আসানসোল: সুপ্রিম কোর্টে রক্ষাকবচ পেয়েছেন। পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে আসানসোলে সিবিআই আদালতে (Asansol Court) হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ। সেইমতো বৃহস্পতিবার আসানসোল সিবিআই (CBI) আদালতে গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) অভিযুক্ত আব্দুল লতিফ (Abdul Latif) হাজিরা দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
এর আগে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালত লতিফের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন আব্দুল লতিফ। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ লতিফকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেয়। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, এক সপ্তাহ পর এই মামলার শুনানি হবে শীর্ষ আদালতে। ততদিন কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না লতিফের বিরুদ্ধে।
তবে শীর্ষ আদালত জানায়, আসানসোল সিবিআই আদালতে বৃহস্পতিবার গরু পাচার মামলার শুনানি রয়েছে। সেদিন বা তার আগে তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। তাঁদের রায়ে এও উল্লেখ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট কোর্ট মামলা সংক্রান্ত যা নির্দেশ দেবে তা মেনে চলতে হবে। এতদিন সিবিআই বা রাজ্য পুলিশের নাগালের বাইরেই ছিলেন আব্দুল লতিফ। সুপ্রিম কোর্ট রক্ষাকবচ দিলেও যে ভাবে আদালতে হাজির হওয়া ও মামলায় সহযোগিতা করার বার্তা দিয়েছে তাতে এবার তাঁকে গ্রেফতার না করতে পারলেও নাগালে পাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
গরু পাচার মামলায় প্রথম থেকেই নাম জড়িয়েছিল ইলামবাজারের আব্দুল লতিফের। ইলামবাজার গরু হাটের নিয়ন্ত্রক ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই গরু পাচার হয়ে বাংলাদেশ যেত বলেই অভিযোগ। এই মামলায় সিবিআই এনামুল হক, অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হলেও লতিফকে জালে তুলতে পারেনি। অথচ তাঁর মার্বেল হাউস, ফার্মে একাধিক বার হানা দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানাও বের হয়।
অন্যদিকে রাজু ঝা হত্যাকাণ্ডে নাম উঠেছে লতিফের। তিনি সেদিন রাজুর গাড়ির ভেতরেই ছিলেন বলে দাবি। এমনকি একটি ভিডিয়োয় তাঁকে ঘটনাস্থলে দেখাও গিয়েছে। তারপরই উধাও হয়ে যান তিনি। এবার তদন্তকারী সিটও চাইলে তাঁর নাগাল পেতে পারে। তাই বৃহস্পতিবার টানটান উত্তেজনা থাকবে আসানসোল সিবিআই বিশেষ আদালতে।
এহেন সিবিআইয়ের চোখে ফেরার লতিফ কিন্তু দিব্যি যোগাযোগ রেখেছিলেন দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী রাজু ঝায়ের সঙ্গে। এমনকী রাজুকে খুনের দিনও তাঁর সঙ্গে লতিফ ছিলেন বলে তদন্তকারীদের দাবি। তাঁর ভূমিকাও আতসকাচের তলায়। কিন্তু লতিফের সন্ধান পায়নি রাজু ঝায়ের হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করা সিটও।
অন্যদিকে অনুব্রত মণ্ডল রয়েছেন তিহাড় জেলে। তাঁরও বৃহস্পতিবার আসানসোল সিবিআই আদালতে ভার্চুয়াল প্রোডাকশন রয়েছে। দিল্লি হাইকোর্টে অনুব্রত মণ্ডল মামলা করেছে ইডির বিরুদ্ধে। ওই মামলাটি খারিজের আবেদন করেছিলেন অনুব্রত। তাই অনুব্রত মণ্ডলের ভার্চুয়াল শুনানি ৩১ মার্চ হয়নি। ২৭ এপ্রিল ফের শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন বিচারক।
আবার ৩১ মার্চ তিহাড় জেলে ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সমস্যা থাকায় ভার্চুয়াল প্রোডাকশন হয়নি সায়গল হোসেনের। তাই বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী পরবর্তী শুনানি ধার্য করেন ২৭ এপ্রিল।