AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মমতাকে জয় শ্রী রাম হয়েছে ‘বুমেরাং’, বেসুরো আদি বিজেপি নেতার নিশানাতেও ‘বহিরাগতরা’

গো-বলয়ের নেতাদের দিয়ে ভোট পরিচালনা বা মমতাকে উদ্দেশ্য করে 'জয় শ্রী রাম' বলা, দুই-ই বুমেরাং হয়েছে বলে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানান তিনি।

মমতাকে জয় শ্রী রাম হয়েছে 'বুমেরাং', বেসুরো আদি বিজেপি নেতার নিশানাতেও 'বহিরাগতরা'
ফাইল ছবি
| Updated on: May 13, 2021 | 5:03 PM
Share

কলকাতা: ২ মে ফলাফল প্রকাশের পর যে আশঙ্কার মেঘ ঘনাতে শুরু করেছিল, এখন ক্রমশ তা বর্ষাতে শুরু করেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কাঙ্খিত ফলাফল না হওয়ায় এখন একে একে বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন বঙ্গ বিজেপির আদি নেতারা। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, বাংলা বা বাঙালির আবেগ না বুঝে যেভাবে রণনীতি করেছিলেন, এবং যেভাবে উগ্র হিন্দুত্বে শান দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলা। এমনটাই মত বিজেপির রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি তথা আদি নেতাদের মধ্যে অন্যতম রাজকমল পাঠকের। গো-বলয়ের নেতাদের দিয়ে ভোট পরিচালনা বা মমতাকে উদ্দেশ্য করে ‘জয় শ্রী রাম’ বলা, দুই-ই বুমেরাং হয়েছে বলে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানান তিনি।

দলের বিরুদ্ধে কার্যত একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন রাজকমল। তিনি এ দিন বলেন, “মানুষ ভাবতে শুরু করে দিয়েছিল যে বিজেপি দলটা বাকিদের থেকে আলাদা। কিন্তু যারা এ রাজ্যের দায়িত্বে ছিল, তাঁরা এই রাজ্যের ইতিহাস, ভূগোল বা রসায়ন কিছুই বোঝনি। তাঁরা এ রাজ্যে তৃণমূল নেতাদের দলে আনল। এতে মানুষের ধারণাটাই বদলে গেল।” অভিমানের সুরে তিনি আরও জানান, “আমাদের মতো পুরনো নেতাদের ফোনও পর্যবেক্ষরা তুলতেন না। আসন বণ্টন নিয়েও কোনও আলোচনা হয়নি। পরিষ্কার মানুষদের প্রার্থী করলে কিন্তু ২০০-র উপর আসন আসত।”

ভোট প্রচারে বিজেপি নেতাদের নিশানায় নেয়ে একাধিকবার ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব খাড়া করেছিল তৃণমূল। এ দিন আদি বিজেপি এই নেতার মুখেও শোনা গিয়েছে একই সুর। তিনিও আঙুল তুলেছেন বাইরের নেতাদের অতিরিত্ত মাতব্বরির দিকে। এখানেই থেমে রাজকমল বলেন, “এ বারের ভোটে বাইরের লোকেরা এসে এমন ভাব করল যেন বাঙালিরা কিছু নয়। বাঙালি কোনও নেতৃত্বের মুখকে সামনে আনা হল না। রাজস্থান, গুজরাটের লোকেরা ভোট পরিচালনা করল। তাঁরা এসে কীভাবে আমাদের জিততে শেখাবে?”

আরও পড়ুন: কোভিশিল্ডের দুই ডোজ় দেওয়ার নিয়মে এল বড় বদল, জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক

তৃণমূল সুপ্রিমোকে খোঁচানোর জন্য অনেক সময়ই ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন বিজেপির শীর্ষ নেতা থেকে কর্মীরাও। গত জানুয়ারি মাসে নেতাজির জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতেও এই ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু তাতে লাভ তো হয়নি, উল্টে সেটা ‘বুমেরাং’ হয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানাচ্ছেন। “বাঙালি সংস্কৃতি সবসময় আলাদা, এটা হিন্দি বলয় নয়। এখানে জয় শ্রী রাম বললে সবাই একত্রিত হয় না। বাঙালি অনেক উদার মানসিকতার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখার সময় এরা কিছু লোক নিয়ে গিয়ে জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিচ্ছে। সেটাও আমাদের জন্য ব্যাকফায়ার করেছে”, পষ্টাপষ্টি ভঙ্গিতে জানান রাজকমল।

আদি নেতাদের মধ্যে সবার প্রথমে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়। তিনি অবশ্য নেট দুনিয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন। যার জেরে দিল্লি থেকে তলব করা হয় তাঁকে। এ বার একই সুরে আরও তীব্রভাবে আক্রমণে শান দিয়েছেন রাজ কমল। ঝাঁকে ঝাঁকে তৃণমূল থেকে নেতাদের বিজেপিতে শামিল করার জোরাল বিরোধিতা করছেন তিনি। তাঁর এই ক্ষোভ গেরুয়া শিবিরে ভাঙনের জল্পনা উস্কে দিয়েছে। কেননা রাজ কমল সেই নেতাদের মধ্যে অন্যতম যারা গত ৪০ বছর ধরে পদ্মের পতাকা নিয়ে এ রাজ্যে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ব্যর্থ মোদীর নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি! মমতার পাল্টা চালে এবার বাংলার কৃষকদের অ্যাকাউন্টেও কিসান সম্মান নিধির টাকা