পুরুলিয়া মমতার জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জের, আজ কোন মোক্ষম চাল দিতে চলেছেন নেত্রী?
তবে হিসাব শেষ অবধি মেলাবে পাটিগণিতই। রাজনীতির জমিতে ঠিক কী হতে চলেছে, তা সময়ই বলবে।
পুরুলিয়া: আজ পুরুলিয়ায় মমতা। সোমবার নন্দীগ্রামের মাটি থেকেই তাঁর মাস্টারস্ট্রোক রাজনীতির পারদটাকে এক ধাক্কায় অনেকটাই চড়িয়ে দিয়েছে। তবে পুরুলিয়ার মাটিও তাঁর জন্য বিশেষ চ্যালেঞ্জের। কারণ সেখানে তাঁকে লড়াই করতে হবে পুরনো জমি পুনরুদ্ধারের। মঙ্গলবার বেলা একটা নাগাদ পুরুলিয়ার হুটমুড়া স্কুলের মাঠে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)।
পুরুলিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে?
পুরুলিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষবার এসেছিলেন ২০১৯ সালেই। সুর চড়িয়েছিলেন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। হাতিয়ার জোরাল হলেও তা বিশেষ বিঁধতে পারেনি প্রতিপক্ষকে। গত লোকসভা নির্বাচনের পাটিগণিত মিলালে দেখা যাবে, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া জেলাতে বিরাট চমক দেয় বিজেপি। নেপথ্যে কারিগর বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। এছাড়াও ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা বান্দোয়ান বিধানসভা এবং একইভাবে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত পুরুলিয়া রঘুনাথপুর বিধানসভাতেও যথেষ্ট পরিমাণে লিড পায় বিজেপি। পুরুলিয়ার একমাত্র মানবাজার কেন্দ্রে তৃণমূল ১০ হাজারের মতো ভোটে লিড ছিল। বিজেপির দাবি, পুরুলিয়ার মোট বিধানসভা আসনের সবগুলিতেই তারা জয়লাভ করবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, এই মুহূর্তে আরও কিছু কারণে তৃণমূল কংগ্রেস নড়বড়ে রয়েছে পুরুলিয়ায়। লোকসভা নির্বাচনের কিছুদিন পরেই পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শান্তিরাম মাহাতোকে। যিনি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন। এই পদে বসানো হয় আদিবাসী নেতা গুরুপদর টুডুকে।
আর ঠিক এই কারণেই পুরুলিয়া জেলা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। শান্তিরাম মাহাতো বনাম গুরুপদ টুডু। বিষয়টি জেলা তৃণমূলের তরফে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চললেও ফাঁকফোকর দিয়ে অস্বস্তি বেরিয়ে পড়ে। আসন্ন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূলের কাছে। প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা বিজেপি আর দলেরই গোষ্ঠীকোন্দল সামলানো নয়া চ্যালেঞ্জ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সূত্রের খবর, জনসভার পর সার্কিট হাউসে দু’পক্ষরই নেতাকে ডেকে সমঝোতায় যেতে পারেন নেত্রী। গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে তৎপর তিনি।
তবে রাজনীতির কুশীলবরা বলছেন, পুরুলিয়া পুনরুদ্ধারের প্ল্যান ‘এ’ অনেক আগেই কাজে লাগিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গলমহলের মুখ ছত্রধর মাহাতোকে আগেই ভোটের ময়দানে নামিয়েছেন নেত্রী। প্ল্যান ‘বি’ গোষ্ঠীকোন্দল মেটাতে উদ্যোগ নিয়েছেন স্বয়ং। আর তারপরের ‘চাল’? আজ সেটা পুরুলিয়ার সভাতেই দিতে পারেন নেত্রী, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে হিসাব শেষ অবধি মেলাবে পাটিগণিতই। রাজনীতির জমিতে ঠিক কী হতে চলেছে, তা সময়ই বলবে।