AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kumarganj Suicide: ২ বছরে ১৫ মেয়ের পরিবারের থেকে ‘রিজেক্টেড’, ছেলের সিদ্ধান্তে শিউরে উঠছেন বাবা-মা!

Youth Committed Suicide: তবে গত বছর হঠাৎই ভাই আত্মঘাতী হয়। এদিকে বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে।

Kumarganj Suicide: ২ বছরে ১৫ মেয়ের পরিবারের থেকে 'রিজেক্টেড', ছেলের সিদ্ধান্তে শিউরে উঠছেন বাবা-মা!
মণি ঘোষ (নিজস্ব ছবি)
| Edited By: | Updated on: Mar 12, 2022 | 12:00 PM
Share

কুমারগঞ্জ: ছোট থেকেই ছিলেন বিশেষ ভাবে সক্ষম। সমাজ নাম দিয়েছিল ‘প্রতিবন্ধী’। হয়ত এটাই ছিল দোষ। গত দু’বছরে বিয়ের জন্য একাধিকবার মেয়ে দেখেছিলেন। কখনও নিজেরা সম্বন্ধ করেছেন, কখনও আবার অন্য কেউ ছেলেটির পরিবারে সম্বন্ধ করতে এসেছিল। কিন্তু ওই যে ‘প্রতিবন্ধীর’ তকমা ছিল! সেই কারণে প্রায় পনেরোটি পরিবার সম্বন্ধ ভেঙে দেয়। এটাই মেনে নিতে পারেননি। এরপরই মর্মান্তিক পদক্ষেপ। একাধিক মেয়ের পরিবার বিয়ে না করায় ছেলে মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল প্রতিবন্ধীর জন্যই হয়তো তাঁর বিয়ে হচ্ছে না। এই অভিমানেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক ৷ মৃতের নাম মনোজ ঘোষ (৩০)। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের বটুন গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণগর এলাকায়। শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মনোজের মৃতদেহ উদ্ধার হয় ৷ বিষয়টি জানতে পেরে খবর দেওয়া হয় পতিরাম থানার পুলিশকে। পরে পতিরাম থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়। পরিবারের প্রাথমিক অনুমান বিয়ে না হওয়ার জন্য মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। যার জেরেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন মনোজ। এদিকে কী কারণে ওই যুবক আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, ছোট থেকেই মনোজ শারীরিক ভাবে সক্ষম ছিলেন৷ তাঁর ডান হাতে সমস্যা ছিল। কিন্তু সেই সমস্যাকে দূর করে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি৷ পড়াশুনা শেষ করেই মনোজ তাঁর বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে হাত লাগায় ৷ ভাই ও বাবা মাকে নিয়ে মনোজের সংসার ভালই কাটছিল। তবে গত বছর হঠাৎই ভাই আত্মঘাতী হন। এদিকে বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে।

প্রায় বছর দু’য়েক আগে থেকেই মনোজ বিয়ে করবে বলে পরিবারকে জানায় ৷ সেই সময় থেকে মনোজের জন্য মেয়ে দেখতে শুরু করে পরিবার। দু’বছরে কম করে ১৫টি মেয়ে দেখেছিলেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়ের পরিবার সম্বন্ধ ভেঙে দেয়। এক দু’জন পছন্দ করলেও ছেলে প্রতিবন্ধী জন্য বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে দেয় তারা ৷ একাধিক মেয়ে দেখেও বিয়ে না হওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল মনোজ। বাড়িতে সারাক্ষণ বলতেন তার হয়তো আর বিয়ে হবে না ৷ বাবা মা না থাকলে তাঁকে কে দেখবে এটাই শুধু ভাবছিলেন ৷ অবশেষে শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি।

এদিকে আত্মঘাতী হওয়ার আগে মনোজ ব্যাগে করে তুলসীগাছ, ধূপকাঠি, গীতা সহ মৃতদেহ সৎকারে যা যা প্রয়োজন সব ভরে রেখে গিয়েছিলেন ৷ যাতে বৃদ্ধ বাবা মাকে মৃতদেহ সৎকার করা নিয়ে হয়রানির মধ্যে পড়তে না হয় ৷ পাশাপাশি আত্মঘাতীর হওয়ার আগে নিজের ঘরে কোলবালিসের উপর লেপ চাপা দিয়েছিলেন যাতে কেউ বুঝতে না পারে সে বেরিয়ে গিয়েছে ৷ শুক্রবার সকালে বাবা ডাকাডাকি করলেও সারা না মেলায় পরে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ৷ কান্নায় ভেঙে পরে গোটা পরিবার।

এবিষয়ে বাবা মণি ঘোষ বলেন, “ছেলে ছোট থেকেই বিশেষভাবে সক্ষম। আমরা না থাকলে তাঁকে কে দেখবে এই জন্য বিয়ে করতে চাইছিল ও।”

আরও পড়ুন: Army Chopper Crash: টেনে-হিচড়ে বের করা হয়েছিল বরফের স্তূপ থেকে, শেষরক্ষা হল না তবুও! সেনা কপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু পাইলটের