AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মদন জামা খুলে ফেললেন, ‘শুভেন্দু-ভাইরাস’ বিদায় হতেই ডিজে-নাচ

শুক্রবার সন্ধ্যাতেই হুডখোলা জিপে তাসা আলোকসজ্জা নিয়ে শোভাযাত্রা বার করেন মদন মিত্র।

মদন জামা খুলে ফেললেন, 'শুভেন্দু-ভাইরাস' বিদায় হতেই ডিজে-নাচ
কামারহাটিতে শোভাযাত্রা মদন মিত্রের
| Edited By: | Updated on: Dec 19, 2020 | 9:07 PM
Share

প্রীতম দে:  শুভেন্দু তৃণমূল বিচ্ছেদ ঘটে যাওয়ায় রাজ্যের শাসকদলের একটা বড় অংশ যখন প্রমাদ গুনছেন, তখনই চিরাচরিত ব্যতিক্রমী ভূমিকায় পথে নামলেন ‘রঙিন’ মদন মিত্র। শুভেন্দু অধিকারীর মতো ‘দক্ষ সংগঠক’-নেতা তৃণমূল ছাড়ায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে দলে বেশ খানিকটা ক্ষতি হবে, এমন আশঙ্কা যখন মনে দানা বেঁধেছে, ঠিক তখনই ‘ভাইরাস বিদায় হয়েছে দল থেকে’ একথা বলে রাজপথে ডিজে-শোভাযাত্রা করলেন প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র (Madan Mitra)।

যখন শুভেন্দুকে কেউ বলছেন ‘বিশ্বাসঘাতক’, কেউ বিঁধছেন ‘পদের লোভে দল ছেড়েছেন’ বলে, ঠিক তখনই দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধাকে ‘অসুর’ বলে অভিহিত করে মদন বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূলে এতে কোনও ক্ষতি তো হলই না বরং লাভ হল। ‘শুভেন্দু-ভাইরাস’ তৃণমূলের শরীর থেকে বেরিয়ে যেতেই আত্নহারা মদন ভোজপুরি গানের সঙ্গে কোমর দোলাতে দোলাতে, হাততালি দিতে দিতে নিজের জামাই খুলে ফেললেন!

শুক্রবার সন্ধ্যায় কামারহাটি দেখলে বোঝা দায় এ তৃণমূলের জন্য বিষাদের দিন না উচ্ছ্বাসের! শুভেন্দু-বিয়োগে যখন তলে তলে তৃণমূলের একটা বড় অংশ আশঙ্কায় প্রহর গুনছে, তখনই উচ্ছ্বাসের রঙিন কেতন ওড়ালেন মদন মিত্র। হুডখোলা জিপে তাসা-আলোকসজ্জা নিয়ে  শোভাযাত্রা করলেন মদন। ডিজে, নীলাভ আলো আর ভোজপুরি গানের সঙ্গে তখন গগণভেদী একটাই স্লোগান ‘মমতাই ক্ষমতা’। সন্ধ্যার কামারহাটির রাস্তা দেখে মনে হবে এ যেন তৃণমূল-জনতার জলসাঘর। যার মূল চালিকাশক্তি স্বয়ং মদন মিত্র। কামারহাটিতে মদনের নাচ

চোখে মুখে তাঁর অদ্ভুত প্রাণশক্তি। প্রশ্ন করতেই বললেন, এটা ‘যজ্ঞের আহুতি দান। ভাইরাস গেছে, ভালো হয়েছে।’ কথা শেষ না করতেই তারস্বরে স্লোগান তুললেন, “বিজেপি থাকবে কতক্ষণ, বিজেপি যাবে বিসর্জন।” আর এর ঠিক পরেই শুভেন্দু বিয়োগ উদযাপনের উত্তাপ চরমে তুলতে খুলে ফেললেন নিজের গায়ের জামা। তখন লর্ডস না কামারহাটি বোঝা দায়! কারণ মাথার ওপর দাদাগিগির কায়দায় ঘুরপাক খাচ্ছে জামা। আর এসব দেখে এলাকা জুড়ে যেমন উন্মাদনা, তেমনই কর্মী সমর্থকদের নাচ।

তৃণমূল কংগ্রেসে তাঁরা বহুদিনের সহকর্মী। জেলা এবং কলকাতা মিলিয়ে যে নির্দিষ্ট কয়েকজন নেতার ওপর ভরসা রেখে ৩৪ বছরের বাম শাসনের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁদের অন্যতম শুভেন্দু অধিকারী ও মদন মিত্র। কিন্তু কয়েক মাস ধরে ক্রমান্বয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে  নাম না করে আক্রমণ ও বিজেপিতে যোগদান যে মদন মিত্র ও শুভেন্দুর মধ্যে প্রাচীর তুলে দিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন: ৭০-৮০ হাজার বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন: অনুব্রত

বলে রাখা যাক, টিভি নাইন বাংলা ডিজিট্যালে ২০২১-এর নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে তৃণমূলের একাদশ বেছে নিয়েছিলেন মদন মিত্র। সেই দলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের ভূমিকায় ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সুতরাং, শুভেন্দুর প্রতি মদনের রাজনৈতিক আস্থা যে ছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু শুভেন্দু তৃণমূলে যোগদানের পর ‘দিদির সৈনিক’ মদন এতটুকুও রেয়াত করতে চান না শুভেন্দুকে। বরং শুভেন্দুর বিজেপি যোগদানই বর্তমান তৃণমূল কর্মীদের মনে যদি কিঞ্চিত্ সংশয় থেকে যায়, তার নিরসণ করতে চোখে পড়ার মতো ভূমিকা নিলেন শুভেন্দুর ছেড়ে যাওয়া পরিবহণ দফতরের বিশেষ কমিটির শীর্ষ পদ পাওয়া মদন মিত্র।

মদন মিত্র আজ যে আত্মবিশ্বাস দেখালেন তা আগামীতে দলত্যাগীদের চাপে ন্যূব্জ তৃণমূলে সামগ্রীক আত্মবিশ্বাসের ছবি হয়ে উঠবে কিনা, তা বলবে সময়।