Bangladesh: ‘সিঁদুর মুছে বাড়ি থেকে বেরোই, তারপর…’, এয়ো স্ত্রীর সম্ভ্রমের সঙ্গে চরম সমঝোতার পর বেঁচে থাকা…বাংলাদেশে হিন্দু মহিলাদের অবস্থার হাড়হিম তথ্য
Bangladesh: পরিচয় লুকিয়েই এখনও পর্যন্ত অস্বিত্বরক্ষার লড়াই চালাচ্ছেন তাঁরা। নিত্যদিন পেট্রাপোল পেরিয়ে এই বাংলায় আসছেন বাংলাদেশিরা। তাঁদেরই মুখেই উঠে আসছে সেখানকার অবস্থা। সোমবার সেভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছেন গায়েন দম্পতি। তাঁরা যা বললেন, তা রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো।
উত্তর ২৪ পরগনা: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ক্রমশ প্রকাশ্যে। এমন এক এক ভিডিয়ো ফুটেজ সামনে এসেছে, (যার সত্যতা সব সময় যাচাই করা সম্ভব হয়নি), তার ভয়াবহতা শিউরে ওঠার মতো। কিন্তু এবার এক বাংলাদেশি হিন্দু দম্পতির মুখে হাড়হিম তথ্য। তিলক মুখে, সিঁদুর মুছে, মালা খুলে পরিচয় লুকোতে হচ্ছে তাঁদের। তাঁরা যে হিন্দু, ওপারে বেঁচে থাকা, অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে এটাই সবথেকে বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাঁদের। তাঁরা ধরা দিতে চান না, যে হিন্দু! জাত ধর্ম লুকিয়েই মিলেছে রেহাই। ভয়ানক কথা গায়েন দম্পতির গলায়। নিত্যদিন পেট্রাপোল পেরিয়ে এই বাংলায় আসছেন বাংলাদেশিরা। তাঁদেরই মুখেই উঠে আসছে সেখানকার অবস্থা।
সোমবার সেভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছেন গায়েন দম্পতি। তাঁরা যা বললেন, তা রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো। ক্যামেরা দেখে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন সুভাষ গায়েন। কথা বলতে গিয়ে বারবার ডুকরে উঠছিল বুক। চোখেমুখে প্রবল আতঙ্ক। দুদিনের জন্য কোনও কাজে ভারতে এসেছেন স্ত্রীকে নিয়ে। বছর ষাটেকের ওই বৃদ্ধের চোখেমুখে তখনও আতঙ্কের ছাপ। তিনি বলেন, “আতঙ্ক লাগছে, মনে হয়, এই যেন যুদ্ধ লেগেছে যাচ্ছে। ওখানে সব মুসলমান খারাপ না। কিন্তু কিছু মানুষ সুযোগের অসৎ ব্যবহার করেন। মারধর করেন, ডাকাতি, লুঠপাট, মেয়েদের সঙ্গে অন্যায় করলেন, কিন্তু ভালোরা করেন না। হিন্দুরা সেখানে স্বাধীনভাবে থাকতে পারছে না, কিছুটা কোণঠাসা হয়েই থাকতে হচ্ছে। আওয়ামি লিগের সময়ে তো এরকম ব্যাপারটা ছিল না। মৌলবাদীদের রাজত্ব।” তাহলে এই সময়ে এখন বাংলাদেশে ঠিক কী পরিস্থিতি? সে কথা বলতে গিয়েই ঢোক গিললেন তিনি। বাংলাদেশে বর্তমানে হিন্দুদের অবস্থা বোঝাতে গিয়ে বললেন, “ধরুন আমি মালা পরি। কিন্তু এখন মালা পরি না, খুলে রেখেছি। এর থেকে বেশি আর কী বলব বলুন! কারণ আমি চিহ্নিত হতে চাই না। বাইরে চলাফেরা করতে হয়। ঘরে বউ-মেয়ে রয়েছে। ”
পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর স্ত্রী। তিনি গোটা বিষয়টা প্রথমে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সন্ত্রস্ত কন্ঠেই বললেন, “সিঁদুর টিপ পরি। আমরা হাতে গোনা দু’জন হিন্দু ধরুন। তাহলে কি সিঁদুর টিপ পরে বেরোতে পারি? রাস্তায় বেরোতে ভয় লাগে। কিছু বললে আমরা আর বাঁচতে পারব না? সিঁদুর থাকলে চিহ্নিত হয়ে যায়, হিন্দু আমরা। ভয় লাগে আমাদের। এর থেকে বেশি বললে, ওপারে গিয়েই আমরা শেষ…”
বাংলাদেশের হিন্দুর পরিস্থিতিটা তাঁদের কথাতেই স্পষ্ট। তাঁদের মতোই আরও এক প্রবীণ দম্পতির গলাতেও সেই একই সুর। বিক্রমপুরের বাসিন্দা মালা সাহা বললেন, ” বাংলাদেশে হিন্দুদের ভীষণ সমস্যা। আমরা সেখানে কোনও নিজেদের স্বাধীনতা নেই। একটা কথা বলতে পারছি না। আমরা ভয় পাই।” আর তাঁর স্বামী সুশীল সাহা বলেন, ” যখন প্রধানমন্ত্রী চলে গিয়েছেন, তখন থেকেই আমরা আতঙ্কে রয়েছি। বিএনপি হোক, কিংবা আওয়ামি লিগ, এখন কোনও দল নাই। রাজনৈতিকভাবেই দ্বন্দ্ব তৈরি করা হয়েছে। হিন্দুরা আমরা শান্তিতেই থাকতে চাই।”