Digha: গুটি গুটি করে উপকূলগামী ‘গুলাব’, আগেভাগেই দিঘার সমস্ত হোটেল খালি করার নির্দেশ
Cyclone Gulab: জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর,হাওয়া অফিসের আগাম সতর্কতা অনুযায়ী সমুদ্র নগরী থেকে পর্যটকদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, ফের সমস্ত হোটেল খালি করে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর: উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় গুলাব (Cyclone Gulab)। রবিবার সন্ধ্যাবেলা ওড়িশার গোপালপুর ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের মাঝে কলিঙ্গপত্তনমের কাছে ল্যান্ডফলের কথা এই ঘূর্ণিঝড়ের। রাজ্যে সরাসরি ‘গুলাব এফেক্ট’ না দেখে গেলেও দুর্যোগে খামতি নেই। অন্যদিকে, সোমবার নাগাদ আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে চলেছে পূর্ব মধ্য ও উত্তর পূর্ব বঙ্গোপসাগরে। ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে সেটি বাংলা ও বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। সেই মোতাবেক, আগেভাগেই দিঘার (Digha) সমস্ত হোটেল খালি করার নির্দেশ জেলা প্রশাসন। এমনকী, পর্যটকদের দিঘা ত্যাগের নির্দেশ দিয়ে মাইকিং করাও শুরু করল প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর,হাওয়া অফিসের আগাম সতর্কতা অনুযায়ী সমুদ্র নগরী থেকে পর্যটকদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, ফের সমস্ত হোটেল খালি করে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশঙ্কা, উপকূলের নিচু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। বাড়বে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস। পরিস্থিতি বুঝেই এই ব্যবস্থা। ইতিমধ্যেই জেলা জুড়ে বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। নজরদারির জন্য সর্বত্র লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ও রেইন কন্ট্রোল মেশিন। প্রয়োজনে নবান্নের কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেই এই ব্যবস্থা। জেলার ২৫ টি ব্লকে থাকছে কন্ট্রোল রুম। সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে থাকছে পর্যবেক্ষণ দফতর যা এই বিষয়ে নজরদারি চালাবে।
রামনগর ১ব্লকের বিডিও বিষ্ণু পদ রায় বলেন, “জেলা প্রশাসনের নির্দেশে যে এলাকাগুলি প্লাবিত হতে পারে, সেগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। ছোট-বড় নৌকা ও ত্রিপল রাখা হয়েছে। জেলার সমস্ত ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতকে ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone Gulab) জন্য সবরকমভাবে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সমস্ত ব্লক-পঞ্চায়েতের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকবে নবান্নের।”
অন্ধ্র উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ‘গুলাব’। আজ, রবিবার বিকালেই কলিঙ্গপত্তনামে ল্যান্ডফল। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টা ৯০ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের পরই থাকছে নিম্নচাপের ফাঁড়া। বুধবার বাংলা উপকূলের কাছে পৌঁছবে নিম্নচাপ। মঙ্গল ও বুধবার কলকাতায় ভারী বৃ্ষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে ৭ জেলায়। বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা ১২ জেলায়। মঙ্গল ও বুধবার কলকাতায় বইবে ঝোড়ো বাতাস। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। দুর্যোগ এড়াতে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী। দক্ষিণবঙ্গের জেলাশাসক, পুলিশ সুুপারদের সঙ্গে বৈঠকে একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। দুর্যোগের মধ্যেই থাকছে উপনির্বাচন।
দুর্যোগের আশঙ্কায় (Cyclone Gulab) ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল রেল (Indian Rail)। বাতিল করা হয়েছে ২৮টি দূরপাল্লার ট্রেন। ২৬ তারিখের ২৮টি দূরপাল্লার ট্রেন ঘোষণা করা হয়েছে। বেশ কিছু ট্রেনের গতিপথ কাটছাঁট করা হয়েছে। যে নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল ট্রেনগুলির, তার অনেক আগে পর্যন্ত তার যাত্রাপথ শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ট্রেন ঘুরপথে চালানো হচ্ছে। হাওড়া থেকে দক্ষিণ পূর্ব রেলের যে সমস্ত ট্রেনগুলি ইস্ট কোস্ট রেলের ওপর দিয়ে ভুবনেশ্বর, পুরী কিংবা চেন্নাইয়ের উদ্দেশে যায়, সে ট্রেনগুলিকে ঘুরপথে যাওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ, ঝড়ের গতিবেগ দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে ভারতীয় নৌ সেনাকে। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ এবং এয়ারক্রাফট স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। ইস্টার্ন নোভাল কম্যান্ড এবং নোভাল অফিসার্স ইনচার্জ ওড়িশা থেকে নজরদারি রাখা হচ্ছে। রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে সহযোগিতা করে কাজ করা হচ্ছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর ফ্লাড রিলিফ টিম এবং ড্রাইভিং টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশাখাপত্তনমে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুটি নৌবাহিনীর জাহাজ সমুদ্রে রাখা হয়েছে ডিজাস্টার রিলিফ মেটেরিয়াল এবং হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্ট সহ। সঙ্গে আছে মেডিক্যাল টিম। বিশাখাপত্তানাম এবং চেন্নাই এই দুটি জায়গায় প্রস্তুত আছে নৌ সেনা।
আরও পড়ুন: Unknown Fever: কখনও হার্ট অ্যাটাক, কখনও হাই সুগার, অজানা জ্বরে নাবালিকার মৃত্যুতে বিভ্রান্ত পরিবার!
আরও পড়ুন: WB Jobs: রাজ্য পুলিশের পরীক্ষা দিতে এসে ভাঙল হাঁটু, জখম যুবক!