‘ওঁরা তো গরু-ছাগল নন, যে বেঁধে রাখব…’, সৌমেনের তৃণমূল যোগে চরম কটাক্ষ দিলীপের
Dilip Ghosh: বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে ফেরা নেতাদের 'গরু-ছাগল'-এর প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ করলেন তিনি।
বীরভূম: “দলবদল এখন ফ্যাশন হয়ে গিয়েছে। তিন-চার জন এমন রয়েছেন, যাঁরা অন্য দল থেকে এলেও কোনওদিনই এই দলের হয়ে উঠতে পারেনি। তাঁরা কোনওদিনই দলের সঙ্গে আসেনি।” কালিয়াগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক সৌমেন রায়ের তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে বলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এমনকি বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে ফেরা নেতাদের ‘গরু-ছাগল’-এর প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ করলেন তিনি। প্রসঙ্গত, শনিবার উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলীয় মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে যোগ দেন তৃণমূলে।
বীরভূমে এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে দিলীপ ঘোষ বলেন, “তিন-চারজন এমন আছেন, যাঁরা কখনও দলের সঙ্গে আসেনি, অন্য সংগঠনের অন্য দলের লোক। তাঁদের নিয়ে আমরা ক্যান্ডিডেট করেছিলাম।” প্রার্থী বাছাই নিয়ে দল অন্দরে যে মতবিরোধ ছিল, তা স্বীকারও করে নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “আমাদের দলেও প্রথম থেকেই তাঁদের নিয়ে বিরোধ ছিল। কিন্তু তাও আমরা তাঁদের জায়গা দিয়েছি, তাঁরা জিতে এসেছেন।”
দিলীপ ঘোষের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “এখন তাঁদের হয়তো কোন অসুবিধা আছে, বিভিন্ন রকম ব্যক্তিগত সুবিধা ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থ রয়েছে! কাউকে চাপ দেওয়া হচ্ছে, ভয় দেখানো হচ্ছে, লোভ দেখানো হচ্ছে। যাঁরা হজম করতে পারছেন না তাঁরা চলে যাচ্ছে।” তাঁর কটাক্ষ, “যাঁরা দলবদল করছেন, তাঁরা সকলেই তৃণমূল থেকে এসেছিলেন, তাঁদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও লাভের কারণে তাঁরা চলে যাচ্ছে। মুকুলবাবু যদি চলে যেতে পারেন তাহলে যে কেউ চলে যেতেই পারে।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতির কথায়, “প্রথম থেকেই পাঁচ-ছ’জনের এরকম সমস্যা ছিল। কিন্তু যাঁরা ওঁদের জিতিয়েছিলেন, তাঁরা এখনও আমাদের সঙ্গেই আছেন। এঁরা তো গরু ছাগল নয় যে আটকে রাখব?রাজনীতিতে যেদিকে পাল্লা ভারী থাকে সেদিকেই লোক চলে যায়।”
উল্লেখ্য, প্রায় দু’মাস আগে সৌমেন জেলা বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর প্রথম এবং একমাত্র এই খবর করেছিল TV9 বাংলা, যে তিনি বিজেপি ত্যাগ করতে পারেন। খবর সম্প্রচারের পরই জেলাজুড়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়। পরে অবশ্য সৌমেন বিজেপিতেই আছেন বলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই বিধানসভা কেন্দ্র থেকে উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে গুঞ্জন চলছিল বিজেপির অন্দরে। শেষ পর্যন্ত শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সৌমেনের তৃণমূলে যোগ টিভিনাইন বাংলার খবরেই সিলমোহর দিল, এটা বলাই যায়।
সূত্রের খবর, যেদিন বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস তৃণমূলে যোগ দেন, সে দিনই সৌমেন রায়েরও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটু অপেক্ষা করেই তৃণমূলে যোগ দিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, সৌমেন রায়ও আগে তৃণমূলেই ছিলেন। কিন্তু বাকি দলবদলুদের মতো ভোটের আগে তিনিও তৃণমূলে যোগ দেন। মুকুল দল ছাড়ার পরই বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে দাবি করতে শোনা গিয়েছিল, যারা যারা দল ছাড়ার তারা এখনই ছেড়ে চলে যাক। যদিও এক ধাক্কায় কেউই দল ছাড়েননি। আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলতে চায় না বিজেপি’, সুজনের কণ্ঠে আবারও ‘বিজেমূল’ সুর