Bagtui Massacre: ‘বউটাকে গ্রিল কেটে বার করে এনে কোপাল, পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দিল’, প্রথম প্রতিক্রিয়া অভিশপ্ত বাড়ির এক সদস্যের
Bagtui Massacre: বাইরে থেকে ওরা গ্রিল কেটে ঢুকে আগুন ধরিয়েছে। সোনার বাড়িতেই সব শেষ। দমকল যখন এসেছিল সব শেষ। আমার ভাই, তার মেয়ে, জামাই, নাতনি সব শেষ।
রামপুরহাট: সোমবার রাত ৮ কি সাড়ে আটটা। বগটুইয়ের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন। তখন সাময়িক একটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। তারপর সাড়ে ন’টা থেকে শুরু হয় বোমাবাজি। প্রচুর বোমা পড়তে থাকে। ফটিক, সে আমার চাচাতো ভাই, ওর বাড়িতে বোমা পড়ে। ফটিকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল। আর ওর বউকে গ্রিল কেটে বার করে এনে কোপাল ওরা। কোপ…কোপ… তারপর যখন মরে গেল, তখন পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দিল। ও পুড়ল। তারপর দ্বিতীয় বাড়িতে অ্যাটাক করল। সেটা সোনার বাড়ি। ভয়ে যেখানে তারা লুকিয়ে ছিল, সেখানেই আগুন ধরাল ওরা। একটা বাড়িতে ছ’জন জন মেয়েছেলে লুকিয়ে ছিল। আর এক জন পুরুষ ছিল। গ্রিল কেটে বার করে এনে একটা ঘরে ঢুকিয়ে জ্বালিয়ে দিল ওরা। সারা রাত ধরে আগুন জ্বলল। পুলিশ কোনও খোঁজই নিল না। বেলা ১২টায় পুলিশ এলো। বাইরে থেকে ওরা গ্রিল কেটে ঢুকে আগুন ধরিয়েছে। সোনার বাড়িতেই সব শেষ। দমকল যখন এসেছিল সব শেষ। আমার ভাই, তার মেয়ে, জামাই, নাতনি সব শেষ।
কথাগুলি বলছিলেন শেখ লাল। তাঁর খুড়তুতো ভাইয়ের বাড়িতেই হামলা চলেছিল। কথাগুলি বলছিলেন এক নিঃশ্বাসে, তাঁর মাকেও জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটা বলতে গিয়েই গামছা দিয়ে চোখমুখ ঢেকে ফেললেন। এঁরা প্রত্যেকেই এখন গোপন আস্তানায়। বগটুইয়ে যে বাড়িগুলিকে সোমবার রাতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কাল পর্যন্ত তাঁদের আত্মীয়দের খোঁজ মেলেনি। আজ ক্যামেরার সামনে এসে বিভৎসতার বর্ণনা দিলেন তাঁরা। সঙ্গে ফাঁস করলেন আরও বিস্ফোরক তথ্য।
বগটুই আজ পুরুষ শূন্য। ভারী বুটের আওয়াজ আর গ্রামে জনপ্রতিনিধিদের ভিড়। সোমবারের রাতে যাঁদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যাঁদের পরিবারের সদস্যদের জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল, তাঁদের কোনও একজনকেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই বাড়ির কেউ কেউ পালিয়ে গিয়েছিলেন আগেই। তাই বেঁচে গিয়েছিলেন। তাঁরা গোপন আস্তানায় লুকিয়ে রয়েছেন। TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে সাহস করে মুখ খুলেছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যিনি চোখের সামনে পুড়তে দেখেছেন নিজের স্ত্রী-বউ-মাকেই। প্রাণ বাঁচাতে তিনি লুকিয়ে ছিলেন জঙ্গলে। আজ বগটুইয়ের ওই মানুষগুলো সাহস পেয়ে সামনে আসছেন। তুলে ধরছেন অনেক বিস্ফোরক তথ্য। তবে তাঁরা এও জানাচ্ছেন, পুলিশি তদন্তে আশ্বাস নেই তাঁদের।