Bardhaman: পড়াশোনা-সহ সবেতেই পিছিয়ে পড়ছিল, আড়াই বছরের মেয়ের হাতের শিরা কাটলেন মা!
Bardhaman: মূলত, অবসাদেই এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন তিনি। মেয়েকে নিয়ে মায়ের যা লক্ষ্য ছিল তা পূরণ হচ্ছিল না। পড়াশোনা সহ বিভিন্ন বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছিল সেই আড়াই বছরের শিশুটি। সেই কারণেই অবসাদেই মেয়েকে আঘাত করে বসেন মা।
বর্ধমান: গোটা মেঝেটা রক্ত থৈথৈ করছে। ঘরের মধ্য়ে তখন একই সঙ্গে দু’টো ছবি। একদিকে মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে ছোট্ট মেয়েটির দেহ। তারই অদূরে পড়ে রয়েছে মা। দুষ্কৃতী হামলার জেরেই কি এই রকম কাণ্ড? না তা ঠিক নয়। মেয়েকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন মা, এমনটাই জানালেন খোদ তার স্বামী। ঠিক কী ভুল করেছেন তা হয়তো বুঝতে পেরেই, অনুশোচনায় এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি, দাবি স্বামীর।
ঘটনা বর্ধমান শহরের ক্ষুদিরাম কলোনির। ছোট্ট সংসার। মা, মেয়ে ও বাবা। সারাদিন শিশুকন্যাকে নিয়েই থাকতেন মা। নাম শ্রাবন্তী হাজরা। স্বামী বিধান হাজরা, কাজ করেন স্থানীয় একটি পত্রিকায়।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ ঝগড়া-অশান্তির শব্দ পাওয়া যায় বিধানের বাড়ি থেকে। যথারীতির সেদিকে ছুটে যান পাড়ার লোকেরা। কিন্তু ঘরে ঢুকতে গিয়ে রীতিমতো চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যায় তাদের। রক্তে ভেসে গিয়েছে ঘরের মেঝে। অচৈতন্য অবস্থায় মাটিতেই পড়ে রয়েছে মা ও মেয়ে। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় পুলিশে। নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয় সেই আড়াই বছরের শিশুকন্যাটির। প্রাণরক্ষা করা সম্ভব হয় না তাঁর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শুরু হয় মায়ের চিকিৎসা।
কিন্তু কীভাবেই বা ঘটল এমন ঘটনা? নেপথ্যে দায়টাই বা কার? শিশুকন্যাটির বাবা জানাচ্ছেন, মেয়েকে আঘাত করে নিজে আত্মঘাতী হন মা। অবশ্য, পুলিশ সূত্রে খবর গোটা ঘটনার কূলকিনারা বের করতে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে তারা। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে হাসপাতালে চিকিৎসারত শ্রাবন্তী হাজরারও।
অবশ্য এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানান, ‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত রয়েছে। বিধান হাজরাকেও পুলিশ গোটা ঘটনায় সন্দেহের বাইরে রাখা হচ্ছে না।‘
অন্যদিকে আরও এক পুলিশ আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসারত মহিলাকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তিনি নাকি স্বীকার করেন, তার হাতেই মৃত্যু হয়েছে শিশুকন্যাটির। মূলত, অবসাদেই এমন কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন তিনি। মেয়েকে নিয়ে মায়ের যা লক্ষ্য ছিল তা পূরণ হচ্ছিল না। পড়াশোনা সহ বিভিন্ন বিষয়ে পিছিয়ে পড়ছিল সেই আড়াই বছরের শিশুটি। সেই কারণেই মেয়ের হাতের শিরা কেটে নিজেও একই ভাবে আত্মাঘাতী হবার চেষ্টা করেন মা।