‘আমাদের বাঁচাতে গিয়ে ছেলেটা নিজে মরল’, হাহাকার জয়প্রকাশের বাবার, মৃতের পরিজনদের অর্থ সাহায্য বিজেপির
বিজেপির রাজ্য মহিলা সম্পাদিকা ফাল্গুনী পাত্র বলেন, "তৃণমূল সরকার পরিবর্তনের নামে যে সন্ত্রাস শুরু করেছে তা চৌত্রিশ বছরের বাম শাসনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। জয়প্রকাশবাবুর পরিবারের দাবি, তাঁরা সাধারণ গরীব মানুষ। তাঁদের উপর এভাবে হামলা সরকারি মদতপুষ্ট। দোষীদের অবিলম্বে শাস্তি হোক এটাই চান তাঁরা।"
উত্তর ২৪ পরগনা: বঙ্গে ভোটপর্ব মিটলেও শান্ত হয়নি ভাটপাড়া। সম্প্রতি, দুষ্কৃতীদের বোমার আঘাতে মারা যান বিজেপির (BJP) সক্রিয় কর্মী জয়প্রকাশ যাদব ওরফে জে পি যাদব। তাঁর মৃত্যুতে ফের শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। বুধবার, মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ভাটপাড়ার বিজেপি বিধায়ক পবন সিং-সহ দলের অন্যান্য় নেতৃবৃন্দ। মৃতের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ বাবদ তুলে দেওয়া হয় পাঁচলক্ষ টাকার চেক।
এদিন, মৃত বিজেপি (BJP) কর্মীর বাড়িতে আসেন বিধায়ক পবন সিং,বিজেপির রাজ্য মহিলা সম্পাদিকা ফাল্গুনী পাত্র এবং ব্যারাকাপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি রবিন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য। কথা বলেন মৃতের পরিজনদের সঙ্গেও। মৃত জয়প্রকাশের বাবা এদিন বলেন, “ওদিন, আমাদের বাঁচাতে গিয়ে ও মরল। প্রথমে ওকে কিছুজন ডাকতে আসে। আমরা কথা বলতে গেলে দেয়নি। নিজেই এগিয়ে গেল। কিছু একটা গোলমাল হচ্ছে বুঝতে পেরে ডাক দিলাম। ‘ও কিছু না’ বলে যেই ও ঘুরল অমনি বোমা মেরে দিল। প্রাণে বাঁচল না ছেলেটা।” মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবারের আরও দাবি, এই ঘটনায় অবিলম্বে মূল অভিযুক্ত লালন সিং এবং চন্দন সিং কে গ্রেফতার করতে হবে এবং তাদের ফাঁসি দিতে হবে।
জয়প্রকাশের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এদিন বিধায়ক পবন সিং বলেন, “জয়প্রকাশদের সঙ্গে একটা পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। তাই আজ এসেছি। এমনিতেও শাসক তৃণমূলের (TMC) সন্ত্রাসের জেরে আমাদের লক্ষাধিক কর্মী ঘরছাড়া। এইভাবে যে জয়কে মেরে দেবে ওরা ভাবতেও পারিনি। আমরা আর কতটুকু করতে পারি। যার ছেলে চলে গিয়েছে তার কাছে অর্থ সাহায্য নিমিত্তমাত্র। আমরা বিজেপির তরফ থেকে সর্বদা ওদের পাশে ছিলাম। আছি। থাকব।”
বিজেপির রাজ্য মহিলা সম্পাদিকা ফাল্গুনী পাত্র বলেন, “তৃণমূল সরকার পরিবর্তনের নামে যে সন্ত্রাস শুরু করেছে তা চৌত্রিশ বছরের বাম শাসনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। জয়প্রকাশবাবুর পরিবারের দাবি, তাঁরা সাধারণ গরীব মানুষ। তাঁদের উপর এভাবে হামলা সরকারি মদতপুষ্ট। দোষীদের অবিলম্বে শাস্তি হোক এটাই চান তাঁরা।”
প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুরে ভাটপাড়া এক নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তারপুর এলাকায় বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদবকে লক্ষ্য করে বোমাবাজি হয়। পায়ে হেঁটে বাড়িতে এসে তাঁকে বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। বোমার স্পিলিন্টারে মাথা ফেটে যায় মৃত জয় প্রকাশের মায়ের। তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি বলেন, ”দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন জয় প্রকাশ যাদব। একজন কার্যকর্তা, গরিব মানুষ। তাঁকেই তিন জন তৃণমূলের লোক মাথার ওপর বোমা মেরে চলে যায়। বাংলার যে কী হাল হয়েছে তা তৃণমূল দেখাচ্ছে। যে অবস্থা চলছে মানুষ আর বাঁচতে পারবে না। মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছেন শান্তি ফিরবে। আর তাঁর দলের নেতারা প্রকাশ্যে খুন করে বেড়াচ্ছে।” যদিও বিজেপির এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল। এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
আরও পড়ুন: বিজেপি কর্মীর দুই বোনকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ ও যৌননিগ্রহের অভিযোগ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে, গ্রেফতার ১