বাঘের হামলায় প্রাণ হারালেন সুন্দরবনের মৎসজীবী! ৪ মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্ত্রী
বাঘটি সরাসরি লাফিয়ে পড়ে ৩৮ বছর বয়সী অভয় মন্ডলের উপর। জল কাদার মধ্যেই বাঘের সঙ্গে লড়াই চলে তাঁর।
কুলতলি: সুন্দরবনে (Sundarban) বাঘের হামলায় প্রাণ হারালেন ১ মৎস্যজীবী। বাঘের সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করে মৃতদেহে গ্রামে নিয়ে এলেন ২ সঙ্গী। কুলতলি থানার দেউলীবাড়ি-দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধবপুর গ্রামে বাড়ি অভয় মন্ডলের। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরে দিন চলে তাঁর। শুক্রবার অভয়, লক্ষ্মণ ও যাদব তিনজন মিলে কাঁকড়া ধরতে রওনা দিয়েছিলেন।
৩ দিন নির্বিঘ্নেই কাঁকড়া ধরেন তিন জন। কিন্তু মঙ্গলবার নৌকা থেকে নেমে মেছুয়া দ্বীপের কাছে বালির খালে কাঁকড়া ধরার সময়ই বাঘের আক্রমণের মুখে পড়েন অভয়। বাঘটি সরাসরি লাফিয়ে পড়ে ৩৮ বছর বয়সী অভয় মন্ডলের উপর। জল কাদার মধ্যেই বাঘের সঙ্গে লড়াই চলে তাঁর। শেষ পর্যন্ত ঘাড়ে কামড় বসিয়ে অভয়কে জঙ্গলে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাঘটি। তখন লক্ষ্মণ ও যাদব লাঠি, বৈঠা নিয়ে কোনওরকমে বাঘটিকে তাড়ায়। তারপর বাঘটি মৃতদেহ ছেড়ে জঙ্গলে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: শাক রেঁধে, চা খেয়ে ৫০০ টাকা দিলেন মমতা
এরপর অভয়ের কাদামাখা মৃতদেহ নিয়ে সারারাত নৌকা চালিয়ে বাড়ি ফেরে দুই সঙ্গী। বুধবার সকালে কাটামারি গ্রামের জেটিঘাটে নৌকা আসতেই সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে অভয়ের মৃত্যুর খবর। বাঘের আক্রমণে অভয়ের মৃত্যুর পর গোটা গ্রাম জুড়ে শোকের ছায়া। স্বামীকে হারিয়ে ৪ মেয়েকে নিয়ে সংসারের চিন্তা গ্রাস করেছে অভয়ের স্ত্রী কমলাকে। বাঘের আক্রমণে অভয়ের মৃত্যুর পর বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বন দফতর। ১০ বছর ধরে কাঁকড়া ধরছে অভয়। সুন্দরবনের কতই না গভীরে সে ঢুকেছে। কিন্তু বাঘের থাবায় স্তব্ধ হয়ে গেল তাঁর জীবন।