মতুয়া, রাজবংশী ও মুসলিমদের ভাঁওতা দিচ্ছেন মমতা: শান্তনু ঠাকুর
মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদের ঘোষণা থাকলেও সেই পর্ষদ থেকে কোন মতুয়া উপকৃত হননি। হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে ছুটি ঘোষণা করলেও এবছর কোন মতুয়াই সেই ছুটি পাননি। দাবি শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)-এর।
উত্তর ২৪ পরগনা: “দীর্ঘ দিন ধরে মতুয়াদের ভাঁওতা দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মতুয়াদের জন্য তিনি কোনও উন্নয়ন করেননি।” বুধবার এমনই অভিযোগ শানালেন বিজেপি সাংসদ তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)।
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার সভা থেকে নাম না করে শান্তনুকে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অভিযোগ করেছিলেন মতুয়াদের বিপথে চালনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এদিন ঠাকুর বাড়ির সদস্য তথা বিজেপি সাংসদ অভিযোগ করলেন মতুয়া,দের ভাঁওতা দিয়েছেন মমতা। ভোটের আগেও সেই চেষ্টা করছেন তিনি। তাঁর আরও অভিযোগ মতুয়াদের স্থায়ী নাগরিকত্ব দিতেও বাধা দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
এদিন নিজ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে শান্তনুর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হরিচাঁদ ঠাকুরের নামে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ঘোষণা করেছেন বাস্তবে তার কোনও অস্তিত্ব নেই। পাশাপাশি মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদের ঘোষণা থাকলেও সেই পর্ষদ থেকে কোন মতুয়া উপকৃত হননি বলে দাবি তাঁর। এখানেই থামেননি তিনি। দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে ছুটি ঘোষণা করলেও এবছর কোন মতুয়াই সেই ছুটি পাননি। তাঁর কথায়, “মতুয়া, রাজবংশী, মুসলিমদের দুধেল গাই হিসেবে ব্যবহার করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়”
প্রতিবার ভোটেই মতুয়া (Matua) ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর কাজ করে। এবার ভোটেও তার অন্যথা হচ্ছে না। মতুয়া ভোটকে ঝুলিতে টানতে সচেষ্ট যুযুধান দুপক্ষই। আর এবিষয়ে দু’দলেরই হাতিয়ার নাগরিকত্ব (CAA) ইস্যু। একদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আশ্বাস দিয়েছেন, করোনার টিককরণ শেষ হলেই মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের স্পষ্ট ঘোষণা, মতুয়ারা নাগরিক-ই আছেন। তাঁদের ভোটার কার্ড রয়েছে। তাঁরা ভোট দেন। নাগরিকত্ব ইস্যুতে এভাবেই মতুয়াদের নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে দু’পক্ষেই।
এদিকে শান্তনি ঠাকুরের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে ঠাকুরবাড়ির সদস্য তথা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুরের কটাক্ষ, “ঠাকুরবাড়ির যে হাট দিয়ে শান্তনু ঠাকুর ও তার বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর কামনা সাগরের নামেন সেটিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টাকায় তৈরি।”
আরও পড়ুন: ‘মমতা মুসলিমদের ভোট চাইছেন’, এফআইআর দায়ের করতে চেয়ে কমিশনে বিজেপি
তাঁর দাবি, হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিতিতে ছুটির ঘোষণা করেই ক্ষান্ত হয়নি রাজ্য সরকার। তা কার্যকরও হয়েছে। পাশাপাশি হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ হয়েছে বলে পাল্টা দাবি করেন মমতা ঠাকুর। তিনি এও মনে করিয়ে দেন, মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদকে রাজ্য সরকার ১০ কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু ভোটের জন্য সেই পর্ষদের কাজ শুরু করা যায়নি। সব মিলিয়ে ভোটের আগে ঠাকুরবাড়ির রাজনীতিও টানটান।