Murshidabad Drug Smuggler Arrested: পরনে ছাপার শাড়ি, সে-অর্থে কইয়ে বলিয়ে নন, গ্রামের বয়স্ক মহিলা নাকি এমনও কাজ করতে পারেন! ভাবাচ্ছে পুলিশকে
Murshidabad Drug Smuggler Arrested: প্রাথমিকভাবে জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, বেলডাঙা থেকে ওই মহিলা, বাসে-ট্রেকারে করে ভগবানগোলা আসেন। প্লাস্টিকের ব্যাগে পুরে অত্যন্ত সাধারণ ভাবে মাদক নিয়ে আসছিলেন তিনি।
মুর্শিদাবাদ: মাথায় একটা ওড়না, পরনে ছাপার শাড়ি, হাতে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ। নিতান্ত দেহাতি এক মহিলা। চেহারায় সেই ছাপ স্পষ্ট। খুব একটা যে কইয়ে-বলিয়ে তিনি নন, সেটা তাঁর চেহারায় স্পষ্ট। বাস থেকে সদ্য নেমে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিলেন। আশেপাশের কেউ তাঁকে তখনও পর্যন্ত সেভাবে খেয়াল করেননি। প্রকট রোদে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলার কাছে এগিয়ে আসেন উর্দিধারী এক ব্যক্তি। দূর থেকে তখন তাঁকে কয়েকজন লক্ষ্য করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, পুলিশ বেশ কয়েকটি প্রশ্ন করেন বছর পঁয়তাল্লিশের ওই মহিলাকে। তারপরই হাতের প্লাস্টিকটা নিয়ে দেখেন। তখনই পর্দাফাঁস। হাতে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশ মহিলাকে তোলেন গাড়িতে। পুলিশেরই এক কর্মীকে প্রশ্ন করাতে জানা যায় আসল কারণ। প্রত্যক্ষদর্শীরা তখন পর্যন্ত আকস্মিকতার রেশ কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। এই মহিলাই মাদক পাচারকারী! অত্যন্ত সাদামাটাভাবে প্লাস্টিকের ব্যাগে লক্ষাধিক টাকার মাদক পাচার করছিলেন তিনি। মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। ধৃতের নাম খুরসীমা বেওয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি বেলডাঙাতে। ধৃত মহিলাকে বহরমপুর এনডিপিএস আদালতে পাঠানো হয়।
প্রাথমিকভাবে জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, বেলডাঙা থেকে ওই মহিলা, বাসে-ট্রেকারে করে ভগবানগোলা আসেন। প্লাস্টিকের ব্যাগে পুরে অত্যন্ত সাধারণ ভাবে মাদক নিয়ে আসছিলেন তিনি। যাতে কারোর কোনও সন্দেহ না হয়। কিন্তু পুলিশের কাছে সে খবর আগে থেকেই ছিল। তাই আগে থেকে ভগবানগোলা বাসস্ট্যান্ডের কাছে ওঁত পেতে ছিল পুলিশ। মহিলা বাস থেকে নামার পর, তাঁর ওপর নজর রাখছিলেন পুলিশ কর্মীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকে গিয়ে জেরা করতে থাকেন। কিছুটা ঘাবড়ে যান ওই মহিলা। পরে প্লাস্টিক থেকে মাদক উদ্ধার হয়।
পুলিশ জানাচ্ছে, এর পিছনে একটা বড় চক্র কাজ করছে। গ্রামের সাধারণ বাড়ির বউদেরকে টার্গেট করছে পাচারকারির মাথারা। কারণ মেয়েদের ওপর সেভাবে পুলিশের সন্দেহ হবে না। তাঁদের হাত দিয়েই অত্যন্ত সাধারণভাবে পাচার হয়ে যাচ্ছে মাদক। এক্ষেত্রে মাদক কোথায় পাচার করা হচ্ছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এই চক্রের মাথারও খোঁজ শুরু হয়েছে। তবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই মহিলারা এই চেনের একেবারে নীচু স্তরে কাজ করেন, তাঁদের কাছে তাঁদের ‘বস’দের সম্পর্কে কোনও সম্যক ধারণা থাকে না বললেই চলে। এমনকি তাঁরা তাদের নামও জানেন না। কেবল কিছু টাকার বিনিময়ে তাঁরা এই কাজ করেন। চেনের মাথারই খোঁজ করা তদন্তকারীদের একমাত্র চ্যালেঞ্জ। তবে মহিলার থেকে বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।