Dumdum: ‘দিদিকে বলো’তে ফোন, তাতেই বৃদ্ধ দম্পতিকে মারধরের অভিযোগ
Didike Bolo: অভিযুক্ত কাউন্সিলরের স্বামী সুকান্ত ঘোষ বলেন, "দিদিকে বলোতে যে কেউ অভিযোগ জানাতে পারেন। তার জন্য তো কেউ কাউকে কিছু বলেনি। আমি যতটা জানি ওখানে একটা ড্রেন আছে। খুব খারাপ অবস্থা। যতবার পুরসভা থেকে লোক গিয়েছে, অলোক মজুমদার খারাপ কথা বলতেন।"
উত্তর ২৪ পরগনা: এক বৃদ্ধ দম্পতিকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল এলাকায়। তার প্রতিবাদ করে ‘দিদিকে বলো’তে জানান। এরপরই প্রায় ১০০ জন মহিলা-পুরুষ নিয়ে কাউন্সিলরের স্বামী চড়াও হন বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় অলোক মজুমদার নামে ওই বৃদ্ধ ও তাঁর স্ত্রীকে। যদিও কাউন্সিলরের স্বামী এই অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন। পাল্টা তাঁর দাবি, বাড়ির কাছে ড্রেন পরিষ্কার করতে দেন না ওই বৃদ্ধ। ডেঙ্গির কারণে তা পরিষ্কার করে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ তিনি। উত্তর দমদমের নিমতার উত্তর প্রতাপগড়ের এই ঘটনা।
উত্তর দমদম পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড। সূত্রের খবর, সেখানকার উত্তর প্রতাপগড় এলাকায় বেশ কিছু পরিবার বিরোধী দলগুলির সমর্থক। সেই তালিকায় মজুমদার পরিবারও আছে। অভিযোগ, তাঁরা অন্য দলকে ভোট দিয়েছেন বলে তাঁদের পাড়ায় পুরসভা থেকে কোনও কাজ করা হয় না। ভাঙা রাস্তা, রাস্তায় উপচে পড়ে জল। সেখানে ডেঙ্গির লার্ভা জন্মাচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
তৃণমূলের কাউন্সির লিজা ঘোষ কোনও কাজই করেন না এলাকায়। এরপরই পাড়ার বেশ কিছু পরিবার দিদিকে বলোতে ফোন করে অভিযোগ জানান। সেই মতো ইঞ্জিনিয়র আসেন এলাকা পর্যবেক্ষণে। অভিযোগকারীর দাবি, তাতেই রেগে যান কাউন্সিলর। অভিযোগ শুনে লিখিত আকারে ইঞ্জিনিয়ররা উত্তর দমদম পুরসভায় রিপোর্টও জমা দেন। তারপরই স্থানীয় কাউন্সিলর ও তাঁর স্বামী দলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মজুমদার বাড়িতে হামলা চালান, বৃদ্ধ দম্পতিকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগকারী অলোক মজুমদারের বক্তব্য, “রাস্তা করে না দীর্ঘদিন ধরে। এখানে বিজেপি, সিপিএমের ভোটার আছে বলে কাউন্সিলর ও তাঁর স্বামী সুকান্ত ঘোষ কাজ করেন না ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। আমরা দিদিকে বলোতে জানিয়েছিলাম। ওখান থেকে লোকও আসে। ছবি তোলে, কতটা রাস্তা হবে দেখে যায়। বলে পুরসভায় জানাবে। এরপর কাউন্সিলর এসে ধমকি দিচ্ছে তাঁকে কেন বলিনি। এরপর একদল মহিলা, লোক হকি স্টিক, রড নিয়ে এসে আমাদের উপর চড়াও হয়। আমাদের স্ত্রীকে মারধর করে। আমাকেও মারে। আমরা খুব ভয়ে আছি।”
উত্তর দমদম পুরসভার পুরপ্রধান বিধান বিশ্বাস বলেন, কেউ দোষ করলে শাস্তি পাবেন। আইন আইনের পথেই চলবে। অন্যদিকে অভিযুক্ত কাউন্সিলরের স্বামী সুকান্ত ঘোষ বলেন, “দিদিকে বলোতে যে কেউ অভিযোগ জানাতে পারেন। তার জন্য তো কেউ কাউকে কিছু বলেনি। আমি যতটা জানি ওখানে একটা ড্রেন আছে। খুব খারাপ অবস্থা। যতবার পুরসভা থেকে লোক গিয়েছে, অলোক মজুমদার খারাপ কথা বলতেন। ড্রেন পরিষ্কার করতে দেবেন না। পুরকর্মীরা ড্রেন পরিষ্কার করে ব্লিচিং ছড়িয়ে দেয়। ওনার তাতেই রাগ।”
তবে এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কিশোর করের দাবি, “বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ায় পাড়ায় সমস্ত কাজ বন্ধ। রাস্তায় জল জমে আছে। নিকাশির কোনও চেষ্টা পর্যন্ত নেই কাউন্সিলরের। আসলে ওরা চায় না কোনও বিরোধী থাকুক। এত আসন পাওয়ার পরও কাজের ইচ্ছা নেই। ভোট কম পেয়েছে যেখানে, সেখানে কাজ করবে না। শুধু তাই নয়, দিদিকে বলোতে অভিযোগ করেছে বলে বাড়িতে গিয়ে হামলা করা হয়েছে। কতটা ঔদ্ধত্য থাকলে এরকম হতে পারে, উত্তর দমদমের এই ঘটনা তা প্রমাণ করল।”