AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Medinipur: স্কুল ছাড়া অত সোজা? মাস্টারমশাই নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাচ্ছেন পড়ুুয়াদের

Daspur: মেদিনীপুরের হাট সরবেড়িয়ার দাসপুরের বিধানচন্দ্র স্মৃতিশিক্ষা নিকেতনের স্যরেরা এ ভাবেই স্কুলমুখো করছেন ছাত্রদের।

Medinipur: স্কুল ছাড়া অত সোজা? মাস্টারমশাই নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করাচ্ছেন পড়ুুয়াদের
দাসপুরের বিধানচন্দ্র স্মৃতিশিক্ষা নিকেতনের শিক্ষকরা। নিজস্ব চিত্র।
| Edited By: | Updated on: Nov 20, 2021 | 7:45 AM
Share

মেদিনীপুর: স্কুলছুট ছেলে ভেবেছিল আর কোনও দিনই স্কুলে যাবে না। অভাবের সংসারে খেটে খাবে। ভাবলেই কি আর হয়? স্কুল যে বাড়ি বয়ে চলে এসেছে। দাসপুরে দুয়ারে এসে দাঁড়িয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বয়ং। হাতে রেজিস্ট্রেশনের ফর্ম। সঙ্গে চোয়াল চাপা জেদ। স্কুলে ফেরাতেই হবে ছেলেগুলোকে।

দরমার ছায়া পড়ে আছে মেঝেতে। তার পাশে লুটোপুটি খায় শীতের রোদ্দুর। তক্তপোষে রাখা কাগজ। ঘাড় গুঁজে তাতেই সই করে চলেছে শীর্ণকায় নাবালক। ফর্ম ফিল আপ করছে নবম শ্রেণির ওই ছাত্র। দাদার কোল ঘেঁষে পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছে আরও দুই ভাই। ঘরজুড়ে অভাবের ছাপ স্পষ্ট। সে কারণেই চাইলেও করোনার পর থেকে আর পড়াশোনা এগোতে পারেনি নবমের ওই ছেলে। ভেবেছিল পড়াশোনা ছেড়েই দেবে। সংসারের হাল ধরবে। কিন্তু হেড স্যর নিজে যে বাড়ি বয়ে এসেছেন। কিছুতেই তিনি স্কুল ছাড়তে দেবেন না।

মেদিনীপুরের হাট সরবেড়িয়ার দাসপুরের বিধানচন্দ্র স্মৃতিশিক্ষা নিকেতনের স্যরেরা এ ভাবেই স্কুলমুখো করছেন ছাত্রদের। একটাও রেজিস্ট্রেশন যাতে বাদ না পড়ে তথ্য নিয়ে তাঁরাই যাচ্ছেন ছাত্রের বাড়ি। বলছেন, সমস্ত দায়িত্ব তাঁদের। রেজিস্ট্রেশনের যা ফি আছে তা দিয়ে দেবে স্কুলই। তবু পড়াশোনাটা ছাড়া যাবে না।

স্কুল খুলেছে ঠিকই। তবে নবম শ্রেণি থেকে স্কুলে গিয়ে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। নিচের ক্লাসের ছেলেমেয়েরা দু’বছর হতে চলল বাড়িতেই। অনলাইন ক্লাস চলছে তাদের। তবে কতজন সেই ক্লাসে অংশ নিতে পারছে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। বিশেষ করে বাংলার প্রত্যন্ত এলাকায় ছেলে মেয়েদের ক্ষেত্রে আদৌ ইন্টারনেট খরচ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভিডিয়ো কলে ক্লাস করা সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে একাধিকবার।

হাসিনা বিবির ছেলে পড়েন মেদিনীপুরের দাসপুরের বিধানচন্দ্র স্মৃতিশিক্ষা নিকেতনে। করোনার কোপে যখন ঘরে চাল চড়ানোই দুষ্কর হয়ে উঠেছিল, ভেবেছিলেন ছেলের আর লেখাপড়ায় কাজ নেই। বরং কাজের খোঁজে নামুক এবার। কিন্তু এবার তিনিও মন বদলেছেন। হাসিনা বিবি বলেন, “অনেক দিন ঘরে বসে ছিল। ভেবেছিল ঘরে বসে কী করব। বাইরে কাজে চলে যাবে।”

আরেক অভিভাবক নজরুল শেখের কথায়, “ছেলে বলেছিল পড়াশোনা শিখবে না আর। ঘরের অবস্থা খারাপ, তাই কাজ শিখবে। কিন্তু স্যররা তো বাড়িতে এসেছিলেন। বলছেন পড়াতে।” মাস্টারমশাই হাল ছাড়তে নারাজ। তিনি বলেছেন বাড়ি বাড়ি তিনি ছুটবেনই। ছেলেগুলোকে স্কুলে ফেরাতে সবরকম চেষ্টা করবেন তিনি।

বিধানচন্দ্র স্মৃতি শিক্ষানিকেতনের প্রধানশিক্ষক বৃন্দাবন ঘটক বলেন, “যারা স্কুলে আসছে না, তারা কি শুধু বাড়িতে পড়াশোনা করছে বলে আসছে না, নাকি স্কুলছুটের কোনও প্রবণতা আছে এটা আমরা রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হয়ে গেলেই বুঝতে পারব। স্কুলছুটের প্রবণতা কতটা তা বুঝে আবারও বাড়ি বাড়ি অভিযান চলবে।”

আরও পড়ুন: Road Accident: রাতের কলকাতায় ফিরল গন্ধ বিচার! আবারও ব্রেথ অ্যানালাইজারের ব্যবহার শুরু