Akhil Giri: মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চাওয়ায় লজ্জিত, তবে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমি করিনি: অখিল

Akhil Giri: অখিল বলছেন, তিনি কোনও কুরুচিকর মন্তব্য করেননি। বরং,মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হয়ে ক্ষমা চাওয়ায় তিনি লজ্জিত ও অনুতপ্ত। শনিবার টিভি নাইন বাংলা-কে এমনই জানালেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি।

Akhil Giri: মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চাওয়ায় লজ্জিত, তবে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমি করিনি: অখিল
অখিল গিরি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 19, 2022 | 4:41 PM

রামনগর: রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে (President Draupadi Murmu) নিয়ে সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil Giri) যে মন্তব্য করেছেন, তাতে উত্তাল হয়েছে গোটা রাজ্য। শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে। সেই আঁচ গিয়ে পড়েছিল দিল্লির রাজনীতিতেও। চারিদিক থেকে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। তখন অখিল গিরি দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন বটে, কিন্তু তাতেও বিশেষ কোনও কাজ হয়নি। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে হয়েছিল স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। নিজের ক্যাবিনেট সদস্যের এমন মন্তব্যের জন্য নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষমা চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু এরপরই অখিল বলছেন, তিনি কোনও কুরুচিকর মন্তব্য করেননি। বরং,মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হয়ে ক্ষমা চাওয়ায় তিনি লজ্জিত ও অনুতপ্ত। শনিবার টিভি নাইন বাংলা-কে এমনই জানালেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি।

অখিলের ইস্তফার দাবিতে মিছিল বিজেপির

সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে অখিল গিরির আলটপকা মন্তব্যের মতো হাতে গরম ইস্যুকে হাতিয়ার করে রাজ্যের শাসক শিবিরের উপর আরও চাপ তৈরির কৌশলে কোনও খামতি রাখছে না বিজেপি। শনিবার অখিল-গড় রামনগরে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে পদ্মশিবির। অখিল গিরির ইস্তফার দাবিতে রামনগরে বিজেপির মিছিল। নেতৃত্বে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

কুরুচিকর মন্তব্য করিনিঃ অখিলের

এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি টিভি নাইন বাংলাকে জানালেন, “মাইকে প্রচার শুনলাম যে আমি নাকি কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছি। কিন্তু আমি কালো বা দেখতে কালো… কুরুচিপূর্ণ এমন কোনও মন্তব্য করিনি। ওরা এটা বাড়িয়ে বলছে। নিজেদের রাজনৈতিক প্রচারের জন্য। কিন্তু বিরোধী দলনেতা যদি আজ আমাদের বিরুদ্ধে অশালীন কথা বলেন, তার প্রতিবাদে ২৫ নভেম্বর আমরা আবার প্রতিবাদ সভা ডাকছি।”

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হয়ে ক্ষমা চাওয়ায় অনুতপ্ত অখিল

মুখ্যমন্ত্রী যে অখিল গিরির হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন, তাতে লজ্জিত বোধ করছেন অখিল গিরি। টিভি নাইন বাংলাকে বললেন , “এর আগেও অনেক অপপ্রচার করেছেন। অনেকরকম ষড়যন্ত্র করেছেন। কিন্তু এই অপপ্রচারে আমাদের কিছু হয়নি। কিন্তু আমরা মনে করি এর কোনও প্রভাব পড়বে না। বিজেপির এই অপপ্রচারে মানুষ কোনও কর্ণপাত করবে না। আমি যে কথা বলেছি, তার পরের দিনই আমি যে ক্ষমাপ্রার্থী সে কথা বলেছি। আমার এই কথা বলার জন্য আমি দুঃখিত,মর্মাহত এবং ক্ষমাপ্রার্থী একথা বলেছি। তারপরও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অপপ্রচার করছে। আমি তো নিজেই ক্ষমা চেয়েছি। কিন্তু আমি আরও বেশি করে লজ্জিত ও অনুতপ্ত যে আমার হয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ক্ষমা চেয়েছেন। তার জন্য আমি খুবই অনুতপ্ত ও লজ্জিত।”

কী বলেছিলেন মমতা?

সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “আমি মনে করি, সৌন্দর্য শুধুমাত্র রঙের মধ্যে হয় না। সৌন্দর্য শুধুমাত্র দেখার মধ্যে হয় না। সৌন্দর্য হল ভিতরের সৌন্দর্য। তিনি (রাষ্ট্রপতি) খুব ভাল, খুব সুন্দর মহিলা। আমি ওনাকে খুব পছন্দ করি। এটা অখিল অন্যায় করেছে। আমি ক্ষমা চাইছি আমার দলের তরফ থেকে। আমরা কাউকে ব্যক্তি আক্রমণ করি না। এটা দলের সংস্কৃতি নয়। আমরা তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছি, যাতে এমন কাজ ভবিষ্যতে না হয়। ভবিষ্যতে আবার হলে দল যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”

অখিলের অনুতাপে খোঁচা সুজনের

অখিল গিরির দ্বিতীয় দফার সাফাই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “এটি ছেলেমানুষি হচ্ছে। অখিল গিরি যেভাবে বলেছে রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে, একজন মহিলা সম্পর্কে, একজন আদিবাসী মানুষ সম্পর্কে… তা ক্ষমার অযোগ্য। তিনি এখনও গ্রেফতার হননি। তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে এখনও খারিজ করা হয়নি। সংবিধানের সর্বোচ্চ মানুষ সম্পর্কে এরকম কটূ কথা, অসম্মানসূচক কথা বলার পরেও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। দেশে কি কোনও আইন আছে? তিন দিন লেগে গেল মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাইতে। তারপর চারদিন লেগে গেল অখিল গিরির এটা বুঝতে যে মুখ্যমন্ত্রী ওনার হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন বলে উনি অনুতপ্ত।”

অখিলের বিবেকের দংশন দেখছেন কুণাল

কুণাল ঘোষ অবশ্য বলছেন, “অখিল গিরি যে অন্যায়টি করেছিলেন, সেই অন্যায়টি তিনি বিকেল পাঁচটায় করেছিলেন। সন্ধে সাড়ে সাতটার মধ্যে তাঁর দুঃখপ্রকাশ করে ভিডিয়ো তিনি নিজেই দিয়ে দেন। দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিন্দা করেছেন, দুঃখপ্রকাশ করেছেন। অখিল গিরি সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে তাঁর ভুলের জন্য আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হল। এটা তো তিনি তাঁর বিবেকের কথা বলেছেন। এটা তো ভাল।”