Herbal Garden : শরীর নিরোগ রাখতে ভেষজের ‘সঠিক’ ব্যবহার, জীবিকাও হতে পারে ভেষজ চাষ
Herbal Garden : চিকিৎসকরা বলছেন, পরিমাণ মতো খেতে জানলে সরাসরি ভেষজ ব্যবহার করা যেতে পারে। হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর কোন ভেষজ উদ্ভিদের কোন অংশ খেতে হবে, তার তালিকাও দিয়েছে। ওই ভেষজ উদ্ভিদ কোন রোগে উপকারিতা দেবে, তা নিয়েও প্রচার করা হচ্ছে।
হুগলি : সামান্য সর্দি, কাশি। ওষুধ দোকানে গিয়ে অ্যালোপ্যাথিক কয়েকটা ট্যাবলেট কিনে খেয়ে নেন অনেকে। যা দেখে বাড়ির বয়স্করা অনেক সময় বলেন, “এর জন্য ট্যাবলেট খেতে হবে! আমরা তো তুলসি পাতা মধু দিয়ে খেয়ে নিতাম। তাতেই সর্দি, কাশি ভাল হয়ে যেত।” চিকিৎসকরাও বলছেন, ভেষজ উদ্ভিদের হাজারো গুণ। তবে তা কতটা খেতে হবে, সেটা জানা নেই বেশিরভাগ মানুষের। তাই, ভেষজ উদ্ভিদের উপকারিতা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে পদক্ষেপ করেছে হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। হুগলি জেলায় ২০টি ভেষজ উদ্যান (Herbal Garden) গড়ে তোলা হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, ভেষজ উদ্ভিদ শুধু শরীরের উপকারিতা করে না। প্রয়োজনে এর চাষ করে মানুষ জীবিকাও নির্বাহ করতে পারে।
তুলসী, নিম, থানকুনি, পিপুল, গুলঞ্চ, পুদিনা, অশ্বগন্ধার মতো হরেক ভেষজ উদ্ভিদ রয়েছে, যেগুলো আমাদের চারপাশে অনায়াসে পাওয়া যায়। এইসব গাছ গাছালি দিয়ে ওষুধ তৈরি হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, পরিমাণ মতো খেতে জানলে সরাসরি ভেষজ ব্যবহার করা যেতে পারে। হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর কোন ভেষজ উদ্ভিদের কোন অংশ খেতে হবে, তার তালিকাও দিয়েছে। ওই ভেষজ উদ্ভিদ কোন রোগে উপকারিতা দেবে, তা নিয়েও প্রচার করা হচ্ছে।
হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ডিএমও (আয়ুষের প্রধান) প্রভঞ্জন গায়েন বলেন, “ভেষজ উদ্ভিদ জীবন যেমন বাঁচায়, তেমনি জীবিকাও নির্বাহ করা যায়। হুগলি জেলায় কুড়িটি ভেষজ উদ্যান গড়ে তোলা হচ্ছে এই মুহূর্তে। বলাগড়ে তৈরি হচ্ছে আয়ুষ ভেষজ পার্ক। এর জন্য কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে সরকারি ভাবে। সিঙ্গুরের বলরামবাটিতেও ভাল আয়ুষ ভেষজ উদ্যান তৈরি হয়েছে।” চুঁচুড়ায় ডিএমও অফিসের সামনে তৈরি হয়েছে আয়ুষ ভেষজ উদ্যান। চিকিৎসক গায়েন আরও বলেন, “ঠিক করে খেতে জানলে আয়ুষ মানুষকে নিরোগ দীর্ঘ জীবন দেয়। ওষুধের পিছনে বহু টাকা ব্যয় করতে হয় অনেককে। আয়ুষের অভ্যাস করলে অর্থ সাশ্রয় হবে।” তিনি জানান, কেউ যদি বাড়িতে ভেষজ বাগান করতে চান, তাঁকে সাহায্য করবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলায় কুড়িটি আয়ুষ সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। প্রত্যেকটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র এলাকায় একটি করে আয়ুষ উদ্যান তৈরি হবে।
ভেষজ উদ্ভিদ শুধু রোগ সারায় না। এইসব গাছ চাষ করে জীবিকাও নির্বাহ করা যায়। চিকিৎসক প্রভঞ্জন গায়েন বলেন, সাধারণ মানুষ ভেষজ গাছের চাষ করে প্রয়োজনে বিক্রিও করতে পারবেন। কোচবিহারের শীতলকুচিতে আয়ুষের চাষ করে স্বনির্ভর হয়েছেন অনেক মহিলা। তাঁরা সাবান জুস তৈরি করছেন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তাঁরা বলছেন, ভেষজ ওষুধের দাম কম। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। ঠিকমতো ব্যবহার জেনে গেলে কথায় কথায় ওষুধ দোকানে ছুটতে হবে না।