গলসি: লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে নির্বাচন। আর এদিকে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতে না হতেই তপ্ত পূর্ব বর্ধমানের গলসি। গতরাতে আচমকা সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্যের বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। শুধু বাড়িতেই তাণ্ডব নয়, ভাঙচুর হয়েছে গাড়ি, ট্রাক্টর ও যাত্রীবাহী বাসও। আর এই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। এই ঝামেলা ও তাণ্ডবের পিছনে শাসক দলের ইন্ধন রয়েছে বলেই অভিযোগ স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের। বামেদের বক্তব্য, ভোটের মুখে তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ভয় দেখাতেই এসব করা হচ্ছে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
কী ঘটেছিল গতরাতে? সিপিএম এরিয়া কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ চৌধুরীর পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, গতরাতে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল। আর এই ঘটনায় তাঁদেরই আত্মীয় অমরনাথ চৌধুরীর হাত রয়েছে বলে দাবি সিপিএম নেতার পরিবারের। জানা যাচ্ছে, এই অমরনাথ চৌধুরী আবার তৃণমূলের সমর্থক। অমরনাথ চৌধুরীর নেতৃত্বেই গতরাতে প্রায় ২০-২৫ জন বিশ্বজিৎ চৌধুরীর বাড়িতে লাঠি, রড, বাঁশ, ভোজালি নিয়ে হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। ঝামেলার খবর পেয়ে গতরাতেই পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে এবং একজনকে আটক করে।
আর এই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করে তৃণমূলকে বিঁধছে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের জেলা কমিটির সম্পাদক সৈয়দ হোসেনের দাবি, ‘এটা কোনও ব্যক্তিবিশেষের উপর আক্রমণ নয়। সিপিএম কর্মীদের ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্যই এই আক্রমণ, যাতে তারা ভোটের প্রচার করতে না পারে। শুধু তাই নয়, গ্রামের সাধারণ ভোটারদের সন্ত্রস্ত করার উদ্দেশ্য নিয়েই এই আক্রমণ হয়েছে।’ যদিও এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছে না স্থানীয় তৃণমূল শিবির। তৃণমূলের গলসি ২ ব্লক সভাপতি শেখ সাবিরউদ্দিনের বক্তব্য, গোটাটাই পারিবারিক ঝামেলা এবং এর সঙ্গে তৃণমূল দলের কোনও যোগ নেই।
বিশ্বজিৎ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা অবশ্য দাবি করছেন, পুরনো এক মামলা না তোলার কারণেই এই হামলা হয়েছে। এদিকে আবার পাল্টা যুক্তি রয়েছে অমরনাথের পরিবারেরও। তাদেরও বক্তব্য, এটি একটি পুরনো বিবাদ এবং বিশ্বজিৎ চৌধুরীর পরিবারই প্রথমে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল।