Body Recover: অসহায় অশীতিপর মায়ের পাশেই পড়ে ছেলের লাশ, তিনদিন ধরে জানতেই পারেনি কেউ!

Coochbehar: স্থানীয়রা জানান, মা-ছেলে বাড়িতে থাকতেন। মা অনেকদিন ধরেই বিছানায়। ছেলেই দেখভাল করতেন মায়ের।

Body Recover: অসহায় অশীতিপর মায়ের পাশেই পড়ে ছেলের লাশ, তিনদিন ধরে জানতেই পারেনি কেউ!
অসুস্থ মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 13, 2021 | 6:47 PM

কোচবিহার: শয্যাশায়ী অশীতিপর মা। হাঁটাচলার শক্তিটুকু নেই। সেই মায়ের পাশেই দু’ তিন ধরে পড়ে ছিলেন মৃত ছেলে। পড়শিরা দুর্গন্ধ পেতেই খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে অসুস্থ মায়ের পাশ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় মৃত ছেলেকে। অসহায়তার ভয়ঙ্কর এই ছবি দেখা গেল কোচবিহারের ম্যাগাজিন রোড এলাকায়। শনিবার এই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির নাম বিশ্বজিৎ আচার্য। কোচবিহার পুরসভার অস্থায়ী কর্মী ছিলেন তিনি। অসুস্থ মায়ের সঙ্গেই ম্যাগাজিন রোড এলাকার বাড়িতে থাকতেন। এলাকার লোকজন জানান, বিশ্বজিৎ নিয়মিত মদ্যপান করতেন। সে কারণেই এই মৃত্যু কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন ধরে এই বাড়ি থেকে কোনও রকম সাড়া শব্দ পাচ্ছিলেন না তাঁরা। সন্দেহ একটা হচ্ছিলই। এরই মধ্যে শনিবার ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। এরপরই এলাকাবাসী আচার্য বাড়ির আত্মীয়দের খবর দেন।

খবর পেয়ে সেখানে বিশ্বজিৎবাবুর মেয়ের স্বামী আসেন। খবর দেওয়া হয় কোচবিহার কোতোয়ালি থানাতেও। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখেন বিছানায় শুয়ে রয়েছেন অসুস্থ মা। ধূসর চোখে এদিক ওদিক দেখছেন। পাশেই শুয়ে বিশ্বজিৎবাবুও। পুলিশ কর্মী গায়ে হাত ছোঁয়াতেই শীতল তড়িৎ খেলে যায় আঙুলে। যেন ঠান্ডা পাথর পড়ে রয়েছে। মৃতদেহটি যে ৪৮ ঘণ্টা কিংবা ৭২ ঘণ্টার পুরনো তেমনটাই মনে করছে পুলিশ।

প্রচন্ড দুর্গন্ধও বেরোচ্ছিল ঘর থেকে। এরপরই তড়িঘড়ি ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশ। পাশাপাশি ছেলের মৃতদেহটিও ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ।

বিশ্বজিৎ আচার্যের জামাই জানান, “স্থানীয়রাই সকালে ফোন করে খবর দেয় বাড়ির দরজা খুলছে না। উনি আমার শ্বশুরমশাই হন। আমার দিদি শাশুড়ির সঙ্গেই থাকতেন উনি। আমরা এসে দেখি দরজা খুলছে না। পরে পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ এসে দরজা ভাঙল। দেখি শ্বশুরমশাই মারা গিয়েছেন। মায়ের পাশেই পড়ে ছিলেন। দিদি শাশুড়িকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গত দু’ তিন ধরেই হয়তো সাড়া দিচ্ছে না এ বাড়ি থেকে কেউ। তবে আমরা তো কেউ এখানে থাকি না। তাই আসল ঘটনাটা আমরা ঠিক বলতেও পারব না। এখানে আমার স্ত্রীর আরও আত্মীয়ও থাকেন। তাঁরা ওকে বিষয়টি জানান।”

স্থানীয়রা জানান, মা-ছেলে বাড়িতে থাকতেন। মা অনেকদিন ধরেই বিছানায়। ছেলেই দেখভাল করতেন মায়ের। মায়ের পাশে ছেলের মৃতদেহ পড়ে থাকলেও তা বোঝার মতো অবস্থা নেই মায়ের। লোকবল না থাকলে কী চরম অসহায় পরিণতি যে মানুষের হতে পারে কোচবিহার কোতোয়ালি থানা এলাকার এদিনের ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

আরও পড়ুন: Daughter Killed Father: ‘বাবার হাত থেকে বাঁশ কেড়ে নিয়ে মেরেছি, খুব করে মেরেছি’! বৃদ্ধ খুনে কাঠগড়ায় মেয়ে