AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

North Bengal Flood Situation: ফসলে ক্ষতি, ত্রাণ নিয়ে দুর্গতদের মধ্যে ক্ষোভ, উত্তরবঙ্গের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রেল পরিষেবাও

North Bengal Flood Situation: জল কমায় জলঢাকা নদীর সংরক্ষিত এলাকা থেকে উঠে গেল হলুদ সংকেত। বজ্র-বিদ্যুৎ সহ প্রবল বৃষ্টিতে ফের বিকল ফ্লাড কন্ট্রোল রুমের ফোন।

North Bengal Flood Situation: ফসলে ক্ষতি, ত্রাণ নিয়ে দুর্গতদের মধ্যে ক্ষোভ, উত্তরবঙ্গের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রেল পরিষেবাও
| Edited By: | Updated on: Jun 19, 2022 | 2:40 PM
Share

জলপাইগুড়ি: টানা বৃষ্টি চলছে ভুটান পাহাড় ও ডুয়ার্সে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে একাধিক নদী। তার মধ্যেই ধূপগুড়িতে বিপত্তি। গিলাণ্ডি নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে তলিয়ে গিয়েছে এক কিশোর। দুই বন্ধু মিলে নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিল। জলের স্রোতে তলিয়ে যায় ধূপগুড়ির পূর্ব মাগুরমারির বাসিন্দা। এদিকে তিস্তায় জারি ছিল হলুদ সংকেত জারি। জল কমায় জলঢাকা নদীর সংরক্ষিত এলাকা থেকে উঠে গেল হলুদ সংকেত। বজ্র-বিদ্যুৎ সহ প্রবল বৃষ্টিতে ফের বিকল ফ্লাড কন্ট্রোল রুমের ফোন।

জলস্তর কমে যাওয়ায় জলঢাকা নদীর সংরক্ষিত এলাকা মূলত শহর এলাকায় তুলে নেওয়া হয়েছে হলুদ সংকেত। তবে জলঢাকার অসংরক্ষিত এলাকায় জারি রয়েছে হলুদ সংকেত।

অপরদিকে তিস্তা ব্যারেজ থেকে ১২৬৪ কিউসেক জল ছাড়ায় অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সংকেত জারি রয়েছে। আরও জল ছাড়া হবে। তাই দুপুরের পর তিস্তার জলস্তর আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানা গিয়েছে সেচ দফতর সূত্রে।

বিপর্যস্ত জলপাইগুড়ি

শনিবার রাতে জলপাইগুড়িতে মুশলধারায় বৃষ্টি পাত হওয়ায় জলপাইগুড়ি করলা নদীতে জল বেড়েছে। ফলে নদী সংলগ্ন ২৫ নং ওয়ার্ডের পরেশ মিত্র কলোনি ও নীচ মাঠ এলাকায় নদীর জল বাড়ি গুলিতে ঢুকেছে।

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ভোগান্তির শিকার হয়েছেন তাঁরা। এক হাঁটু সমান জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাঁদের।

বিকল কন্ট্রোল রুমের ফোন

গতকাল রাতে মুশলধারায় বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি পাতের জেরে ফ্লাড কন্ট্রোল রুমের ল্যান্ড ফোন আবার বিকল হয়ে যাওয়ায় জল সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে বিপাকে পড়েছেন কন্ট্রোল রুমের কর্মীরা। বিষয়টি তাঁরা বিএসএনএল দফতরে অভিযোগ আকারে জানিয়েছেন।

বিপর্যস্ত চাষিরা

অপরদিকে বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তিস্তা পারের চাষিরা। তাঁদের এই মরশুমের প্রধান ফসল বাদাম ও ভুট্টা ভিজে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের। একই সঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি এবং রোদ না ওঠায় তাঁরা ভেজা ফসল শুকোতে পারছেন না। ফলে বাদাম ও ভুট্টার দানা গুলি প্রায় পুরোটাই পচে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

বৃষ্টির পরিমাণ

আলিপুরদুয়ারে গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৪৩.২০ মিমি। হাসিমারাতে বৃষ্টি হয়েছে ৪০.৮০ মিমি। কালজানি,তোর্সা,রায়ডাক,সংকোশ-সহ শাখা নদীগুলিতে জল কমে গেলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে দুর্ভোগ রয়ে গেছে।

ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ

আলিপুরদুয়ার পুরসভার ৮,৯,১১ ও দ্বীপচর এলাকায় জল এখনও রয়ে গেছে। কয়েক হাজার মানুষ এখনও জলবন্দি হয়ে আছেন। কিছু বাসিন্দা কালজানি বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়ে আছেন। আলিপুরদুয়ার পুর এলাকার নদী সংলগ্ন কয়েক হাজার মানুষ এখন বিপাকে পড়েছেন। শুরু হয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। যা জল তুলে রেখেছিলেন তা শেষ হয়ে গেছে।

দুর্গত এলাকায় পানীয় জলের অভাব রয়েছে। জলবন্দি মানুষজনের কাছে এখনও পুরসভা থেকে ত্রাণ পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। গতকাল ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ২ টি নৌকা ও একটি জলের ট্যাঙ্ক দিয়ে গিয়েছে পৌরসভা। কিন্তু কোন খাবারের ব্যবস্থা নেই বলে বিস্তর অভিযোগ।

জলবন্দি মানুষজনের সাফ কথা, “জল দিয়ে কি পেট ভরবে?” কোন খাবার এখনও দেয়নি পৌরসভা। এদিকে স্থানীয় জলবন্দি এক পরিবার ত্রিপল চাইতে গেলে কাউন্সিলর সাফ জানিয়েছেন ,”বাঁধে থাকলে ত্রিপল দেওয়া হবে না।” ক্ষুব্ধ দুর্গতর বক্তব্য, “ভোটের সনয় এসে বলে ভোট টা দিস, তখন তো মনে থাকে না বাঁধের পাড়ে আছি।”

কলজানি নদীর জল কমলেও জলবন্দি হয়ে রয়েছেন এখনও বহু মানুষ। পৌরসভার কোন কাউন্সিলরের খোঁজ পাওয়া যায়নি। রবিবার দুপুর নাগাদ জলবন্দিদের ত্রাণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে, ভুটান পাহাড়ে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জল পুরোপুরি নামতে সময় লাগবে। কিছু এলাকায় জল সকালে কমলেও ফের জল বাড়ছে। তাই আতঙ্কে কয়েকহাজার জলবন্দি মানুষ।

অসমে বিপর্যয় অবিরাম বর্ষণ ও বন্যা বহুদিন ধরেই বিপাকে অসম । অসমের বিপর্যয় মোকাবেলা দফতর (ASDMA) শনিবার জানিয়েছে, বন্যার কারণে আসামে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে সামগ্রিক মৃত্যুর সংখ্যা ৫৪- তে পৌঁছেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে বন্যা-ত্রাণ কাজ শুরু করেছে।

বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা

এদিকে, বৃষ্টি ও বন্যার জোড়া বিপদে উত্তর-পূর্বে বিপর্যস্ত ট্রেন পরিষেবা। একাধিক ট্রেন বাতিল। দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যাহত। বাতিল হয়েছে আলিপুরদুয়ার-লামডিং ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, গুয়াহাটি – দিল্লি নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেস, নিউদিল্লি-নিউ জলপাইগুড়ি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, দিল্লি-কামাখ্যা ব্রহ্মপুত্র মেল, নিউদিল্লি- গুয়াহাটি এক্সপ্রেস। ট্র্যাকে জল জমে যাওয়ায় একাধিক ট্রেনের যাত্রাপথ বদল করা হয়েছে। নিউদিল্লি-গুয়াহাটি রাজধানী এক্সপ্রেস, অবধ-আসাম এক্সপ্রেস ঘুরপথে রঙ্গিয়া হয়ে চলছে।

বাতিল ট্রেন

আলিপুরদুয়ার-লামডিং ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস গুয়াহাটি-দিল্লি নর্থ ইস্ট এক্সপ্রেস নিউদিল্লি-নিউ জলপাইগুড়ি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস দিল্লি-কামাখ্যা ব্রহ্মপুত্র মেল নিউদিল্লি-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস

ঘুরপথে ট্রেন

নিউদিল্লি-গুয়াহাটি রাজধানী এক্সপ্রেস অবধ-আসাম এক্সপ্রেস