Video: পরকীয়া সন্দেহে বধূর চুল কেটে নীতিপুলিশি, উস্কানি তৃণমূল নেতার!
TMC: উল্লেখ্য কয়েকমাসে জলপাইগুড়ি জেলায় পরকীয়ার অভিযোগ এই ভাবে নীতিপুলিশির শিকার হয়েছেন একাধিক মহিলা। ক্রমশ এ ধরনের ঘটনা চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনেরও।
গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, ‘পরপুরুষের’ সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে এক মহিলার বাড়িতে লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে মাথার চুল কেটে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেন প্রতিবেশী মহিলারা। অভিযোগ, তৃণমূল পঞ্চায়েত নেতা প্রদীপ রায়-সহ শাসক শিবিরের নেতৃত্ব গোটা ঘটনায় উস্কানি দেন। তাঁদের অনুমতি ও উপস্থিতিতেই এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, অন্নদা রায় নামে এক মহিলা তাঁর স্বামী সদানন্দ রায়কে ছেড়ে দু’বার বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তবে দু’বারই আবার তিনি নিজে বাড়ি ফিরে আসেন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীয়ের তেমন সমস্যা ছিল না। কিন্তু বেশ কয়েকমাস আগে তৃতীয়বার বাড়ি ছেড়ে চলে যান ওই মহিলা। এর পর গত শনিবার বিকালে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। তাঁর বাড়ি ফিরে আসার খবর চাউর হতেই গ্রামের মহিলারা হাতে লাঠি নিয়ে একজোট হয়ে রাতেই তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়।
অভিযোগ, বাড়িতে ঢুকে বেধড়ক মারধর করা হয় মহিলাকে। তাঁর মাথার চুল কেটে গলায় জুতোর মালা পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয় বলে অভিযোগ। এদিকে এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিশাল বাহিনী নিয়ে ছুটে আসে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয় তাদের। যদিও ঘটনায় কাউকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি। গোটা ঘটনাই পঞ্চায়েতের অঙ্গুলিহেলনে হয়েছে বলে অভিযোগ পদ্ম শিবিরের।
বিজেপি নেতা দেবাশিস দে অভিযোগ করে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে তালিবানি শাসন চলছে। একজন গৃহবধূকে এভাবে মারধর করা চুল কেটে দিয়ে অপমান করা তৃণমূলই করতে পারে। পঞ্চায়েতের নেতা প্রদীপ রায় ও তাঁর সঙ্গীদের উস্কানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। তাঁরাই এই অন্যায়তে মদত দিয়েছেন। আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির তরফে এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করছি। দোষীদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
ঘটনায় রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দোষীদের গ্রেফতার করতে রাজগঞ্জ থানার আইসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কে বা কারা যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, বধূ নির্যাতনের এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশী চলছে।
উল্লেখ্য কয়েকমাসে জলপাইগুড়ি জেলায় পরকীয়ার অভিযোগ এই ভাবে নীতিপুলিশির শিকার হয়েছেন একাধিক মহিলা। ক্রমশ এ ধরনের ঘটনা চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনেরও। মাস কয়েক আগে সালিশি সভা ডেকে আদিবাসী মহিলাকে চরিত্রহীন অপবাদ দেওয়া, তার পর মাথা ন্যাড়া করে তাকে নগ্ন করে মারের ঘটনা ঘটে আলিপুরদুয়ারের চ্যাঙমারিতে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সেবারেও প্রায় একই অভিযোগ উঠেছিল। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে প্রায় ছয় মাস বাড়ি ফেরেননি এক আদিবাসী মহিলা। তার পর তিনি স্বামীর কাছে ফিরে আসেন। মহিলার স্বামী জানিয়েছেন, তিনি স্ত্রীকে গ্ৰহণ করলেও এলাকার মাতব্বররা সালিশি সভা ডেকে বিচার শুরু করে। সেই সালিশি সভায় বিচারে ওই মহিলাকে স্বামীর ঘর থেকে বের করে দেওয়ার নিদান দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ‘শাস্তিস্বরূপ’ তাঁর মাথা ন্যাড়া করে নগ্ন করে মারধরের নিদান দেওয়া হয়। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
দেখুন ভিডিয়ো:
আরও পড়ুন: Digha: গুটি গুটি করে উপকূলগামী ‘গুলাব’, আগেভাগেই দিঘার সমস্ত হোটেল খালি করার নির্দেশ
আরও পড়ুন: WB Jobs: রাজ্য পুলিশের পরীক্ষা দিতে এসে ভাঙল হাঁটু, জখম যুবক!