Junior Doctor’s Protest: দৃশ্যত রোগা ছিপছিপে, ঝাঁঝালো কণ্ঠ, এক সময় দাদাগিরির মঞ্চ থেকে পেয়েছেন পুরষ্কার, জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিসকে চেনেন?

Debasish Halder: চিকিৎসক পরিবারের দাবি, এর আগে সক্রিয়ভাবে কোনওদিন রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না তাঁদের বাড়ির ছেলে। তবে আরজি করের ঘটনা নাড়িয়ে দেয় তাঁকে। রোদে পুড়ো জলে ভিজে যেভাবে ছেলে আন্দোলন করছেন তাতে গর্বে যেন বুক ফেটে যাচ্ছে তাঁদের।

Junior Doctor's Protest: দৃশ্যত রোগা ছিপছিপে, ঝাঁঝালো কণ্ঠ, এক সময় দাদাগিরির মঞ্চ থেকে পেয়েছেন পুরষ্কার, জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিসকে চেনেন?
দেবাশিস হালদার, জুনিয়র ডাক্তারImage Credit source: Tv9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 19, 2024 | 2:12 PM

হুগলি: গাল ভর্তি দাড়ি, রোগা-ছিপছিপে চেহারা। তবে ঝাঁঝাল কণ্ঠ এখন আলোচনার কেন্দ্রে। প্রথম দিনই একদম সোজা-সাপ্টা বক্তব্য রেখে নজর কেড়েছিলেন তিনি। কথা হচ্ছে আরজি করের আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদারের। অনিকেত মাহাতো,কিঞ্জল নন্দ, রুমেলিকা কুমারের পাশাপাশি দেবাশিসের নামও উঠে আসছে চর্চায়। একসময় দাদাগিরির মঞ্চে সৌরভের হাত থেকে নেন পুরষ্কার। জানেন দেবাশিস কোথায় থাকেন? বাড়িতেই বা তাঁর কে কে রয়েছেন? কেমন কেটেছে তাঁর ছোটবেলা? পড়ুন বিস্তারিত…

হুগলির বলাগড়ের খামারগাছির বাসিন্দা দেবাশিস হালদার। যদিও, তাঁর আদি বাড়ি ছিল খমারগাছির সিজা বাজেরের কাছে মুক্তকেশী তলায়। তাঁর বাবা চাকরি পাওয়ার পর সিজা বাস স্ট্যান্ডের কাছে আসাম লিঙ্ক রোডের পাশে বসতবাড়ি করেন। বর্তমানে তাঁর গ্রামের বাড়িতে থাকেন মা অনিমা,বাবা ক্ষিতীশ ও পিসি মীরা হালদার।

ছোটবেলা থেকেই দেবাশিসের দায়িত্ব সামলেছেন তাঁর পিসি মীরা। ছোট্ট ছেলেটাকে স্কুলে নিয়ে আসা-নিয়ে যাওয়া প্রায় সবটাই তাঁর হাতে হয়েছে। তবে সে সময় সামান্য একটি গুমটি দোকান চালাতেন তাঁর বাবা। তা দিয়ে যা রোজগার হতো সেইটুকুই দিয়েই চলত সংসার। পরে পূর্ত দফতরের গ্রুপ-ডি পদে চাকরি পান তিনি। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত।

কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন দেবাশিস হালদার। ২০০৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেন। ২০১১ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের রাজ্যের মধ্যে একাদশ স্থান অধিকার করেন। এরপর নিটে সাফল্য। কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেন। বর্তমানে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। ছ’মাস হল বিয়ে করেছেন এই জুনিয়র ডাক্তার। তাঁর স্ত্রীও একই প্রফেশনে রয়েছেন। স্বামীর সঙ্গে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে নিত্যদিন এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন তিনিও।

চিকিৎসক পরিবারের দাবি, এর আগে সক্রিয়ভাবে কোনওদিন রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না তাঁদের বাড়ির ছেলে। তবে আরজি করের ঘটনা নাড়িয়ে দেয় তাঁকে। রোদে পুড়ো জলে ভিজে যেভাবে ছেলে আন্দোলন করছেন তাতে গর্বে যেন বুক ফেটে যাচ্ছে তাঁদের।

আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে মা অনিমা বলেন,”ছেলে আমার ন্যায়ের জন্য আন্দোলন করছে এটা আমাদের খুব ভালো লাগছে। ছোট থেকে প্রতিবাদী না হলেও কখনো মিথ্যার আশ্রয় নিত না। সব সময় সত্যি কথা বলতো। বেশিরভাগ সময়টা পড়াশোনার মধ্যে দিয়েই কাটতো। এখন ছেলের সাথে খুব একটা বেশি কথা হয় না।” পিসি মীরা হালদার বলেন,”খুব মেধাবী ছাত্র ছিল একবার বলতেই খুব সহজেই বুঝে নিত যে কোনও পড়া। ওর এই আন্দোলনকে আমরা সমর্থন করি।”

বাবা ক্ষিতীশ হালদার বলেন, “আন্দোলন এত বড় হবে তা ভাবতে পারিনি। আজ গোটা বিশ্বে আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। জুনিয়র ডাক্তাররা যেভাবে এই আন্দোলনটা করছে তাতে আমি গর্বিত। ধরনা মঞ্চে আমরাও গিয়েছিলাম। সাধারণ মানুষ এখন ওদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এটা দেখে আমার আরও বেশি ভাল লেগেছে। ওরা কোনও রাজনৈতিক রঙ ছাড়া মেরুদন্ড সোজা রেখে আন্দোলন করছে। আর তাদের এই আন্দোলনকে আমি কুর্নিশ জানাই।”