Singur: শেষ পর্যন্ত সিঙ্গুরের ‘সত্য’ ফাঁস

Singur: এদিন সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া এলাকার একটি মন্দিরে সাংবাদিক বৈঠক করেন নব নির্মিত সিঙ্গুর বান্ধ্যা জমি পুনর্ব্যবহার কমিটির সদস্যরা। এক সময় জমি আন্দোলনের প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা।

Singur: শেষ পর্যন্ত সিঙ্গুরের ‘সত্য’ ফাঁস
কী বলছেন কৃষক নেতারা? Image Credit source: TV 9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 30, 2024 | 10:04 PM

সিঙ্গুর: আরজি কর নিয়ে যখন উত্তাল রাজ্য তখন সিঙ্গুরের ‘সত্য’ ফাঁস করে দিলেন সিঙ্গুরের কৃষক আন্দোলনের প্রথমসারির নেতা তথা তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মহাদেব দাস। তাঁর দাবি, এক সময় একশো শতাংশ জমিই চাষ যোগ্য হিসাবে জমি ফেরত পেয়েছেন বলে বিবৃতি দিতে হত তাদের। দলের সন্মান রক্ষার জন্যই এই বিবৃতি দিতে হত বলে দাবি মহাদেব দাসের। 

২০১৬ সালের ৩০ অগস্ট কৃষি জমি ফেরতের নির্দেশ দেয় আদালত। নির্দেশ আসে, তিন মাসের মধ্যে অধিগ্রহণ করা জমি চাষ যোগ্য করে ফেরত দিতে হবে। অভিযোগ, তারপর থেকেই তৃণমূল সমর্থনকারী কৃষকদের বিবৃতি দিয়ে জানাতে হত যে তারা একশো শতাংশ জমিই চাষ যোগ্য হিসাবে ফেরত পেয়েছেন। বর্তমানে আট বছর পর সেই সময় তাঁরা মিথ্যা বলেছেন বলে দাবি করলেন কৃষকরা।

এদিন সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া এলাকার একটি মন্দিরে সাংবাদিক বৈঠক করেন নব নির্মিত সিঙ্গুর বান্ধ্যা জমি পুনর্ব্যবহার কমিটির সদস্যরা। এক সময় জমি আন্দোলনের প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা। সাংবাদিক বৈঠকের পর সাত দফা দাবি নিয়ে নবান্নের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁদের অভিযোগ আদালতের রায়ে ফেরত পাওয়া জমির প্রায় সাতশো একর চাষ যোগ্য করে দেওয়া হয়নি। সেই জমি যাতে চাষ উপযোগী করে দেওয়া হয় সেই দাবি উঠেছে। একইসঙ্গে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সুবিধা উপলব্ধ করে দেওয়ার দাবি নিয়েই এদিন নবান্নে যান চারজনের প্রতিনিধি দল। 

তাঁদের আরও দাবি মুখ্যমন্ত্রীকে সিঙ্গুরের জমি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। সমস্ত প্রমাণ নিয়েই এদিন তাঁরা নবান্নে যান। মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করছেন তাঁরা। তাঁদের সাফ দাবি, হয় জমি চাষ উপযোগী করা হোক, না হয় শিল্পের জন্য ব্যবহার হোক ওই সব জমি।

সিঙ্গুরের কৃষক আন্দোলনের প্রথমসারির নেতা তথা তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মহাদেব দাস বলেন, “বাম সরকারের আমলে জমি অধিগ্রহণ হয়। সরকার পরিবর্তন হয়, নতুন সরকার আসার পরে জমি ফেরতের জন্য আইন আনা হয়েছিল। সেই আইন করেও জমি ফেরত দিতে গিয়েও সরকার আটকে গিয়েছিল। সর্বোপরি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অধিগ্রহণ বাতিল হয়েছে। জমিকে পূর্বের ন্যায় কৃষকের হাতে ফেরত দেওয়ার রাজ্য সরকারের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জমি চাষযোগ্য হওয়ার আগেই সরকার এখান থেকে হাত গুটিয়ে চলে যায়।” এই মহাদেব আবার বর্তমানে বন্ধ্যা জমি পুনর্ব্যবহার কমিটির আহ্বায়ক।

এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “যখন আমরা তৃণমূল কংগ্রেসের ছিলাম তখন দলের নির্দেশ মতো কাজ করেছিলাম। সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য আমরা চাষি হয়ে সেখানে বলেছিলাম আমাদের জমি চাষযোগ্য হয়ে গিয়েছে। সেই বক্তব্য ছিল দলের কথামতো। কিন্তু তখনও জমি চাষযোগ্য হয়নি। একপ্রকার তখন দলের ভালো ভেবে মিথ্যে কথা বলেছিলাম। বর্তমানে ৭০০ একর জমির চাষের অযোগ্য। এখনও অনেকেই আছে যারা জমির পরচা পায়নি। একের চেক অন্যে তুলে নিয়েছে। সেই চেক তারা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। সরকার এখন আর সহযোগিতা করছে না। জমির মালিকানা নিয়েও অনেক জটিলতা রয়েছে। আমরা চাই জমি চাষযোগ্য করা হোক।”

একই কথা বলছেন সিঙ্গুরের আন্দোলনের প্রথমসারির কৃষক নেতা তথা সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দুধকুমার ধারা। তিনিও বর্তমানে সিঙ্গুর বন্ধ্যা জমি পুনর্ব্যবহার কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি বলছেন, “৬৫০ থেকে ৭০০ একর জমি বন্ধ্যা হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেছেন ৯১ শতাংশ জমিতে চাষ হচ্ছে। এতেই মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। সেই সমস্যা মেটাতে চাইছি। বিধায়কের দাবি কতটা সত্য সেটার জন্যই কমিটির পক্ষ থেকে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি। তিনি বিষয়টা বিবেচনা করে দেখুন।”