বিশ্বভারতীর উপাচার্য বড় পাগল, আর দিলীপ ঘোষ ছোট পাগল: অনুব্রত
Anubrata Mondal: রাজ্য়ে পুরভোট না উপনির্বাচন আগে হবে তা নিয়ে রীতিমতো শাসক-বিরোধী দড়ি টানাটানির পালা ইতিমধ্যেই শেষ। শনিবার, রাজ্যে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
বীরভূম: সদ্যই বিশ্বভারতীর অচলাবস্থা কেটেছে। কিন্তু, রাজনীতির রঙ এখনও মুছে যায়নি রবিভূম থেকে। ইতিমধ্যেই বঙ্গে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে উপনির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে কার্যত পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। সে প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে ফের বিশ্বভারতীর অনুষঙ্গ শোনা গেল কেষ্ট মণ্ডলের (Anubrata Mondal) মুখে।
অনুব্রত এদিন বলেন, “বিশ্বভারতীর উপাচার্য বড় পাগল, আর দিলীপ ঘোষ হল ছোট পাগল। তাই দিলীপ ঘোষ কেন বিরোধী কথা বলছে তা ওঁকেই জিজ্ঞাসা করা হোক। ছোট পাগলের মন্তব্য নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের আমরা বিরোধিতা করতে চাই না।”
রাজ্য়ে পুরভোট না উপনির্বাচন আগে হবে তা নিয়ে রীতিমতো শাসক-বিরোধী দড়ি টানাটানির পালা ইতিমধ্যেই শেষ। শনিবার, রাজ্যে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। মুখ্য়মন্ত্রীর কেন্দ্র ভবানীপুর-সহ সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত হয়েছে। তবে বাকি রয়েছে দিনহাটা, গোসাবা, শান্তিপুর ও খড়দহের উপনির্বাচন তিথি। কেন ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরেই নির্বাচন সেই প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই সরব বিরোধীরা।
দিলীপ ঘোষ একেবারে সরাসরি কমিশন প্রভাবিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, উপ নির্বাচন যখন হচ্ছে, তখন সবকটি কেন্দ্রেই হওয়া প্রয়োজন ছিল। তিনি এ দিন জোর দিয়ে বলেন, ‘কমিশন অবশ্যই প্রভাবিত হয়েছে আমরা জানতে চাইব কেন এটা হয়েছে।’ কার্যত, এদিন দিলীপকেই পাল্টা নিশানা করে কেষ্টর সাফ উত্তর, “কে কী বলেছে, অত জানি না। নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব এমন কথা আমি কখনও বলিনি। আমি না জেনে কোনও কথা বলি না। নির্বাচনের ক্ষেত্রে কমিশনই শেষ কথা। আমরা তার বিরুদ্ধে কথা বলতে যাব না। কমিশনের নির্দেশ মেনেই সবকিছু চলবে।” এরপরেই দিলীপে মন্তব্যের বিপক্ষে মত প্রকাশ করতে গিয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের প্রসঙ্গ তুলে আনেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা।
তবে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই প্রথম আক্রমণ নয়, আগেও একাধিকবার শ্লেষবাণে বিঁধেছেন অনুব্রত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই বিজেপির শহিদ দিবস পালনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে অনুব্রত তোপ দেগে বলেন, “বিশ্বভারতীর উপাচার্য একটা পাগল। ওঁর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওঁ এতটাই পাগল যে ঘরে প্লেট থালা ছুঁড়ে ছুঁড়ে ভেঙে ফেলে। তখন ওঁর বউ ইনজেকশন দিয়ে শান্ত করে। ওই উপাচার্যের জন্যই বিশ্বভারতীর সংস্কৃতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করা! আমি দেখিয়ে দেব। অনুষ্ঠান হবেই। বিশ্বভারতীর পাগল ভিসির সামনে অনুষ্ঠান হবে।”
কার্যত, বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়ার বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে অধ্যাপক পড়ুয়াদের বিক্ষোভ আন্দোলনের জেরে প্রায় সাতদিন টানা অচলাবস্থা জারি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঘেরাও করা হয়েছিল উপাচার্য বিদ্যুত্ চক্রবর্তীর বাসভবনও। পড়ুয়াদের বিক্ষোভের আগেই উপাচার্যকে ঘেরাওয়ের নিদান দিয়েছিলেন খোদ অনুব্রত। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বীরভূম সফরের পরেই সে ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। কিন্তু, সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখ পেরলেও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি। হাইকোর্টের নির্দেশই কি এর নেপথ্য় কারণ? প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট মহলের। যদিও, এ প্রসঙ্গে অনুব্রতকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: টিকা নিয়ে রক্তারক্তি, বঙ্গ জুড়ে অনিয়ম, গাফিলতি কোথায়?