Jalpaiguri: খরস্রোতে নদীতে পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে নিজস্বী মহিলার! পা হড়কাতেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন শিক্ষক
Jalpaiguri: সেই খরস্রোতা নদীতে ঝাঁপিয়ে মহিলাকে বাঁচিয়ে এখন হিরো ধূপগুড়ির শিক্ষক মিলন মিঞ্জ।
জলপাইগুড়ি: খরস্রোতা নদীর উপর পাথরে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে বিপত্তি। পা হড়কে নদীতে পড়ে যান মহিলা। আর সেই খরস্রোতা নদীতে ঝাঁপিয়ে মহিলাকে বাঁচিয়ে এখন ‘হিরো’ ধূপগুড়ির শিক্ষক মিলন মিঞ্জ।
জলপাইগুড়ি জেলা লাগোয়া আপার জলঢাকা নদীতে ভেসে যাচ্ছিলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা মহিলা পপি নন্দী। জলে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন তিনি। সে সময়ে নদীর ধারেই প্রাকৃতিক শোভা দেখছিলেন শিক্ষক। দেখতে পেয়েই ঝাঁপিয়ে পড়লেন এক শিক্ষক, রক্ষা করলেন সেই মহিলাকে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার নাগরাকা ব্লকের শেষ প্রান্তে অবস্থিত আপার জলঢাকা এলাকায়। নদীর জলস্রোতে প্রায় কুড়ি মিটার ভেসে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ধূপগুড়ির এক শিক্ষকের তৎপরতায় প্রাণ রক্ষা পেলেন তিনি।
সেই মহিলাকে বাঁচিয়ে এখন এলাকায় হিরো নাথুয়া বানিয়াপাড়া চৌরাস্তা হাই স্কুলের শিক্ষক মিলন মিঞ্জ। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে। নাথুয়া বানিয়াপাড়া চৌরাস্তা বিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রায় ৮০ জন ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে এক শিক্ষামূলক ভ্রমণের যান,জলপাইগুড়ি জেলার শেষ প্রান্ত আপার জলঢাকা এলাকায়। সেখানেই পাশে সিনির উদ্যোগে ঘুরতে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির একটি দল। সেই দলে জলপাইগুড়ি আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার সহ বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা ছিলেন।
সেই দলেরই এক মহিলা পপি নন্দী আচমকা আপার জলঢাকা নদীতে পড়ে যান। জলে ভেসে যেতে থাকেন। নদীর দু’ধারে প্রচুর মানুষ দাঁড়িয়ে দেখছিলেন আর চিৎকার করছিলেন তাকে বাঁচাবার জন্য কিন্তু কেউ সাঁতার না জানায় সাহস করে আর সেই খরস্রোতা নদীতে নামতে পারছিলেন না। সেখানেই ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণে যাওয়া নাথুয়া বানিয়াপাড়া চৌরাস্তা হাই স্কুলের দলে থাকা এক শিক্ষক কোন কিছু না ভেবেই সেই মহিলাকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেন জলে। এরপর টেনে সেই মহিলাকে জাপটে ধরে বাঁচিয়ে নদীর নিরাপদ জায়গায় নিয়ে আসেন।
উল্লেখ্য, সেই নদীতে একই ভাবে আপার জলঢাকা এলাকায় নদীতে পা পিছলে পড়ে জলস্রোতে ভেসে গিয়েছিলেন ধূপগুড়ির এক যুবক, পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছিলো এক দিন পরে। তবে বানিয়াপাড়া হাই স্কুলের শিক্ষকের জন্য এদিন আর অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝাঁপিয়ে প্রাণে বাঁচান সেই মহিলার।
সিনি এর উত্তরবঙ্গ ইউনিট প্রটেকশন অফিসার সোনু ছেত্রী বলেন, “আমরা সিনি এর পক্ষ থেকে একটা পিকনিকের আয়োজন করেছিলাম, সেখানে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও দার্জিলিং জেলার সদস্যরা উপস্তিত ছিলেন। সেই সময় পপি নন্দী নামে সিনির এক সদস্যা পাথরের উপর দাঁড়িয়ে ফটো তুলতে গিয়ে পা পিছলে নদীতে পরে যান, তারপর তিনি ভেসে যেতে থাকেন। ঠিক তখনই পাশের থেকে এক ব্যক্তি নদী ঝাঁপ দিয়ে ত্রাতার মতো করে পপিকে উদ্ধার করেন। পরে জানতে পারি উদ্ধারকারী ব্যক্তি একজন শিক্ষক। আমরা ওঁকে ধন্যবাদ জানাই। বর্তমানে পপি নন্দী একটু মানসিক চাপে রয়েছেন, ডাক্তার বলেছেন দ্রুত ওঁ সুস্থ হবেন।”
মিলন মিঞ্জ বলেন, “আমরা ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটা শিক্ষামূলক ভ্রমণে গেছিলাম, ঠিক আমাদের থেকে একটু দূরে সিনি সংগঠনের একটি দল ছিল। যাঁরা আপার জলঢাকা বেড়াতে এসেছিলেন। তাদের গ্রুপের এক মহিলা ছবি তুলতে গিয়ে নদীতে পড়ে যান। প্রায় ২০-৩০ মিটার ভেসে গিয়েছিলেন। আমি দেখি এক মহিলা নদীর জলে ভেসে যাচ্ছিলেন। আমি কোনও কিছু না ভেবে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ি এবং কোনওমতে ওঁকে উদ্ধার করি। পরে জানতে পারি, ওঁ সিনি উত্তরবঙ্গ ইউনিটের সদস্যা। আমি মহিলা কে বাজাতে পেরে খুব আনন্দিত।”