South Dinajpur: করমণ্ডল দুর্ঘটনার পর থেকে কোনও খোঁজ নেই স্বামীর, ছোট্ট সন্তান কোলে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে চন্দনের স্ত্রীর

Coromandel Express: দুর্ঘটনার পর থেকে ১৭টা দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু চন্দনবাবু আদৌ জীবিত আছেন কি না, থাকলে কোন হাসপাতালে আছেন... সে সব কিছুই জানেন না পরিবারের লোকেরা। ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে চন্দনের স্ত্রী সুচিত্রা রায়ের।

South Dinajpur: করমণ্ডল দুর্ঘটনার পর থেকে কোনও খোঁজ নেই স্বামীর, ছোট্ট সন্তান কোলে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে চন্দনের স্ত্রীর
দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে পরিবারের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 19, 2023 | 8:51 PM

তপন: দু’চোখে স্বপ্ন ছিল অনেক। স্বপ্ন দেখেছিল নিজে একটা বাড়ি বানানোর। ভবিষ্যৎ জীবনটা যাতে পরিবার একটু ভালভাবে কাটাতে পারে, তার জন্য কিছু সঞ্চয় করার। দু’চোখ ভরা সেই স্বপ্ন নিয়েই বাড়ি ছেড়েছিলেন চন্দন রায়। দক্ষিণ দিনাজপুরে (South Dinajpur) প্রত্যন্ত গ্রাম গঙ্গারামপুর থেকে পাড়ি দিয়েছিলেন কেরলে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেপে রওনা দিয়েছিলেন সেদিন। ট্রেন ছাড়ার পর বাড়িতে যোগাযোগও করেছিলেন। এরপর বালেশ্বরের কাছে বাহানাগায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী সেই করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express)। কিন্তু তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর।

দুর্ঘটনার পর থেকে ১৭টা দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু চন্দনবাবু আদৌ জীবিত আছেন কি না, থাকলে কোন হাসপাতালে আছেন… সে সব কিছুই জানেন না পরিবারের লোকেরা। ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে চন্দনের স্ত্রী সুচিত্রা রায়ের। চন্দন রায়ের খোঁজে কিছুদিন আগে ওড়িশার বালেশ্বরেও ছুটে গিয়েছিলেন তাঁরা। আশা ছিল, কিছু অন্তত খবর পাবেন। কিন্তু নাহ, কোথাও কোনও খোঁজ নেই তাঁর। কিন্তু হাল ছাড়ছেন না সুচিত্রা। এখনও আশায় আছেন। কিছু একটা অন্তত খবর আসবে, স্বামীর খোঁজ মিলবে। সেই আশাটুকু সম্বল করেই দিন গুনছেন তিনি।

চন্দনবাবু ও তাঁর মালদার এক আত্মীয় নিত্যম রায়। দু’জনে মিলেই সেদিন যাচ্ছিলেন কেরলে। করমণ্ডলে চেপে। কিন্তু দুর্ঘটনার পর থেকে চন্দনবাবুর সঙ্গে আর ফোনে যোগাযোগ করতে পারছেন না বাড়ির লোকেরা। নিত্যমের ফোন নম্বরও ছিল তাঁদের কাছে। সেই নম্বরেও ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন ধরেছিল অন্য কেউ। উল্টো দিক থেকে, হিন্দিভাষী কেউ একজন জানিয়েছিলেন, নিত্যম আর বেঁচে নেই। কিন্তু চন্দনের কোনও খোঁজ দিতে পারেননি ওই হিন্দিভাষী।

স্বামীর খোঁজে সব জায়গায় পাগলের মতো ছুটে বেরিয়েছেন সুচিত্রা। ওড়িশায়। কলকাতায়। সব হাসপাতালে হাসপাতালে হন্যে হয়ে খুঁজেছেন। কোথাও কোনও খোঁজ মেলেনি। স্বামীর খোঁজে পুলিশ প্রশাসনেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকেও বিশেষ সুরাহা মেলেনি। পরিবারের দাবি, তাঁরা রেলের কাছেও খোঁজখবর চাইতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে আবার আর এক বিপত্তি! পরিবারের লোকেরা জানাচ্ছেন, রেলের থেকে প্রমাণ চাওয়া হয়েছে তাঁরা ওই ট্রেনে ছিলেন।

কিন্তু, হায় রে পোড়া কপাল। প্রমাণ দেবে কীভাবে ওই প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবার! অসহায় ওই পরিবারের কাছে যে প্রমাণ বলতে বিশেষ কিছুই নেই। কারণ, চন্দনরা সংরক্ষিত কামরার যাত্রী ছিলেন না। অসংরক্ষিত জেনারেল কামরায় চেপে যাচ্ছিলেন তাঁরা। শুধু ট্রেন ছাড়ার আগে চন্দনের ফোন আর দুর্ঘটনার পর নিত্যমের ফোনে ওই হিন্দিভাষীর কথা… এই দুই ভয়েস রেকর্ড ছাড়া যে আর কিছুই নেই তাঁদের কাছে।

জেলার পুলিশ সুপার রাহুল দে নিজেও গোটা বিষয়টির সম্পর্কে অবগত। তিনিও জানাচ্ছেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে যেখানে যেখানে জানানোর কথা, সেসব জায়গায় জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও খবর পাওয়া যায়নি। চন্দনবাবুর পরিবার এখন চাইছে, কিছু একটা অন্তত খবর আসুক। ভাল বা খারাপ, যা খবরই হোক… কিছু অন্তত আসুক।