দাউ দাউ করে জ্বলছে শরীর, ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে এসে যুবক বললেন, ‘ও মেরে ফেলল!’

'বাঁচাও, মেরে ফেলল ও', বুক ফাঁটা আর্তনাদ। দৃশ্য দেখে তখন স্তম্ভিত ডানকুনির পঞ্চাননতলার বাসিন্দারা।

দাউ দাউ করে জ্বলছে শরীর, ঘরের দরজা খুলে বেরিয়ে এসে যুবক বললেন, 'ও মেরে ফেলল!'
সঞ্জয় সাউ
Follow Us:
| Updated on: Dec 14, 2020 | 7:02 PM

হুগলি: বাড়ির ভিতর থেকে চিত্কার চেঁচামেচির আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু নিতান্তই পারিবারিক বিষয় ভেবে প্রথমটায় আমল দেননি। কিছুক্ষণ পরেই দেখা যায়, বাড়ির দরজা খুলে ছুটে আসছেন এক যুবক। শরীর দাউ দাউ করে জ্বলছে। ‘বাঁচাও, মেরে ফেলল ও’, বুক ফাঁটা আর্তনাদ। দৃশ্য দেখে তখন স্তম্ভিত ডানকুনির (Dankuni) পঞ্চাননতলার বাসিন্দারা। গত রবিবারের এই ঘটনার আতঙ্ক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। সোমবার এই যুবকের মৃত্যু হয় হাসপাতালে। তবে এরই মাঝে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাক্তন স্ত্রী-ই আগুন ধরিয়েছে তাঁর গায়ে… এমনই অভিযোগ উঠে এল ঘটনার নেপথ্যে।

পঞ্চাননতলার বাসিন্দা সঞ্জয় সাউ গত ৬ডিসেম্বর বাড়িতেই অগ্নিদগ্ধ হন। ওই অবস্থাতেই তিনি দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তাঁর প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে প্রথমে কলকাতা আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। এক সপ্তাহের লড়াই শেষে সোমবার সকালে লড়াই শেষ হয় তাঁর।

তবে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই সঞ্জয় জানান, তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী সুবর্ণা সরকার ওরফে মামনিই তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এই ঘটনার নেপথ্যের বিষয়গুলো বলতে গেলে পিছিয়ে যেতে হবে পিছনের কয়েকটা বছর। দশ বছর আগে সঞ্জয় সাউয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় মামনির। তাঁদের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।

চার বছর আগে মামনি সঞ্জয়কে ছেড়ে চলে যান। সুব্রত চৌধুরী নামে স্থানীয় এক যুবককে বিয়ে করেন তিনি । সঞ্জয়ও দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। দ্বিতীয়বার বিয়ের পর নিজের মায়ের বাড়ির পাশেই থাকতে শুরু করেন মামনি ও তাঁর বর্তমান স্বামী। অভিযোগ, মামনির নজর প্রথম থেকেই সঞ্জয়ের সম্পত্তির ওপর ছিল। সেই কারণে গত রবিবার সঞ্জয়ের বাড়িতে যান মামনি। সেসময় সঞ্জয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী মুনমুনকে মামনি অন্য একটি ঘরে আটকে রেখে দেন। ঝগড়ার সময়েই সঞ্জয়ের গায়ে মামনি আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুন: থ্যাতলানো মাথা, চোখে ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে, পাড়ার ‘বউ’কে দেখে শিউরে উঠলেন প্রতিবেশীরা

মামনির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মুনমুন। ঘটনার পর থেকে পলাতক মামনি, তাঁর মা ও বর্তমান স্বামী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডানকুনি থানার পুলিস।