’। মাসে বেড প্রতি ১০ হাজার টাকা করে লাগবে তাঁর। অঙ্ক কষলে বছরে সেই আবদারের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৪ কোটিতে! সঙ্গে দু’টো গাড়ি। শর্ত ছিল আরেকটিও। শুধুমাত্র পড়ানোর ক্ষেত্র হিসেবেই ব্যবহার করা যাবে শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ। এত সব শর্তে রাজি হলেন কেন মলয় পিট? ‘৩ কিলোমিটারের মধ্যে আমার সব কাজ মিটে যায়। ফোনে লোককে বলে দিতেন, আইনের মধ্যে হলে মলয়ের এই কাজটা করে দিও। তিনি যদি গাড়ি চান আমি না করতে যাব?’, জবাব মলয়বাবুর।

প্রাথমিকভাবে, গাড়ি দু’টি বিক্রি করতে চাইলেও পরে টাকা পাননি মলয় পিট, তিনি চাইতেও যাননি। তবে শুধু অনুব্রত মণ্ডল না, কলেজের কাজ ‘আইনি পথে একটু তাড়াতাড়ি’ করতে গাড়ি ব্যবহার করার বা চড়ার সুযোগ নিতেন সরকারি আমলা থেকে স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকরাও। কাজ করিয়ে নেওয়ার এটাও অন্যতম ‘সাম্মানিক’। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়ছে স্বাস্থ্যভবনও।

প্রসঙ্গত, সিবিআই হাজিরা এড়াতে ফিসচুলাকে ঢাল হিসেবে খাঁড়া করতে চেয়েছিলেন অনুব্রত। কেষ্টকে দক্ষিণ ভারত বা তাঁর হাসপাতালে ফিসচুলা অপারেশনের পরামর্শ দেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ এই মলয় পিটই। যদিও তাঁর এই পরামর্শেরও পেছনেও যে কেষ্টর হাত রয়েছে সেকথাও স্বীকার করেছেন মলয়বাবু। যদিও তাতে শেষরক্ষা হয়নি। অনুব্রত মণ্ডলের সম্পত্তির খোঁজ পেতে মরিয়া সিবিআই। তল্লাশি চালাতে গিয়ে গতকাল অনুব্রত কন্যার ভোলে ব্যোম চালকল থেকে উদ্ধার হয়েছে একের পর এক বেশ দামি গাড়ি। যার মধ্যে ছিল মেডিক্যাল কলেজের ট্রাস্টের গাড়িও। তবে শুধু গাড়ি না, সিবিআই সূত্রের খবর চালকল থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক জমির নথিও। জমিগুলি কেনা হয় ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে। জমির মালিকানা সবই অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে ও স্ত্রীয়ের নামে।

Published on: Aug 20, 2022 06:46 PM