Bangla Awas Yojana: রঙ দেখে দেওয়া হচ্ছে ঘর তৈরির টাকা! তৃণমূলের বিরুদ্ধে বড়সড় দুর্ণীতির অভিযোগ
Bangla Awas Yojana: ৯০ জন উপভোক্তার বিরুদ্ধে রামনগর ও মন্দারমনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন রামনগর দুই ব্লকের বিডিও বিপ্রতীম বসাক।
পূর্ব মেদিনীপুর : সরকারি প্রকল্পে দুর্ণীতি ও স্বজন পোষণের অভিযোগে সরব গেরুয়া শিবির। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর ২ নম্বর ব্লকের কমপক্ষে ৯০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানালেন বিডিও। টাকা নিয়েও কেউ কেউ বাড়ি তৈরি করছে না বলে অভিযোগ। বিরোধীদের দাবি, উন্নয়নের নামে সরকারি অর্থ অপচয় করা হচ্ছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তছরূপ করা হচ্ছে বলেও দাবি। যদিও এই অভিযোগ পুরোপুরি ঠিক নয় বলে দাবি শাসক শিবিরের।
এই অভিযোগে আজ বৃহস্পতিবার রামনগর ২ নম্বর ব্লকের প্রায় ৯০ জন উপভোক্তার বিরুদ্ধে রামনগর ও মন্দারমনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রামনগর দুই ব্লকের বিডিও বিপ্রতীম বসাক। তিনি জানান, সরকারি পরিষেবা এলাকাবাসীদের সুবিধার্থে সরকার যোজনা এনেছে। কিন্তু বহু মানুষ আছেন যাঁরা গত চার বছর ধরে এই সুযোগ নিয়েও তা সম্পূর্ণ করতে পারেনি এবং সরকারি অর্থের হিসেব ও চিঠির উত্তর দেয়নি। রামনগর থানায় এমন ৮৪ টি এবং মন্দারমনি থানায় ৬টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই ব্লকে ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষে ২৯৮২ জনকে, ২০২০-২১ আর্থিক বর্ষে ২১০৭ জনকে এবং ২০২১-২২ আর্থিক বর্ষে ৬৮৭ জনকে বাংলা আবাস যোজনা বরাদ্দ অর্থ হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি চিঠির উত্তর না পেয়ে অভিযোগ জানানো হল বলে উল্লেখ করেন বিডিও।
অপরদিকে রামনগর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও বিষ্ণু পদ রায় জানান, এখনও পর্যন্ত ৫,৩৪৮ টি ঘরের জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে যার মধ্যে ৪০ জন উপভোক্তা ঘর সময় মতো তৈরি না করায় নোটিস ধরানো হয়েছে।
বিরোধীদের এই অভিযোগ নতুন নয়। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বারবার শাসক দলের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ সামনে এসেছে। এবার সেই একই অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরে। অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিভিন্ন ব্লকে দেখা যাচ্ছে, বাংলা আবাস যোজনার টাকা যাঁরা পাচ্ছেন তাঁরা ঘর না করেই সেই সরকারি অর্থ ভোগ করছেন। সেই অভিযোগ পেয়ে দেরিতে হলেও পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। রাজনৈতিক রঙ দেখেই ঘর বলে অভিযোগ বিরোধীদের। অভিযোগ উঠছে, শাসক দলের ঘনিষ্ঠরা বাড়ি না তৈরি করেও পুরো টাকা পেয়ে যাচ্ছেন। আর অন্য দলের লোক হলে, প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েই ঘর তৈরির জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।
বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অসীম মিশ্র জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর “প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা”র নাম পরিবর্তন করে রাজ্যের তৃণমূল পরিচালিত এই সরকার “বাংলা আবাস যোজনা” নামে চালাচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, যাদের ঘর নেই তারা টাকা পাচ্ছে না। ঘর তৈরির টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রেও কাটমানি নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ, বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে চলছে স্বজন পোষণ। যার জন্য শেষ পর্যন্ত যারা প্রকৃত প্রাপক তাঁরা টাকা পাচ্ছেন না এবং বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি আরও জানান, বহু ক্ষেত্রে আবার বিজেপি কর্মী ও সমর্থক দের একটা অংশ দিয়ে ঘর সম্পূর্ণ করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। আর তৃণমূল সমর্থকদের সম্পূর্ণ টাকা আগেই দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ অসীম বাবুর।
এ বিষয়ে রামনগরে বিধায়ক ও রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, বহু ক্ষেত্রে বিশেষ করে রামনগরে মন্দারমনি মৌজায় সি আর জেড আইন বলবৎ থাকার জন্য অনেক মানুষ টাকা পেয়েও ঘর করতে পারেননি। আর বহু মানুষ এই আবাস যোজনার নিয়মে অন্য জায়গার ভিতের ছবি দেখিয়ে অসৎ উপায় অবলম্বন করেছেন। সে ক্ষেত্রে, নিজের জায়গায় ছবি না তুলে অপরের জায়গার ছবি তুলে জমা করায় পরিদর্শনে মিল না পেয়ে বরাদ্দ আটকেছে। আবার অনেকের কোভিড কালে আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার জন্য এই সুযোগ পেয়েও ঘর করতে পারেনি। মন্ত্রীর কথায়, বিজেপির এই অভিযোগ সত্য নয়, কারণ যাঁরাই আবেদন করেছেন প্রত্যেকে পেয়েছেন টাকা। কোনও রাজনৈতিক রঙ দেখে নয়, প্রকৃত প্রাপক হলেই সে টাকা পাবে বলে দাবি মন্ত্রীর।
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee: নজরে উত্তর-পূর্ব, চলতি মাসেই মেঘালয় সফরের সম্ভাবনা মমতার