TMC: অভিষেকের কড়া বার্তার পর পূর্ব মেদিনীপুরে ‘খেলা’ ঘোরাচ্ছে তৃণমূল? ভাঙন বিজেপিতে
TMC: কয়েকদিন আগে হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এবার রামনগর ২ ব্লকের পালধুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ বিজেপি সদস্যকে তৃণমূলে যোগদান করিয়ে চমক দিলেন কাঁথি সংগঠনিক জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি।

রামনগর: পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে জেলার নেতাদের সতর্ক করেছিলেন। তারপরই কি পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের নেতারা নতুন উদ্যমে দলকে মজবুত করতে নেমেছেন? একদিকে, তৃণমূলের নেতারা বৈঠকে বসেছেন। আবার বিজেপি থেকে তৃণমূলেও আসছেন গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় নেতারা। সেই ছবি দেখা গেল রামনগরে। সুপ্রকাশ গিরির হাত ধরে চার পঞ্চায়েত সদস্য-সহ এক ঝাঁক বিজেপি নেতা কর্মী যোগ দিলেন তৃণমূলে। যার ফলে এক পঞ্চায়েত দখলের পথে রাজ্যের শাসকদল।
গত শনিবার দলের সর্বস্তরের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন অভিষেক। সেইসময় পূর্ব মেদিনীপুরের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে দলের নেতাদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি আসনই হারতে হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এরপরই ২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় টার্গেট বেঁধে দেন অভিষেক। তিনি জানান, পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬টি আসনের মধ্যে কমপক্ষে ১২টি আসন জিততে হবে।
পূর্ব মেদিনীপুরে অখিল গিরি ও উত্তম বারিকের গোষ্ঠীকোন্দলের খবর বারবার সামনে আসে। অভিষেকের বার্তার পর জেলার নেতারা কি একজোট হয়ে আসরে নামছেন? তৃণমূলের নেতারা গোষ্ঠীকোন্দলের খবর উড়িয়ে দিয়েছেন। বরং ঐক্যের ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
এই খবরটিও পড়ুন




এরই মধ্যে কয়েকদিন আগে হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এবার রামনগর ২ ব্লকের পালধুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪ বিজেপি সদস্যকে তৃণমূলে যোগদান করিয়ে চমক দিলেন কাঁথি সংগঠনিক জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি। সেই সঙ্গে এই এলাকার প্রায় ২০টিরও বেশি গেরুয়া পরিবার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বালিসাইতে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে এই মেগা যোগদান কর্মসূচির মাধ্যমে ঘাসফুল শিবির বুঝিয়ে দিল, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগেই পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপিকে রীতিমতো কোণঠাসা করতে উদ্যোগ নিয়েছে তারা।
সুপ্রকাশের হাত ধরে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন পালধুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রতীকে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য মনোজিৎ মান্না, চৈতালি গিরি ,সঞ্জয় গারু এবং প্রিয়াঙ্ক মাইতি। এছাড়াও বিজেপি নেতা গৌতম জানা সহ প্রায় ২০ টিরও বেশি পরিবার এদিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। এর ফলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে রামনগরে বিজেপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হল বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের। পালধুই পঞ্চায়েত বর্তমানে বিজেপির দখলে রয়েছে। তবে এভাবে গেরুয়া শিবির ছেড়ে পঞ্চায়েত সদস্যরা দলে দলে তৃণমূলে যোগ দিলে এই পঞ্চায়েত বিজেপির হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।
এদিন সুপ্রকাশ জানান, “দিন কয়েক আগেই হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে এসেছেন। মহিষাদলেও একাধিক বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে এসেছেন। এবার রামনগরেও একই ভাবে তৃণমূলে এলেন বিজেপির একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য।” সুপ্রকাশের দাবি, “২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূল ঝড়ে রীতিমতো ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে বিজেপি। এখন তারই সূচনা হয়েছে।” সুপ্রকাশ জানান, “গত লোকসভা নির্বাচনে প্রথমবার রামনগরে বিজেপি লিড পেয়েছে, যা গত কয়েক দশকে কোনওদিন ঘটেনি। তবে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে রামনগর-সহ জেলায় বিজেপির আসন শূন্য হয়ে যাবে।”
রামনগর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিজেপি নেতা মাধবেন্দ্র সাউয়ের দাবি, “যে সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে গিয়েছেন, তাঁরা অনেক আগে থেকেই নিজেদের স্বার্থে পা বাড়িয়ে ছিলেন। এখন ওঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে দল বদল করেছেন। তবে আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। সামনের বিধানসভা নির্বাচনে রামনগরে তৃণমূল ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। মানুষের জন্য কোনও কাজ করে না এরা। যারা বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে গেল, এলাকায় তাঁদের নিজস্ব কোনও ভোট নেই। দলের প্রতীকে ওরা জিতেছিল। এরপর ওরা তৃণমূলের প্রতীকে জিতে দেখাতে পারবে না।”





