মুর্শিদাবাদ: ১৯৯৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত টানা ২৫ বছর বহরমপুরের সাংসদ রয়েছে অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এবারেও জয়ের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী তিনি। ভোটের সকালেও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, আমি জিতবই। সেই অধীরকে চাপে রাখতে এবার বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট তারকা ইউসুফ পাঠানকে বহরমপুর থেকে দাঁড় করিয়েছে তৃণমূল। যদিও অধীরের দাবি, বেকার দাঁড় করিয়েছে ইউসুফকে। কাজের কাজ কিছুই হবে না। এদিকে এরইমধ্যে আবার বিজেপি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁর দাবি, তৃণমূলের এজেন্টদের বুথে বসতে দিচ্ছে না ওরা। ইউসুফ পাঠান মুসলিম বলেই এমনটা করা হচ্ছে।
হুমায়ুনের দাবি, “শক্তিপুর এলাকায় পুরো ভোটটা মেরুকরণ হয়ে গিয়েছে। কারণ যাঁরা হিন্দু তাঁরা বিজেপির জন্য ভোট দিচ্ছে। তাঁরা এতদিন অধীর চৌধুরীর শেল্টারে ছিল। ওখান থেকে সব সুবিধা নিত। লোকসভা ভোটে অধীরকে ভোট দিত। বাকি সময় ওরা বিজেপি করতো, সিপিএম করতো। তৃণমূলও কিছু লোকজন করতো। কিন্তু সেটা খুবই কম।”
প্রসঙ্গত, ইউসুফকে বহরমপুরে দল দাঁড় করাতেই ফুঁসে উঠেছিলেন এই হুমায়ুন। তিনি যে মানতে পারছেন না তা ভালই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। শেষে তাঁর গোঁসা ভাঙাতে মাঠে নামতে হয়েছিল খোদ তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই হুমায়ুনই এখন বলছেন, “ইউসুফ পাঠান যেহেতু মুসলিম তাই বলছে তৃণমূলের কোনও এজেন্ট বসতে দেবে না। কিন্তু, ইউসুফ পাঠানের নেত্রী যে হিন্দু, তিনি যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ইউসুফের নেতা যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা ওরা ভুলে গিয়েছে। ১৯৫২ সাল থেকে বহরমপুর লোকসভায় হিন্দু সাংসদ থেকেছে।” এরপরই কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে একযোগে সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, “আর ৬৩ শতাংশ মুসলিম ভোটার নিয়ে মুসলিমদের কেউ সাংসদ হতে পারবে না? এটা ভারতের কোনও সংবিধানে আমরা বাস করছি? হিন্দু বুথগুলিতে ইফসুফ পাঠান মুসলিম হওয়াতে আমাদের এজেন্টকে বসতে দেবে না বলছে। না দিক! আমাদের যথেষ্ট শক্তি আছে। ভোট আছে। তাঁরা যদি হিন্দুত্ব করতে পারে তাহলে আমরা মুসলিমত্ব করব। ইউসুফ পাঠানকে ৯০ শতাংশ মুসলিম ভোট দিয়ে আড়াই লক্ষ ভোটে বিজেপিকে, কংগ্রেসকে হারাব।”
এত কিছুর পরেও কেন অভিযোগ জানাচ্ছেন না তৃণমূলের এজেন্টরা। এ প্রসঙ্গ হুমায়ুনের যুক্তি, “অধীর বা নির্মলের বিরুদ্ধে কথা বললে বলছে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। তাই আমাদের এজেন্টরা ভয়ে রয়েছে। ওদের বলেছি ওরা যা করছে করতে দাও আমাদের কাজ আমরা করব।”