অপসারিত শুভেন্দু! অধিকারী পুত্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কাঁথি সমবায় দফতরের

Suvendu Adhikari: ২০০৮ সালে থেকে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের সভাপতির পদে ছিলেন অধিকারী পুত্র। রাজ্যের মন্ত্রিত্ব পদে থাকাকালীন ব্যাঙ্ক সভাপতির দায়িত্ব পান। সাধারণত, দুবছর পর্যন্ত সভাপতির পদে আসীন থাকা যায়।

অপসারিত শুভেন্দু! অধিকারী পুত্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কাঁথি সমবায় দফতরের
প্রিভিলেজ কমিটিতে চিঠি শুভেন্দু অধিকারীর। ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 24, 2021 | 2:11 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হলেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। মঙ্গলবার, আইন মেনেই অধিকারী পুত্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে সমবায় দফতর। এর আগে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন সমবায়ের আধিকারিকরা। এদিন, ব্যাঙ্কের পরিচালল কমিটির একটি বৈঠক হয়। সেখানেই এই অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মঙ্গলবার, সাংবাদিক বৈঠকে ব্যাঙ্ক পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাইকোর্টে সমবায় মামলায় কর্তৃপক্ষের পক্ষেই রায় দিয়েছে আদালত। খারিজ হয়েছে সেই মামলা। পরিচালন কমিটির ১৯ জন সদস্যের মধ্যে  ১৪ জনের ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে। সেই ১৪ জনের মধ্যে ১০ জন সদস্য এদিন পরিচালন কমিটির সিদ্ধান্তে সহমত পোষণ করেন। শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) পরিবর্তে ব্যাঙ্কের বর্তমান সহ-সভাপতি চিন্তামণি মণ্ডলই সভাপতির পদ সামলাবেন এমনটাই খবর সমবায় কমিটি সূত্রে।

কাঁথি কোঅপারেটিভে বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছিল সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে।  ব্যাঙ্ক পরিচালন সমিতির একাংশের অভিযোগ ছিল, দীর্ঘ দিন ধরেই কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কে বেআইনিভাবে কর্মী নিয়োগ হয়েছে। বেনিয়মে ঋণ দেওয়া-সহ একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। পাশাপাশি, কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের উচ্চ পদকর্তা শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরাকেও সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণা করার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ব্যাঙ্কের কলকাতা শাখা থেকে রাখাল বেরা সব নিয়ন্ত্রণ করলেও তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ও পরবর্তীতে গ্রেফতারির জের এসে পড়েছে ব্য়াঙ্কের ‘গুড উইলে’। ফলে, ব্যাহত হচ্ছে ব্যাঙ্কের পরিষেবা এমনটাই অভিযোগ করেন পরিচালন মণ্ডলীর একাংশের।

২০০৮ সালে থেকে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের সভাপতির পদে ছিলেন অধিকারী পুত্র। রাজ্যের মন্ত্রিত্ব পদে থাকাকালীন ব্যাঙ্ক সভাপতির দায়িত্ব পান। সাধারণত, দুবছর পর্যন্ত সভাপতির পদে আসীন থাকা যায়। অভিযোগ, নিজ ‘পদবলে’ সভাপতির চেয়ার ‘আঁকড়ে’ ছিলেন অধুনা বিজেপি নেতা। বিধানসভা নির্বাচন আবহে দল ও পদত্যাগ করলেও সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ ছাড়েননি শুভেন্দু। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাঙ্ক পরিচালন কমিটির অনাস্থা পেশের পরেই, হাইকোর্টে মামলা করেন শুভেন্দু। রাজ্যের অর্থ দফতরের স্পেশাল অডিটের নির্দেশে সেই মামলার স্থগিতাদেশ দেওয়া হলেও পরে তা খারিজ হয়ে যায়। এরপরেই সভাপতির পদ থেকে  অপসারিত করা হয় শুভেন্দুকে। তবে, শুভেন্দুর পরিবর্তে চিন্তামণি মণ্ডলকে সভাপতির পদের দায়িত্ব দেওয়ায় আদপে রাজনৈতিক অনুষঙ্গই কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যায়, চিন্তামণি শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) সঙ্গে চিন্তামণির ‘ঘনিষ্ঠতা’ কিছু কম নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের তৃণমূল ত্যাগের পর থেকেই অধিকারী পুত্রের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে পুঞ্জীভূত হয়েছে ক্ষোভ। কিছুদিন আগেই তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির সভাপতি পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন শুভেন্দু। এ বার, সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকেও অপসারণের নেপথ্যে এই ক্ষোভ কাজ করছে বলেই অনুমান বিশ্লেষকদের। পাশাপাশি, চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারিত হয়ে ‘স্বঘনিষ্ঠ’ চিন্তামণিকে চেয়ারম্যান করতে চাওয়ার নেপথ্যে আসলে অধিকারী পুত্রেরই পরোক্ষ নির্দেশ রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। এর ফলে, পদ না থাকলেও কার্যত অঙ্গুলিহেলনের দায়িত্ব যে শুভেন্দু স্বহস্তে নেবেন এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আরও পড়ুন: যেতে হবে না শিবিরে, বাড়িতে বসেই মিলছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম! ‘অস্বস্তিতে’ তৃণমূল