Laxmir Bhandar: চেয়েছিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার! তৃণমূল নেতার কীর্তিতে অ্যাকাউন্টে যা ঢুকল…, এখন থানা-পুলিশ সামলাচ্ছেন শাশুড়ি-বৌমা

laxmir bhandar: তবে তাল কাটল কয়েকদিন আগে। হঠার সাত-সকালে শেফালির পরিবারে হাজি শান্তিপুর থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় শেফালি দে ও তাঁর শাশুড়ি পদ্ম দে-কে। সেখানে গিয়ে চক্ষু-চড়কগাছ হওয়ার জোগাড় তাঁদের। পুলিশের নির্দেশে পরে ব্যাঙ্কের স্টেটমেন্ট চেক করে দেখেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নয় ঢুকেছে বিধবা ভাতার টাকা। এরপর থানার বড়বাবু পাঠায় বিডিওর কাছে।

Laxmir Bhandar: চেয়েছিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার! তৃণমূল নেতার কীর্তিতে অ্যাকাউন্টে যা ঢুকল..., এখন থানা-পুলিশ সামলাচ্ছেন শাশুড়ি-বৌমা
শাশুড়ি ও বৌমার যা অবস্থাImage Credit source: Tv9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 08, 2025 | 1:28 PM

নদিয়া: অভাবের সংসার। স্বামী পেশায় দিন-মজুর। তাই স্ত্রী চেয়েছিলেন সংসারের ‘লক্ষ্মী’ হতে। আবেদন করেছিলেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের। কিন্তু তৃণমূল নেতার চক্করে পড়ে এখন অ্যাকাউন্টে ঢুকছে ‘বিধবা ভাতা’। ভাবুন একবার! স্বামী জীবিত, অথচ মহিলার অ্যাকাউন্টে ঢুকছে ‘বিধাবা ভাতা’। অথচ তা টেরটুকু পাননি গরিব পরিবার। এখন ফ্যাঁসাদে পড়েছেন তাঁরা। বিষয়টি জানাজানি হতেই এখন শুরু হয়েছে পুলিশি ঝামেলা। তারপর আবার বিডিও আটকে দিয়েছেন আধার কার্ড ও ব্যাঙ্কের যাবতীয় নথি। উপরন্তু হুঁশিয়ারি টাকা ফেরত দিতে হবে। এরপর সোমবার এই মর্মে দায়ের হয়েছে মামলা। তবে প্রশ্ন উঠছে, স্বামীর মৃত্যুর শংসাপত্র, রেশন কার্ড, আধার কার্ড ছাড়াই কীভাবে এই টাকা এতদিন ধরে অ্যাকাউন্টে গেল? কেউ কিছু টের পেলেন না? এ দিকে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ পলাতক সেই তৃণমূল নেতা।

নদীয়ার শান্তিপুর শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বসুখ পল্লীর ঘটনা। সেখানকার বাসিন্দা পরেশ দে। তাঁর একটি ছোট দোকান রয়েছে। স্ত্রী শেফালি দে দু’বছর আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে মহিলার দাবি তা মঞ্জুর হয়নি। এরপরই ‘এন্ট্রি’ নেন তৃণমূলের তৎকালীন বুথ সভাপতি উত্তম হালদার। শেফালিদেবীর দাবি, সেই সময় উত্তমবাবু তাঁর কাছ থেকে হাজার টাকা নেন। এবং জানান যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার মঞ্জুর হয়েছে। ব্যাঙ্কে গিয়ে যেন দেখে নেন। এরপর স্থানীয় স্টেট ব্যাংকের কিয়ক্সে গিয়ে পরবার জানতে পারে, অ্যাকাউন্ট করা হলেও পাসবুক দেওয়া হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এক হাজার টাকা ঢুকেছে অ্যাকাউন্টে।

এরপর সেই বুথ সভাপতি তৃণমূল নেতা আরও, ২০০০ টাকা নেন বলে অভিযোগ। এভাবেই মাসের পর মাস টাকা জমা দিলে ব্যাঙ্কা একটা স্লিপ দেয়।অন্যদিকে টাকা তুললেও মেলে স্লিপ। কিন্তু পাসবুক সাপ্লাই নেই বলে জানানো হয়।

তবে তাল কাটল কয়েকদিন আগে। হঠার সাত-সকালে শেফালির পরিবারে হাজি শান্তিপুর থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় শেফালি দে ও তাঁর শাশুড়ি পদ্ম দে-কে। সেখানে গিয়ে চক্ষু-চড়কগাছ হওয়ার জোগাড় তাঁদের। পুলিশের নির্দেশে পরে ব্যাঙ্কের স্টেটমেন্ট চেক করে দেখেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নয় ঢুকেছে বিধবা ভাতার টাকা। এরপর থানার বড়বাবু পাঠায় বিডিওর কাছে। অভিযোগ, তাঁদের যাবতীয় নথি আটকে দাবি করেন ২৪ মাসের ২৪ হাজার টাকা ফেরতের। বর্তমানে দুশ্চিন্তায় পরিবার।

পদ্ম দে জানান, এতদিন জানতাম না। তাঁসন্তান জীবিত। সরকারি ভাতা হিসেবে বৌমার প্রাপ্য অর্থ দিয়ে চলেছে সংসার। কিন্তু যে তৃণমূল নেতা সেই টাকা নিয়ে এত বড় সর্বনাশ করে দিল, তাকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছে না। শান্তিপুর থানায় নিশ্চয়ই লিখিত অভিযোগ জানাবো।

শেফালি বলেন, “দুবছর ধরেই টাকা পাচ্ছি। মাসে-মাসে তুলেছি। কখনও সাত-আট মাস ছেড়ে তুলেছি। আমি লক্ষ্মী ভাণ্ডারের টাকা জানতাম। উত্তম সর্দার বলেছিলেন আমি করিয়ে দেব। আমায় ১০০০ টাকা দাও। বই হওয়ার পর ২০০০ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিল। সে কোথায় আমি এখন খোঁজ পাচ্ছি না।” তৃণমূল নেতা উৎপল সাহা বলেন, “দু বছরের ঘটনা। সেই রকমই ওইখানে চক্র গজিয়েছে। আর দল এখন সবাই করে। ও নেতা নয়। আমি যতদূর জানি ও ইদানিং পার্টি করে না। কেউ যদি অন্যায় করে থাকেন তাহলে শাস্তি হোক।”