Bagtui Massacre: কখনও ‘শর্ট সার্কিট’, কখনও ‘ব্যক্তিগত আক্রোশ’, তদন্তের আগেই যে সব তত্ত্ব পেশ করল শাসক দল
Rampurhat Crime: আগুনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে একাধিক তত্ত্ব খাঁড়া করে ইস্যুটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা দেখা গিয়েছে। অনুব্রত মণ্ডল শুরুতেই বলে দিলেন শর্ট সার্কিটের ঘটনা। রাজ্য পুলিশের ডিজি তো তদন্ত শুরুর আগেই বলে দিলেন অরাজনৈতিক বিষয়।
রামপুরহাট ও কলকাতা : বগটুই গ্রামের (Bagtui) স্থানীয় উপপ্রধানের মৃত্যু এবং তারপর রাতের অন্ধকারে গ্রামের একের পর এক বাড়িতে আগুন। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত আট জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। গোটা গ্রাম থমথমে। এক অজানা আতঙ্ক গ্রাম করেছে গোটা গ্রামকে। বগটুই গ্রামে এখন শুধুই লাশ পোড়া গন্ধ। এদিকে আগুনের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে একাধিক তত্ত্ব খাঁড়া করে ইস্যুটিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা দেখা গিয়েছে। অনুব্রত মণ্ডল শুরুতেই বলে দিলেন শর্ট সার্কিটের ঘটনা। রাজ্য পুলিশের ডিজি তো তদন্ত শুরুর আগেই বলে দিলেন অরাজনৈতিক বিষয়। মৃত্যুর পিছন যে কোনও রাজনীতি নেই, সেই বিষয়টাই তুলে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, সকাল থেকে যে যে তত্ত্বগুলি উঠে এসেছে।
অনুব্রত মণ্ডলের শর্ট সার্কিট তত্ত্ব:
সোমবার রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে, অনুব্রত মণ্ডল নিজের মতো একটি তত্ত্ব খাঁড়া করে দেন। তাঁর কথায়, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন। বোমাবাজিও হয়নি বলে দাবি তাঁর। বলেন, “সোমবার তিন চারটে বাড়িতে আগুন লেগেছিল। শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছিল। সাতজন মারা গিয়েছেন। এর জন্য পুলিশ আছে, তদন্ত করছে। দমকল গিয়ে আগুন নিভিয়েছে। রাতভর বোমাবাজিও হয়নি, কিছুই হয়নি।”
কুণাল ঘোষের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব:
কুণাল ঘোষ প্রথমে টুইটারে লিখেছিলেন, ‘রামপুরহাটের আগুনের ঘটনায় রাজনীতি নেই।’। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই কুণাল ঘোষই বললেন, এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। প্রথম টুইটের কয়েক ঘণ্টা পর সেই কুণাল ঘোষই আবার লিখেছেন, “বৃহত্তর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে তৃণমূল নেতাকে খুন করে তারপর এই আগুন লাগানো হয়েছে। শান্ত বাংলাতে ইস্যু তৈরি করতে কারা এই কাজ করেছে, তা সকলেই বুঝছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। ওসি ক্লোজড। এসডিপিও অপসারিত। সিট গঠিত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১১ জন গ্রেফতার। তদন্ত চলছে।”
ব্যক্তিগত বিবাদের তত্ত্ব ডিজির :
রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “যে গ্রামের উনি বাসিন্দা ছিলেন, সেই গ্রামের সাত – আটটা বাড়িতে আগুন ধরেছে। গতকাল মধ্যরাতের মধ্য়েই ওখানে সব পৌঁছে গিয়েছিল। পুলিশ, দমকল সব দ্রুত পৌঁছে গিয়েছিল। আজ সকালে দমকল সাতটি দেহ পেয়েছে। এটি আমরা দেখছি, কী কারণে হতে পারে। উপপ্রধান মারা যাওয়ার কারণে নাকি অন্য কোনও কারণ, তা দেখা হচ্ছে। পুলিশ ইতিমধ্য়েই ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। এখানে রাজনৈতিক কোনও কারণ নেই, ব্যক্তিগত বিবাদের জেরেই খুন।”
আর এখান থেকেই উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন
প্রশ্ন ১: তদন্তের আগেই কী করে শর্ট সার্কিটের তত্ত্ব অনুব্রতর?
প্রশ্ন ২: রাজনৈতিক কারণে খুন নয়, তদন্তের শুরুতেই কেন বলছেন ডিজি?
প্রশ্ন ৩: উপপ্রধান খুনের বদলাতেই খুন, তবু রাজনৈতিক কারণ নেই বলছেন ডিজি?
প্রশ্ন ৪ : নিচু তলার আর রাশ নেই শাসকের? নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই কি তৃণমূল মারছে তৃণমূলকে?
প্রশ্ন ৫: কীভাবে এত নির্লিপ্ত প্রশাসন?
প্রশ্ন ৬ : শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করে গণহত্যার লজ্জা মোছা যাবে?
প্রশ্ন ৭ : বগটুই গ্রামের মানুষ আতঙ্কে সিঁটিয়ে আছেন, কার ভয়ে?
প্রশ্ন ৮ : আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কেন বার বার ব্যর্থ?
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee on Bagtui Massacre: ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে ঘটলে তো চুপ থাকেন’, রাজ্যপালকে চিঠি মমতার