AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

CM Mamata Banerjee: মধ্যাহ্নভোজ রাজনীতি: রেশনের চালের ভাত-ওলকচু খেয়ে নজর কাড়লেন মমতা

Mamata Banerjee: নমিতা মণ্ডল নামে এক মহিলা ‘দিদি’র জন্য থালায় করে অল্প ভাত, ওলের তরকারি আর ট্যাংরা মাছের ঝোল নিয়ে আসেন। নমিতা নিজেই সেসব রান্না করেছিলেন তাঁদের ঘরের জন্য়।

CM Mamata Banerjee: মধ্যাহ্নভোজ রাজনীতি: রেশনের চালের ভাত-ওলকচু খেয়ে নজর কাড়লেন মমতা
মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
| Edited By: | Updated on: Nov 30, 2022 | 5:17 PM
Share

উত্তর ২৪ পরগনা: স্টিলের থালায় রেশনের চালের ভাত, ওলকচুর তরকারি আর ট্যাংরার ঝোল। ভাঙা চেয়ারে বসে পরম যত্নে সে খাবার খেলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বুধবার মমতার অভূতপূর্ব এক জনসংযোগের সাক্ষী রইল টাকির খাঁপুকুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত এক গ্রাম। ভরদুপুরে গ্রামে অতিথি হয়ে হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রামবাসীদের মাঝে বসেই পাত পেরে খেলেন দুপুরের খাবার। একুশের বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির তাবড় নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারতে দেখা গিয়েছিল। সম্প্রতিও দেখা গিয়েছে তাঁদের। তবে সেই আহারের আয়োজন ছিল যথেষ্ট গোছানো, পরিপাটি। কিন্তু এদিন মুখ্যমন্ত্রী কার্যত চমকে দিয়েছেন সকলকে। তাঁর জনসংযোগ যে কোনও সময়ই অন্য মাত্রা টানে, কিন্তু এদিন যা হল তাতে দলের অনেকেই অবাক।

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক ছিল হিঙ্গলগঞ্জে। পরদিন বুধবার সকাল থেকেই নানা জনসংযোগ কর্মসূচিতে দেখা যায় তাঁকে। প্রথমে লঞ্চে ইছামতীবক্ষে ঘোরেন মমতা। নিজের হাতে স্টিয়ারিংও ঘোরান। বেলা ১টা নাগাদ হাসনাবাদের খাঁপুকুর এলাকায় একটি প্রাথমিক স্কুলে যান। সেখানে বাচ্চাদের নতুন পোশাক তুলে দেন তিনি। সেখান থেকে খাঁপুকুর গ্রামপঞ্চায়েতে মহিলাদের পোশাক দেন। সূত্রের খবর, সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী মধ্যাহ্নভোজের বিষয়টি তোলেন। কথায় কথায় বলেন, কিছু খাওয়া হয়নি তাঁর। এরপরই খাঁপুকুর প্রগতি সংঘের মাঠের পিছনের দিকে একটি বাড়িতে তিনি চলে যান। সে সময় সেখানকার মহিলারা চাটাই বুনছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও সে কাজে হাত লাগান।

এরই মাঝে নমিতা মণ্ডল নামে এক মহিলা ‘দিদি’র জন্য থালায় করে অল্প ভাত, ওলের তরকারি আর ট্যাংরা মাছের ঝোল নিয়ে আসেন। নমিতা নিজেই সেসব রান্না করেছিলেন তাঁদের ঘরের জন্য। নমিতার চোখে এখনও সে মুহূর্তের ঘোর লেগে। নমিতা নিজেই বললেন, “দিদি এলেন আমাদের বাড়িতে। একটা ভাঙা চেয়ার, তাতেই উনি বসলেন। দু’টো ভাত চাইলেন উনি। ভাত দিলাম, খেলেন। আমরা চেটি বুনছিলাম। একটু দেখিয়ে দিলাম, উনিও চেটি বুনলেন। উনি যে আসবেন কিছুই জানতাম না। হঠাৎ শুনলাম আসবেন। কর্মতীর্থে আসবেন জানি। কিন্তু গ্রামে যে আসবেন তা তো জানতাম না। আমার বাড়িতে আসবেন ১০ মিনিট আগে শুনলাম। ঘরে রেশনের চাল ছিল। তারই ভাত হয়েছে। খালবিল থেকে আনা ট্যাংরা মাছ, ওল রান্না করেছিলাম। বাড়ির ওল। সেটাই দিলাম ওনাকে। তৃপ্তি করে খেলেন।”

এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে নিজেদের নানা সমস্যার কথাও বলেন গাঁয়ের মহিলারা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে রেশন কার্ড, পানীয় জল সমস্ত কথাই ‘দিদি’কে বলেন তাঁরা। সমস্যা আশু সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাম্প্রতিক অতীতে কারও বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করতে কখনও দেখা যায়নি মমতাকে। সভা করতে গিয়ে মাঝেসাজে চা তৈরি বা চপ ভেজে জনসংযোগ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির মিঠুন চক্রবর্তী, সুকান্ত মজুমদার কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছেন। তাছাড়া ভোটের সময় বিজেপির নেতারা দলীয় কর্মীদের বা দলিতদের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সেরে জনসংযোগ করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বিজেপির মধ্যাহ্নভোজের জনসংযোগকে ছাপিয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ দিনের জনসংযোগ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাঁর এই জনসংযোগ মধ্যাহ্নভোজ রাজনীতিতেও আলাদা মাত্রা যোগ করল বলেই মত পর্যবেক্ষকদের।