Purba Bardhaman: ঝাঁ চকচকে রাস্তায় ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ, নতুন বউ নিয়ে গরুর গাড়িতে ফিরলেন বর
Purba Bardhaman: একটা সময় গ্রামবাংলায় গরুর গাড়ি ছিল যাতায়াতের অন্যতম ভরসা। এখন আর গ্রামে গরুর গাড়ির দেখা পাওয়া যায় না সেই অর্থে। চাষাবাদের কাজে গরুর গাড়ি ব্যবহারের সংখ্যাও অনেকটাই কমেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একবিংশ শতাব্দীতে গরুর গাড়িতে চেপে বিয়ে করতে যাওয়া রীতিমত নজর কেড়েছে সবার।

আউশগ্রাম: ঝাঁ চকচকে রাস্তা। তার উপর দিয়ে ক্যাঁচর ক্যাঁচর করে চলেছে গরুর গাড়ি। সেই গরুর গাড়ি আবার ফুল দিয়ে সাজানো। কৌতূহলবশত অনেকে তাকালেন। ভিতরে বর-কনে বসে। এমনই ছবিই দেখা গেল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে। গরুর গাড়িতে বিয়ে করতে গেলেন পূর্ব বর্ধমানের ভেদিয়ার জীবনানন্দ দে। বিয়ে করতে নতুন বউকে গরুর গাড়িতে নিয়ে ফিরলেন বাড়ি। সেই ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সময় যেমন বদলেছে। বদলেছে বিয়ের ধারাও। আগে, বর বিয়ে করতে যেত পালকিতে চেপে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মার্সিডিজ বা বিএমডব্লিউর মতো গাড়িতে পরিবর্তিত হয়েছে বিয়ে করতে যাওয়ার সেই ধরন। ফলে এখন কনের বিদায় আর পালকিতে হয় না। কিন্তু, পুরনো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে একেবারের গরুর গাড়িতে বিয়ে করতে গেলেন জীবনানন্দ দে।
একটা সময় গ্রামবাংলায় গরুর গাড়ি ছিল যাতায়াতের অন্যতম ভরসা। এখন আর গ্রামে গরুর গাড়ির দেখা পাওয়া যায় না সেই অর্থে। চাষাবাদের কাজে গরুর গাড়ি ব্যবহারের সংখ্যাও অনেকটাই কমেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে একবিংশ শতাব্দীতে গরুর গাড়িতে চেপে বিয়ে করতে যাওয়া রীতিমত নজর কেড়েছে সবার। স্বাভাবিকভাবেই এই ছবিতে মজে গিয়েছে নেট নাগরিকরা।।
গতকাল বিয়ে হয়েছে জীবনানন্দ দের। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে গরুর গাড়িতেই নববধূকে নিয়ে ফিরলেন তিনি। আউশগ্রামের ভেদিয়ার বর জীবনানন্দ দে ও আউশগ্রামেরই গোবিন্দপুরের কনে নিবেদিতা মাঝির গতকাল বিয়ে হয়। তাঁদের এই অভিনব সিদ্ধান্তে মুগ্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও।
পুরনো রীতির প্রতি ভালবাসা থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন জীবনানন্দ দে। তিনি বলেন, “আমাদের শৈশবের গল্পে দাদু-ঠাকুরমার মুখে শুনেছি, একসময় গরুর গাড়িতেই কনে আনা হত। এখন যুগ বদলেছে। কিন্তু আমাদের শিকড় তো গ্রামেই। তাই ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে আমরা গরুর গাড়িতেই বাড়ি ফিরেছি।” তবে প্রথমে তাঁর সিদ্ধান্তে পরিবার কিছুটা নিমরাজি ছিলেন বলে তিনি জানান। পরে অবশ্য পরিবারের লোকজন তাঁর কথা মেনে নেয়।
নববধূ নিবেদিতা মাঝিও এই সিদ্ধান্তে খুশি। তাঁর কথায়, “এটা এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। এমন কিছু করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।” জীবনানন্দ দে পরিবারের একমাত্র সন্তান। তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। আর নিবেদিতারা এক ভাই ও এক বোন। নিবেদিতা বড়। তিনি এখন পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর বাবা স্কুল শিক্ষক।
এখন গ্রামবাংলায় লাঙল-জোয়ালের বদলে ট্রাক্টর, ধান ঝাড়ার যন্ত্রের দাপট। গরুর গাড়ির ব্যবহার প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবুও জীবনানন্দ-নিবেদিতার এই বিশেষ উদ্যোগে খুশি বিয়েবাড়িতে আসা লোকজনও।





