Adhir Chaudhury on Humayun Kabir’s Controversial Comment: ‘কেউ সামনে বলেন, কেউ ফোনে হুমকি দেন…হুমায়ুন ব্যতিক্রম নন’

Murshidabad: যদিও তৃণমূল আমলে পুলিশকে হুমকি, হুঁশিয়ারি দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। বেশ কয়েক বচর আগে পুলিশের উপর বোমা মারার নিদান দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল।

Adhir Chaudhury on Humayun Kabir's Controversial Comment: 'কেউ সামনে বলেন, কেউ ফোনে হুমকি দেন...হুমায়ুন ব্যতিক্রম নন'
অধীরের কটাক্ষ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 26, 2021 | 7:26 PM

মুর্শিদাবাদ: সরাসরি পুলিশকে হুমকি দিয়ে ফের বিতর্কে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর। শাসক দলের এক দলীয় অনুষ্ঠানে এসে বিতর্কিত মন্তব্য করেন হুমায়ুন। ওসির টেবিলের ওপর পা তুলে দাঁড়ানোর হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আর এই মন্তব্যকে  তীব্র কটাক্ষ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Chaudhury)।

ঘটনায় অধীরের মন্তব্য, “হুমায়ুন কোনও ব্যতিক্রম নন। কেউ সামনে বলেন, কেউ ফোন করে হুমকি দেন।  পুলিশের ডিজি থেকে শুরু করে  হোক বা ট্রাফিক হোমগার্ড, সকলকেই তৃণমূলের  হুমকিতে চলতে হয়। পুলিশ, গুন্ডা, তোলাবাজের লুঠের টাকায় একটা পার্টি চলছে। এর চেয়ে বেশি আর কী হবে! এটাই হওয়ার ছিল, হয়েছে।”

তৃণমূলের দলীয় অনুষ্ঠানে এসে হুমায়ুন বলেন, “টেবিলের উপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে যাবো ওই থানার কর্তব্যরত পুলিশের। তখন বুঝবে হুমায়ুন কবীর কী জিনিস।” এছাড়াও ওসিকে বদলির হুমকিও দেন তিনি।

হুমায়ুনের দাবি, দলের গোষ্ঠীকোন্দলের মধ্যে বিরোধী পক্ষের সঙ্গে রয়েছে পুলিশ। তাই তাঁর এহেন উবাচ। ভরতপুরের বিধায়কের কথায়, “পুলিশ যদি পায়ে পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করতে আসে, তাহলে আমাকে তার জবাব দিতে হবে।” হুমায়ুনের আরও হুঁশিয়ারি, “যদি আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয় তার জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন”।

তৃণমূল বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, “আজ ওসিকে বলে যাব, আমি বিধায়ক। আমি এখানে শেষ কথা বলব। যতক্ষণ না রাজ্য নেতৃত্ব যে কোনও ক্ষেত্রে আমাকে আলাদা করে ইনস্ট্রাকশন (নির্দেশ) না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যে সমস্ত লোক দলবিরোধী কাজ করেছে, যারা দলের প্রার্থীকে হারানোর চেষ্টা করতে যায়, তার জন্য কেন আমি আপস করতে যাব! তার জন্য ওসিকে বলেছি তোমাকে দালালি বন্ধ করতে বলছি…”

এর পর তাঁর হুঁশিয়ারি “যদি ওসি থাকার ইচ্ছা থাকে ভরতপুরে… তা না হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তোমাকে বাধ্য করাব তল্পি গোটাতে”। এখানেই না থেমে প্রাক্তন মন্ত্রীর সংযুক্তি, “থানার সামনে বসব। টেবিলের উপর পা তুলে দাঁড়াব, বুঝবে হুমায়ুন কবির কী জিনিস। অটোমেটিক তুমি এখান থেকে ছেড়ে চলে যাও। বলবা, আমি বেশ ভাটপাড়ায় ছিলাম, সেখানেই চলে যাই। তো সেটা যেন বাধ্য করাতে না করে”।

উল্লেখ্য, মাস কয়েক আগে প্রকাশ্য জনসভা থেকে দলেরই আরেক বিধায়কের বাপবাপান্ত করে, মারধরের হুমকি দিয়ে খবরে এসেছিলেন হুমায়ুন! তাঁর এহেন কাণ্ডে নড়েচড়ে বসে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। ভরতপুরের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবিরকে শো-কজও করা হয়। কিন্তু হুমায়ুন আছে হুমায়ুনেই। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তাঁর এই কুমন্তব্যে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

যদিও তৃণমূল আমলে পুলিশকে হুমকি, হুঁশিয়ারি দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। বেশ কয়েক বচর আগে পুলিশের উপর বোমা মারার নিদান দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল। অতি সম্প্রতি রাজ্যের জলসেচ দফতরের মন্ত্রী-জায়া তথা তৃণমূল নেত্রী সুমনা মহাপাত্রকে বলতে শোনা গিয়েছে, “যাদের স্ট্যাম্প-প্যাড আছে তাদের কথা মতো চলতে হবে। না হলে প্রতিবাদ হবেই”।

আবার পুলিশকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আউশগ্রামের তৃণমূল নেতা অরূপ মিদ্দার বিরুদ্ধে। একুশের ভোটের ফলের পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে ওই তৃণমূল নেতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘তিনদিন পর আমার সরকার আসবে, তখন আপনাকে কাজ করতে হবে। তখন দেখব আপনাকে। এটা আমি চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি। আপনি কত বড় অফিসার হয়েছেন আর আমি কত বড় নেতা দেখব।’ শীতলকুচির ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘শীতলকুচি করার ইচ্ছা আছে কি! খুব সাবধানে কথাবার্তা বলবেন। ধমকাবেন না,চমকাবেন না।’ সেখানে নয়া সংযুক্তি এবার হুমায়ুন আহমেদ।

উল্লেখ্য, তৃণমূল-বিজেপি-কংগ্রেসের টিকিটে বিধানসভা, লোকসভা, জেলা পরিষদে লড়েও জিততে পারেননি। মাঝে এগারো সালের ভোটে অবশ্য জিতে ছিলেন। তার পর ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি-র ইমন কল্যাণ মুখোপাধ্যায়কে ৪৩ হাজার ভোটে পরাজিত করে জয়ের হাসি হেসেছেন তিনি। বার বার রাজনৈতিক রং পাল্টানো হুমায়ুন ভোটের কয়েক মাস আগে তৃণমূলে যোগদান করেই টিকিট পাকা করেছিলেন। তবে তাঁর সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের এক পক্ষের তীব্র ঝামেলা বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। দলীয় সেই ঝামেলায় পুলিশকে হুঁশিয়ারি দেন হুমায়ুন।

আরও পড়ুন: Bengal BJP: ‘মন থেকে ভালবাসি… দলে ছিলাম, আছি, থাকব’, বিজেপিতে ‘লেফট’-এর তালিকায় নেই শীলভদ্র