Agarpara News: একই সঙ্গে স্নাতক হলেন আগরপাড়ার মা-মেয়ে
North 24 Pargana: আগরপাড়ার বাসিন্দা সঙ্গীতা। ১৯৯৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। সে বার গণিতে অকৃতকার্য হন। তারপর আর পড়াশোনা করা হয়নি তাঁর। পরবর্তীতে বিয়ে, সন্তান, ঘর-সংসার...। স্বপ্ন ছিল, স্নাতক হবেন। এত কিছুর মাঝেও স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি।

আগরপাড়া: মায়ের বয়স ৪৫। আর মেয়ের ২১। কিন্তু স্বপ্ন দেখার যে কোনও বয়স হয় না তা বোঝালেন উত্তর ২৪ পরগনার আগরপাড়ার বাসিন্দা সঙ্গীতা দে। ৭৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে মেয়ের সঙ্গে BA পাস করলেন মা-ও। মেয়ের সঙ্গেই সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা করতে চান মা।
আগরপাড়ার বাসিন্দা সঙ্গীতা। ১৯৯৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। সে বার গণিতে অকৃতকার্য হন। তারপর আর পড়াশোনা করা হয়নি তাঁর। পরবর্তীতে বিয়ে, সন্তান, ঘর-সংসার…। স্বপ্ন ছিল, স্নাতক হবেন। এত কিছুর মাঝেও স্বপ্ন দেখা ছাড়েননি।
এরপর ২০১৯ সালে প্রায় চব্বিশ বছর পর ‘রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়’ থেকে আবার মাধ্যমিক দেন সঙ্গীতা। পরের ধাপ দেন উচ্চমাধ্যমিক। সে জন্য নতুন করে স্কুলেও ভর্তি হন তিনি। তাঁর ছোট মেয়ে সহেলীও তখন একাদশ শ্রেণিতে পড়েন। তখন অবশ্য মা-মেয়ের আলাদা স্কুল। মা পড়তেন ‘বেলঘরিয়ার নন্দননগর আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে’ আর মেয়ে পড়তেন ‘বেলঘরিয়া মহাকালী গার্লস হাইস্কুলে’।
২০২২ সালে মেয়ের সঙ্গেই উচ্চমাধ্যমিক দেন সঙ্গীতা। মা পান ৪৩৮, মেয়ে ৩৯৭। এরপর দু’জনই ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ শ্যামবাজারের মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজে। সেখানে একে একে ছটি সেমিস্টারের গণ্ডি পেরিয়ে বিএ পাশ করেছেন মা-মেয়ে। চূড়ান্ত সেমিস্টারের ফলপ্রকাশ হয়েছে শুক্রবার। দেখা গিয়েছে, একসঙ্গে স্নাতক হয়েছেন দু’জনেই। এ বার মেয়ে পেয়েছেন ৮০ শতাংশ নম্বর, মা ৭৫ শতাংশ!
তবে সংসারের বোঝা সামলে আগরপাড়া থেকে রোজ শ্যামবাজারের কলেজে গিয়ে ক্লাস করা সহজ ছিল না। ভোরে উঠে পরিবারের সকলের জন্য রান্না, এরপর পাড়ার পাঁচ শিশুকে পড়ানো, কলেজের জন্য তৈরি হওয়া…অতটাও সোজা নয়। সংসার চালানোর জন্য টুকটাক সেলাইয়ের কাজও করেন তিনি। এ সবের পাশাপাশি গান এবং নাটকের প্রতি আগ্রহ রয়েছে তাঁর। গান শেখেন, একটি নাটকের দলেও যুক্ত রয়েছেন।
তিনি বলেন, “স্নাতকস্তরের শংসাপত্র হাতে পাব, এটা আমার স্বপ্ন ছিল। এরপর এমএ করার ইচ্ছে রয়েছে। যদি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই, তা হলেই এমএ করব। তা ছাড়া, একটা চাকরিও দরকার, তা হলে স্বামীকে কিছুটা সাহায্য করতে পারব।”

